একুশে মিডিয়া, ষ্টাফ রিপোর্টার-ঢাকা:
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ভোটযুদ্ধে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয়ায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা। কিন্তু অতীতের মতো করে পর্যবেক্ষণের সুযোগ মিলছে এবার। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নীতিমালায় নতুন যুক্ত করা কিছু নিয়মের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে সবাইকে। এ প্রক্রিয়া ঠিক থাকলেই কেবল মিলবে পর্যবেক্ষণের সুযোগ।
এবার প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নীতিমালায় কিছু ধারা যুক্ত করেছে ইসি। সে অনুযায়ী, ভোটকেন্দ্র থেকে সরাসরি সম্প্রচার অথবা ফেসবুক, টুইটার বা অন্য যেকোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত; পর্যবেক্ষকদের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে; সব সময় ইসির সরবরাহ করা পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে; প্রিসাইডিং কর্মকর্তার আইনগত নির্দেশনা মেনে চলতে হবে; নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় কোনও ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যাবে না; গোপনে বুথে যাওয়া যাবে না; ভোট গণনার সময় একটি পর্যবেক্ষক দল থেকে একজন শুধু উপস্থিত থাকতে পারবেন।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, এ মাসের শুরু থেকে আইআরআইসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং ঢাকায় অবস্থিত দূতাবাসগুলো অনানুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ শুরু করেছে। তবে আগামী মাসের শুরু থেকে বিদেশিদের নির্বাচনী পর্যবেক্ষণের প্রক্রিয়ায় গতি আসতে পারে।
এছাড়া নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহী বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আগে আবেদন করতে হবে। আবেদন যাচাই করে অনাপত্তির জন্য তা স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে ইসি। সুতরাং যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ নীতিমালার এসব ধারার মধ্য দিয়ে যেতে রাজি থাকবে তারাই যেমন আবেদন করবে, তেমনি আবেদন যাচাইয়ের ক্ষেত্রে কোনও কোনও দেশ বা সংস্থার অনুমতি না-ও মিলতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বেশ কিছু সংস্থা বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে বিভিন্ন সময় আমন্ত্রণ জানায়। ইসি ওই সংস্থাগুলোর পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আমন্ত্রণ জানাবে। আবার কমনওয়েলথসহ বেশ কয়েকটি সংস্থা সাধারণত আমন্ত্রণ ছাড়া নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যুক্ত হয় না। এ ক্ষেত্রে এ তালিকার সংস্থাগুলোকে আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে যেসব দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে চাইবে, তাদের সরাসরি ইসির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
সাধারণত বিদেশি নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের কাজের সঙ্গে ইসি সরাসরি যুক্ত থাকলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ প্রক্রিয়ায় সহযোগীর ভূমিকায় থাকে। তবে এ নিয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বলেন, বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কাজের ক্ষেত্রে সাধারণত নির্বাচনের আগে একটি সেল গঠন করা হয়। এ ধরনের কোনও সেল এখনও পর্যন্ত হয়নি। সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তের পর এ কাজ শুরু হতে পারে বলে জানান তারা।
ইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ মাসের শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন দেশ পর্যবেক্ষণের বিষয়ে যোগাযোগ শুরু করেছে। এরই মধ্যে নির্বাচন ও গণতন্ত্রবিষয়ক মার্কিন গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই), নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করার সঙ্গে যুক্ত ব্যাংককভিত্তিক সংস্থা অ্যানফ্রেল এবং ঢাকায় ফ্রান্স ও জাপান দূতাবাস এ যোগাযোগ করেছে। এ ছাড়া ঢাকায় অবস্থিত আরও কয়েকটি দূতাবাস নির্বাচন পর্যবেক্ষণের নানান বিষয় নিয়ে গত দুই সপ্তাহে কমিশনের কাছে খোঁজখবর নিচ্ছে।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment