আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বধীন ১৪ দলীয় মহাজোটের বড় শরিকদল জাতীয় পার্টি চায় ৭০ আসন।
ইতিমধ্যে তাদের ৪০ বা ততোধিক আসনে ছাড় দিতে সম্মত হয়েছে আওয়ামী লীগ। এই দর কষাকষিতে কোনো পক্ষেই সম্পর্ক নষ্ট করতে চায় না। তবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে নিয়ে অবিশ্বাস উভয় দলে। এজন্য খুব কৌশলে এগুচ্ছে তারা।
মহাজোটের কাছে ৭০ আসন চেয়ে চিঠি দিয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। অন্যদিকে দলটিকে ৪০টির বেশি আসন দিতে সম্মত হয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে জাতীয় পার্টির চাওয়া আরও বেশি আসন। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের দর কষাকষি।
জানা যায, গত শনিবার জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় আসন ভাগাভাগির তাগাদা দিয়ে চিঠি দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে।
চিঠির সঙ্গে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকাও দেয়া হয়। জবাবে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আসন বণ্টনের চূড়ান্ত তালিকা দেয়া হয়েছে জাতীয় পার্টিকে। তালিকায় ৪০টির বেশি আসন মহজোট থেকে জাপার জন্য ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি আওয়ামী লীগ ও জাপার শীর্ষ নেতাদের কেউ। তাদের ভাষ্য, জোটনেত্রী শেখ হাসিনা সব কিছু ঠিক করছেন। এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ২ একদিনের মধ্যে হয়ে যাবে।
সূলীয় সূত্রে জানা যায, দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করার পাশাপাশি জোটের প্রার্থীতালিকাও চূড়ান্ত করছে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড। গত কয়েকদিন মনোনয়ন বোর্ডের ধারাবাহিক বৈঠক চলার মধ্যেই এসব সিদ্ধান্ত সম্পন্ন হয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমাদের আসন বণ্টনের বিষয়টি দুই-একদিন পর তাদের সঙ্গে বসে চূড়ান্ত করা হবে।
জাতীয় পার্টি মহাজোটের কাছে ৭০টি আসন চেয়ে চিঠি দিয়েছে। বাকিটা নেত্রীর সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত হবে।
জাতীয় পার্টি (জাপা)’র মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদার বলেন, দলে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, জনগণ যাদের ভালো জানে, তরুণ প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্য এমন ব্যক্তিদের জাপা’র মনোনয়ন দেওয়া হবে।
নির্বাচন একটি ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া; এই প্রক্রিয়ায় যারা নিজেদের উত্তীর্ণ করতে পেরেছেন, তারাই জাতীয় পার্টির প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন।
মনোনয়ন নিয়ে জোটের সম্পর্ক খারাপ করতে নারাজ জাতীয় পার্টি, যোগ করেন এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার।
মহাজোটের হয়ে জাপার সম্ভাব্য প্রার্থীরা:
নীলফামারী-৪ শওকত চৌধুরী।
রংপুর-১ মসিউর রহমান রাঙ্গা।
কুড়িগ্রাম-১ মোস্তাফিজুর রহমান।
লালমনিরহাট-৩ জিএম কাদের।
গাইবান্ধা-১ শামীম হায়দার পাটোয়ারী।
বগুড়া-২ শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ্।
বগুড়া-৩ নূরুল ইসলাম তালুকদার।
বগুড়া-৬ নূরুল ইসলাম ওমর।
বগুড়া-৭ মুহম্মাদ আলতাফ আলী।
পটুয়াখালী-১ এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার।
বরিশাল-৬ নাসরিন জাহান রতনা।
জামালপুর-৪ মামুনুর রশিদ।
ময়মনসিংহ-৪ রওশন এরশাদ।
মংমনসিংহ-৫ সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তি।
ময়মনসিংহ-৮ ফখরুল ইমাম।
কিশোরগঞ্জ-১ মুজিবুল হক।
ঢাকা-১ সালমা ইসলাম।
ঢাকা-৪ সৈয়দ আবু হোসেন।
ঢাকা-৫ আবদুস সবুর আসুদ।
ঢাকা-৬ কাজী ফিরোজ রশীদ।
নারায়নগঞ্জ-৩ লিয়াকত হোসেন খোকা।
নারায়ণগঞ্জ-৫ একেএম সেলিম ওসমান।
সুনামগঞ্জ-৪ পীর ফজলুর রহমান।
সিলেট-২ ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী।
সিলেট-৫ সেলিম উদ্দিন।
হবিগঞ্জ-১ আবদুল মুনিম চৌধুরী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ জিয়াউল হক মৃধা।
কুমিল্লা-২ আমির হোসেন।
কুমিল্লা-৮ নূরুল ইসলাম মিলন।
লক্ষ্মীপুর-২ মোহাম্মদ নোমান।
চট্টগ্রাম-৫ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
চট্টগ্রাম-৯ জিয়া উদ্দিন বাবলু।
কক্সবাজার-৩ সন্তোষ শর্মা।
ফেনী-৩ লে. জেনারেল (অব) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী।
পিরোজপুর-৩ রুস্তম আলী ফরাজী এবং
টাঙ্গাইল-৫ আসনে পীরজাদা শফিউল্লাহ আল মুনির।
এ ছাড়াও রংপুর বিভাগের আরও কয়েকটি আসন জাতীয় পার্টির জন্য ছাড়তে চায় আওয়ামী লীগ।
পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের জন্য রংপুরের যেকোনো একটি আসন ছাড়তে চায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু এরশাদের প্রত্যাশা রংপুরের ওই আসনসহ ঢাকা-১৭ আসন। তবে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের তালিকায় ঢাকা-১৭ আসনে একজন চলচ্চিত্র অভিনেতার নাম চূড়ান্ত রয়েছে বলে জানা গেছে।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment