উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি■:
আজ (২১, নভেম্বর, ২০১৮):২৭৪: রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক প্রাপ্ত নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, (পিপিএম), বিলের কোমর পানিতে নেমে মাছ ধরলেন! ছবিটি দেখলে প্রথমেই মনে হতে পারে জেলেরা জাল দিয়ে মাছ শিকার করছেন।
প্রকৃতপক্ষে তা নয় পুলিশ সদস্যদের নিয়ে মাছ শিকার করছেন নড়াইলের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএম। পুলিশ সুপার শুধু জেলার আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখেন না পাশাপাশি অন্যান্য সমাজসেবামূলক কাজও করে থাকেন। তাই তো রোববার সকাল ১০টার দিকে তিনি পুলিশ সদস্যদের নিয়ে নেমে পড়েন মাছ ধরার জাল নিয়ে শহরতলীর কাড়ার বিলে।
পুলিশ সুপার কচুরিপানা পরিস্কার করে দেশিয় বিভিন্ন প্রকার মাছ ধরেন। অপরদিকে এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করা হলে তাকে অভিনন্দন জানান অনেকে।
মিটুল কুন্ডু নামে একজন লিখেছেন, এক অনন্য দৃষ্টান্ত রেখে চলেছেন নড়াইলের পুলিশ সুপার। স্মৃতি হয়ে থাকবে নড়াইলবাসীর কাছে। এই মহৎ মানুষটির মঙ্গল কামনা করি সব সময়।
মাহাফুজুর রহমান নামে অপর একজন লিখেছেন, আমাদের স্যার তো আমার পেশার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পেশাদার জেলে হয়ে যাচ্ছেন। অভিনন্দন আমাদের পেশায় সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য। স্যার আমন্ত্রণ রইল আমাদের ৯ একর সরকারি দিঘিতে ৮/১০ কেজি ওজনের মাছ ধরার জন্য।
আমরা হুইল দিয়ে মাছ ধরবো ইনশাআল্লাহ। ইশতিয়াক আহম্মেদ নামে একজন লিখেছেন, মাটি, মানুষের এতো কাছে একজন পুলিশ সুপার যান সেটা আমাদের এসপি স্যারকে না দেখলে বিশ্বাসই হতোনা। চঞ্চল রায় নামে একজন লিখেছেন, আমরা আপনার মঙ্গল কামনা করছি।
বিস্তারিত আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের রিপোর্টে, নিজ কার্যালয়ের সামনে অবস্থিত ৪০ বছরের পুরাতন নর্দমা পরিস্কার করে সেখানে তৈরি করেছেন পুলিশ অ্যাকুরিয়ামের মতো দৃষ্টিনন্দ পানির ফোয়ারা। সেই সাথে সেখানে চলছে মাছ চাষও।
এছাড়াও নড়াইল পুলিশ লাইনস পুকুরের হাঁটু সমান কাদা মাটিতে নেমে মাছ শিকার করে এক অন্য রকম চমক সৃষ্টি করলেন। শুক্রবার দুপুরে তিনি তার সহকর্মীদের সাথে মিলে আবহমান বাংলার সাধারণ একজন তরুণের মত মাছ শিকার করেন। তার মাছ শিকারের সেই ছবি এখন ফেইসবুকে ভাইরাল।
শত শত মানুষ তার সেই ছবিতে লাইক দিচ্ছে, মন্তব্য করছে, ছবি শেয়ার করছে। বলা চলে বিষয়টি টক অব দ্যা ফেইসবুকে পরিণত হয়েছে। তার এই ছবি ফেইসবুকে প্রথম পোষ্ট করেন নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায় ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যা। এর পর এই ছবি ভাইরাল হতে থাকে। গত কয়েকদিন ধরে প্রায় প্রতিদিনই একাধিকবার এই ছবি শেয়ার হচ্ছে। এরপর ছবিটি বিভিন্ন গণমাধ্যমেও ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে।
এক অনন্য প্রতিভার অধিকারী পুলিশ সুপার ১৯৭৩ সালের ১লা জানুয়ারি ফেনী জেলার মধ্য জাহানপুর গ্রামে ঐতিহ্যবাহী মোল্যা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মোহাম্মদ মফিজ উদ্দিন। তার মায়ের নাম হাজেরা বেগম।
নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, (পিপিএম) ১৯৯০ সালে ফেনী সরকারি কলেজ থেকে পাশ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ১৯৯৬ সালে পড়াশুনা শেষে করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। তাঁর বৈবাহিক জীবনে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
তাঁর স্ত্রী নাহিদা আক্তার চৌধুরী সুমি বর্তমানে নড়াইল পুনাকের সভানেত্রী। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএম বাংলাদেশ পুলিশে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য রাষ্ট্রপতি পদক লাভ করেন।
নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, (পিপিএম) নিজ কর্মস্থল নড়াইলে যোগ দেবার পর থেকে মাদক, বাল্যবিবাহ ও জঙ্গিবাদ বিরোধী জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি মাদকসেবিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের ভালো পথে ফিরে আসার সুযোগ দিয়েছেন। মাদক, বাল্যবিয়ে ও জঙ্গিবাদ বিরোধী সাংস্কৃতিক স্কোয়ার্ড গঠন করে প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে এসবের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছেন। নিজের কার্যালয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন বিরোধী সেল গঠন করে অসহায় নারী ও শিশুদের বিভিন্ন সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান দিচ্ছেন।
একুশে মিডিয়া/এমএ
No comments:
Post a Comment