একুশে মিডিয়া, মৌলভীবাজার রিপোর্ট:
২০ জুন ২০১৭।। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের সংঘর্ষে একজন পথচারী নিহত হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছে। এ সময় বিএনপি নেতা কর্মীদের দোকান পাটে ভাংচুর ও বিএনপি অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের গাড়িবহরে হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত মিছিলে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম হাফিজ উদ্দিন (৩০)। বড়লেখার ,পাখিয়ালা গ্রামের রহিম উদ্দিনের ছেলে। নিহত হাফিজ উদ্দিনকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই পক্ষই নিজেদের কর্মী বলে দাবি করছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলার যুবদল সভাপতি ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রতিবাদ মিছিলটি বের হয়। মিছিলটি কলেজ মাঠ থেকে বের হয়ে শহরের চার রাস্তার মোড়ে পৌছায়। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা মিছিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা কর্মীরা হামলা প্রতিহত করতে গেলে উভয় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এতে হাফিজ উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হন।
পরে সংঘর্ষ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ চলাকালে দোকানপাট ভাঙচুরসহ বিএনপি অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় শহরজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পুলিশ জানায়, ওই সংঘর্ষে পথচারী হাফিজ উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হন। তাকে বড়লেখা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে রাত ১০ টায় চিকিৎসা দিন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
বড়লেখা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে র আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা নাসিমুজ্জামানবলেন, হাফিজ উদ্দিনের বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। হাসপাতালে আনার পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ব্যাপক রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।
এই ঘঠনায় বড়লেখা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সুন্দর বাদী হয়ে ২০জনকে আসামী করে বড়লেখা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে বারোটার দিকে মামলা রেকর্ডভুক্ত হয় বলে জানিয়েছে বড়লেখা থানা পুলিশ।
উক্ত মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে উপজেলা যুবদলের সভাপতি ফখরুল ইসলাম, ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল কাদির পলাশ, যুবদল নেতা ও ব্যবসায়ী ময়নুল মোহাম্মদ, ফয়সল সহ যুবদল ও ছাত্রদলের ২০ জন নেতা-কর্মী আছেন।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো:সহিদুল রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যকার সংঘর্ষে যুবলীগ কর্মী হাফিজ উদ্দিন মারা গেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। রাতে অভিযান চালিয়ে যুবদল সভাপতি ফখরুল ইসলাম, ও ছাত্রদল সভাপতি আব্দুল কাদির পলাশকে গ্রেফতার করা হয়েছে । বাকি জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
তাৎক্ষণিকভাবে আওয়ামী লীগ বা বিএনপির নেতৃস্থানীয় কোনো ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলা যায়নি। উভয় পক্ষের একাধিক নেতাকে ফোন করা হলেও তারা কেউই সাড়া দেননি।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment