নড়াইলে বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন দাম নিয়ে সোনালী স্বপ্ন বিবর্ণ।একুশে মিডিয়া - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Monday 12 November 2018

নড়াইলে বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন দাম নিয়ে সোনালী স্বপ্ন বিবর্ণ।একুশে মিডিয়া


উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
(১৩ নভেম্বর) ২৭৪: নড়াইল জেলায় এ বছর আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবং পোকার আক্রমণ না থাকায় এবছর কাঙ্খিত ফলন হয়েছে। তবে দাম কম থাকায় হতাশা চাষীরা। সোনালী স্বপ্ন যেন বিবর্ণ হয়ে উঠছে।
এই ধান বিক্রি করে সন্তানদের পড়াশোনার খরচ, রবিশস্যের চাষ সহ সংসারের খরচ বহন করা কষ্টসাধ্য পড়বে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান, জেলা কৃষি সম্পসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, খাদ্যে উদ্বৃত্ত নড়াইল জেলায় এ বছর আমন মৌসুমে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে। সেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চাষ হয়েছে ৪১ হাজার হেক্টর জমিতে।
লক্ষমাত্রা পূরণ হয়েও অতিরিক্ত ৪ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হয়েছে। এবছর কৃষকরা বিনা-৭, ধানী গোল্ড, স্বর্না, গুটি স্বর্না, বাবু স্বর্না, বিআর-৩৯, বিআর-৪৯, নতুন জাতের ধান বিআর-৭১, বিআর-৭৫ সহ স্থানীয় বিভিন্ন জাতের ধানের চাষ করেছে। সদর উপজেলার নাকশী গ্রামের কৃষক হাদিউজ্জামান জানান, আবহাওয়া ভাল থাকায় এবং কারেন্ট পোকার আক্রমণ না থাকায় এবছর ধান ভাল হয়েছে। ইতিমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে।
আবহাওয়া ভাল থাকায় কৃষকরা ভালভাবেই ধান কাটা, শুকানোর কাজ করতে পারছে। একই এলাকার কৃষক রাসেল শেখ, নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, এবছর ধানের ফলন ভাল হলেও দাম একেবারেই কম। বাজারে ধান বিক্রি হচ্ছে প্রতিমন ৬৬০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা। একজন ধান কাটা শ্রমিককে প্রতিদিন দিতে হচ্ছে ৪/৫শত টাকা। ধান চাষে জমি প্রস্তুত, সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ, ধান কাটা, মাড়াইসহ শুকিয়ে ঘরে তুলতে প্রতিমন ধানে ৬ টাকার অধিক খরচ হয়ে যায়। কিন্তু ধান বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬ শত টাকা হতে ৭শত টাকার মধ্যে। এতো কম দামে ধান বিক্রি করে খরচ উঠছে না।
ফেদী গ্রামের কৃষক হাফিজার মল্লিক বলেন, ‘গত বছর আমাদের এলাকায় কারেন্ট পোকার আক্রমণে ধান চাষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমাদের একমাত্র পেশা কৃষি কাজ। তাই ফসলের দাম কম/বেশি যাই হোক ফসল বুনতেই হবে। কিন্তু সরকার ফসলের ন্যয্য দাম না দিলে আমাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে’।
তিনি আরো বলেন, ‘এবছর ধানের ফলন ভাল হলেও দাম কম হওয়ায় সংসারের খরচ চালানো কষ্ট হবে। সরকার চাকুরিজীবিদের অনেক সুযোগ সুবিধা দিলেও কৃষকদের কথা ভাবছে না। হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করলেও আমাদের কৃষকদের ভাগ্যের কোনো পরির্বতন হচ্ছে না। সরকারীভাবে কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম নির্ধারণ করা হলে কৃষকরা বেঁচে থাকতে পারতো’।
লোহাগড়া উপজেলার ঈশানগাতী গ্রামের কৃষক আল আমিন নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, ‘আমন মৌসুমে ধান কেটে আমাদের প্রতিটি বাড়িতে পিঠা তৈরি হয়। ধান বিক্রি করে, খেজুরের রস, খেজুরের গুড়, আখের গুড় কিনে নানা ধরনের পিঠা তৈরি করা হয়। মাংস কিনে ভাল ভাল রান্না করে আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত করা হয়। কিন্তু এবছর ধানের যে দাম তা দিয়ে কোনো কিছুই করা সম্ভব হবে না’।
চালিতাতলা বাজারের ধান ব্যবসায়ী রমজান মোল্যা, নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, ‘আমন মৌসুমে নতুন ধান উঠতে শুরু করেছে।
বাজারে স্বর্নাসহ মোটা জাতের ধান সাড়ে ৬৬০ টাকা হতে ৬শত ৮০শত টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তুলনামুলক একটু চিকন চালের ধান ৭শত টাকা করে বিক্রি হচ্ছে’। তিনি আরো বলেন, ‘গত বোরো মৌসুমে বৃষ্টিপাতের কারনে ধানের রঙ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কৃষকেরা ভাল দাম পায়নি। এবছর মাঠে পর্যাপ্ত ধান চাষ হওয়ায় ধানের বাজার তেমন বাড়বে বলে মনে হয় না। তবে সরকার যদি দাম নির্ধারণ করে দেন এবং সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনন তাহলে হয়তো ধানের দাম একটু বাড়তে পারে’।
সদর উপজেলার ভদ্রবিলা ইউনিয়নের ভবানীপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মীর্জা মোঃ ইমরুল ইসলাম, নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে বলেন, ‘কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করায় চাষীরা সচেতন হচ্ছে এবং ফসল উৎপাদনও বেড়েছে। আমার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্লকে এবছর নতুন দুটি জাতের ধান বিআর ৭১ ও বিআর ৭৫ জাতের ধানের চাষ হয়েছে। দ্রুত সময়ে এই জাতের পেকে যাওয়ায় কৃষকরা জমিতে রবিশস্যের চাষ করতে পারে। তাছাড়া এই দুটি জাতের ধানের ফলনও ভাল হয়েছে’।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নড়াইলের উপ-পরিচালক চিন্ময় কুমার রায় একুশে মিডিয়াকে জানান, ‘খাদ্যে উদ্বৃত্ত নড়াইল জেলায় এবছর ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৭ হাজার হেক্টর। সেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চাষ হয়েছে ৪১ হাজার হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ লক্ষমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত ৪ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবং পোকার আক্রমণ কম হওয়ায় ধানের ফলন ভাল হয়েছে’। তিনি একুশে মিডিয়াকে আরো বলেন, ‘ইতিমধ্যে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন ধান কাটতে শুরু করেছে।
আবহাওয়া ভাল থাকায় শুকনো করে ঘরে তুলতে সমস্যা হচ্ছে হচ্ছে না। সরকার কৃষি ক্ষেত্রে কৃষি প্রণোদনাসহ বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতার জন্য ফসলের উৎপাদন বেড়েছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ জেলা নড়াইলের উৎপাদিত ধান এই জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলার ঘাটতি পূরণ করা হয়’।
একুশে মিডিয়া/এসবি

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages