একুশে মিডিয়া, রিপোর্ট:
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী দেয়ার ক্ষেত্রে বানরের পিঠা ভাগ করার মতো করবেন বলে বিএনপি নেতাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন এলডিপি চেয়ারম্যান কর্ণেল (অব.) অলি আহমেদ। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজনে ‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ও আমাদের বাংলাদেশ, আসন্ন নির্বাচনে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যাশা এবং করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত।
অলি আহমেদ বলেন, বিএনপিকে বলছি, জোটের প্রার্থী দেয়ার ক্ষেত্রে বানরের পিঠা ভাগ করার মতো করবেন না। যোগ্য প্রার্থীদের অবশ্যই মূল্যায়ণ করবেন। একই সঙ্গে ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আসন নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেন। আমার দলেও ৪৬ জন প্রার্থী ছিল। কিন্তু আমি তাদের বলেছি, যোগ্য প্রার্থীই কেবল নমিনেশন পাবে। বিএনপির পিঠে সোয়ার হয়ে এমপি হওয়ার সুযোগ নেই। যারা নমিনেশন পাবে তাদের অবশ্যই নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, আমি খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই না। তার জন্য সুবিচার চাই। কারণ সুবিচার হলেই তিনি মুক্তি পাবেন। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জনগণের কাছে গিয়ে বিষয়গুলো আরো পরিষ্কার করে বলতে হবে। শ্রমিকরা মাত্র ৮ হাজার টাকা বেতন পান। তাদের মজুরী বৃদ্ধি করা হবে। প্রত্যেকের জন্য রেশন চালু করা হবে। বিচারকরা ৬ মাস ঘুমান। এই জায়গায় ব্যাপক সংস্কার করা হবে। চিকিৎসা সেবার ব্যায় অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে। এগুলো জনগণকে বুঝাতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মধ্যে পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু দেশের ব্যাপারে সবাই ঐক্যবদ্ধ। কর্ণেল অলি বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তারা অনেকেই আমাদের অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তারা সুযোগ খুজছে সত্যের পক্ষে থাকার জন্য। জনগণের পক্ষে কাজ করার জন্য। সরকারের পক্ষে কাজ না করে নিরোপেক্ষ হওয়ার চেষ্টা করছে।
সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে অলি বলেন, আমি আলাদা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছি, পুলিশ ও প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তা এতোদিন সরকারের পক্ষে কাজ করেছেন তারা নির্বাচনের সময় নিরোপেক্ষ থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে না। আমরা ক্ষমতায় আসলে তাদের জন্য সমান সুযোগ থাকবে।
২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক নেতাদের কাছে পরাধীন থাকতে হয়। কিন্তু আমরা ক্ষমতায় আসলে এই সরকারি কর্মকর্তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধা নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে অলি বলেন, আমি নিয়মিত ডিসকভারি দেখি। ছোট একটা বাঘ তার চেয়ে ১০গুণ বড় একটি হাতিকে ফেলে দেয়। এটা থেকে বুঝতে হবে আপনাদের কি করা উচিৎ। করণীয় একটাই। সেটা হল প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গায় যান। মা বোনদের বোঝান। তারা বের হয়ে এসে ভোট দিলেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন বীর বিক্রম বলেন, আসন্ন নির্বাচন হবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও পুলিশের মধ্যে। আওয়ামী লীগ মাঠে থাকবে না। আমরা অনেক ছাড় দিয়েছি। পুলিশ ও আওয়ামী গুন্ডা বাহিনীর জন্য বাড়িতে থাকতে পারিনা। নিজের এলাকায় যেতে পারিনা। নেত্রীকে জেলে রেখে আমরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। আর নয়। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীকে বলবো, আপনারা বাবা বঙ্গবন্ধু। আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা হয়ে দেশকে আর ধ্বংস করবেন না। আমরা মুক্তি চাই। কোন দেশের কাছে আমরা পরাধীন থাকতে চাই না।
পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে দেখুন, সেখানে গণতন্ত্র না থাকায় দেশটার কি অবস্থা হয়েছে। আমাদেরও তাই হবে। আলোচনায় গণস্বাস্থ্য বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমাকে রাস্তায় নামতে দেবে না। পুলিশ আছে। এসব ম্যানমেনে কথা বলার কোন সুযোগ নেই। আমি এমন কথা শুনতে চাই না। বাতাশ অন্যদিকে বইছে দেখছেন না? ঢাকার মিটিং, রাজশাহীর মিটিংয়ে দেখেননি। সমস্ত রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তার পরও মানুষ পায়ে হেটে সমাবেশে চলে এসেছে। ৬০’র দশকে মাওলানা ভাসানীর ডাকে মানুষ যেভাবে এসেছে।
এখনও সেভাবে মানুষ আসছে। যাদেরকে ভয় করেন, সেই বেনজির ও আসাদুজ্জামান মিয়ারা যোগাযোগ শুরু করেছে। তারা কোন পথে যাবে সেটার জন্য যোগাযোগ করছে। যখন বেনজির ও আসাদুজ্জামান মিয়ারা যোগাযোগ শুরু করেছে তখন ভয়ে সকরারের হাটু কাপা শুরু হয়েছে। বুঝতে পারছে তাদের ভীত নড়ে গেছে। এর পরও যারা এই সরকার ও প্রশাসনকে ভয় পান তাদের দিয়ে কিছু হবে না। কারণ ডাক্তারি ভাষয় একটা কথা আছে ভয়ের কোন চিকিৎসা নেই।
একুশে মিডিয়া/এমএ
No comments:
Post a Comment