একুশে মিডিয়া ডটকম :
লালমনিরহাটে অনেক কিছু বেড়ানোর মত থাকলেও এবার নতুন যোগ আরেকটি ঘুরে বেড়ানোর মত জায়গা বা দেখার মত অবস্থান তৈরী হয়েছে উত্তরের সীমান্তবর্তীর কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের বোতলের বাড়িতে। আলোচিত এই বাড়িতে বর্তমানে থাকছেন পরিবেশ বিজ্ঞানের শিক্ষক দম্পতি । তারাই এই বাড়িটি তৈরী করেছেন । বহুল আলোচিত বোতল বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। ঈদের এক সাপ্তাহে কেঁটে গেলেও এখনো অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন। দেশে প্রথম প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন পরিবেশ বিজ্ঞানের শিক্ষক দম্পতি। ওই দম্পতি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের সীমান্তর্বতী প্রত্যন্ত নওদাবাস গ্রামের আব্দুল বারীর ছেলে রাশেদুল আলম ও তার স্ত্রী আসমা খাতুন।
শহুরে জীবনের ব্যস্ততা কাটিয়ে, শত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে নাড়ির টানে ঘরে ফেরা পরিবারগুলো ব্যতিক্রমী এ বাড়ি দেখে মজা পাচ্ছেন। অনেকেই বলছেন, তারাও করবেন এই বোতলের বাড়ি। বোতল বাড়ির কাজ প্রায় সম্পন্ন । দর্শনার্থীদের এমন ভিড়ে ওই গ্রামের মানুষজন হতবাক হয়েছেন। ঈদ আনন্দে বোতল বাড়ি দেখতে বিভিন্ন জেলা শহর থেকে মাইক্রোবাস, সিএনজি, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলে করে মানুষ ছুটে আসছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, বোতল বাড়ি ঘিরে বসেছে বিভিন্ন দোকান পাট। বসেছে সাইকেল গ্যারেজ।
কুড়ীগ্রাম থেকে আসা দুই তরুণ-তরুণী বলেন, রংপুর বিভাগের সব জায়গাতে প্রায় ঘোরাঘুরি করেছি । গণ মাধ্যমে বোতলের বাড়ি দেখেছি দেখে আর লোভ সামলাতে পারলাম না। চলে আসতেই হলো বোতলের বাড়িতে । এখানে এসে মনটা ভরে গেছে। আসলে দুই দম্পতির কাছে অনেক কিছু শেখার আছে ।
আরেকজন দিনাজপুর থেকে আসা কুরবার আলী বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এত সুন্দর বাড়িটি নির্মাণ করেছে এবং পরিবারসহ থাকছেন যা বলার ভাষা নেই আমাদের। তবে সিমেন্ট বাদ দিয়ে যদি শুধু বোতল দিয়ে তৈরি হতো তাহলে আরো ভালো লাগতো। এমন বাড়ি এর আগে কখনো দেখি নাই ।
১৭শ স্কয়ার ফুটের বাড়িটি তৈরির কাজ শেষ। এখন বিভিন্ন রং দিয়ে মনে মত করে সাজাবেন বাড়িটি। বাড়িটি তৈরিতে কোনো ইটের ব্যবহার করা হয়নি। আর্কষণীয় ওই বাড়ি দেখতে দূর-দূরান্তরে মানুষ ভিড় জমাচ্ছে। এদিকে পর্যটকদের না প্রশ্নে হিমসিম খাচ্ছেন রাশেদুল ও আছমা। পর্যটকদের কারণে তারা কোথায় বেড়াতে যেতে পারছে না ।
বোতলের বাড়ি বাড়ির মালিক শিক্ষক রাশেদুল আলম (৩৩) বলেন, ঈদের আনন্দে বিভিন্ন জেলা থেকে লাখেরও বেশি মানুষ বাড়িটি দেখতে এসেছে। কিন্তু আমরা কোথাও যেতে পারি নি বেড়াতে।বর্তমানে বাড়ির কাজ করতে রং তুলি ব্যবহার করবো । যার ফলে দেখতে আরো আকর্ষনীয় হয়ে উঠবে আমি মনে করি। বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষরা ফোন এবং বাড়ি তৈরী করবে তারা আমার কাছে জানতেও চায় কেমন খরচ হবে । অনেক ব্যাক্তিকে পরামর্শ দিয়েছি। তারা শুরু করেছেন বোতলের বাড়ি কাজ।
রাজধানীর শেখ বোরহান উদ্দিন পোস্ট গ্রাজুয়েট বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে পরিবেশ বিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছেন এই দম্পতি। তাদের স্বপ্ন ছিল পরিবেশবান্ধব একটি বাড়ি তৈরি করবেন। তবে সেই দম্পতি শহর ছেড়ে গ্রামে বাড়ি করলেন কেন- এমন প্রশ্নে স্ত্রী আসমা বেগম বলেন, “প্রত্যন্ত গ্রামের চারদিকে সবুজ বনানী আর ফসলের মাঠ। এমন দৃশ্য শহরে কোথায় পাওয়া যেতো না। আমার জন্ম, শৈশব, কৈশোর-বড় হওয়া সবকিছু শহরে। গ্রামের কোলাহলমুক্ত পরিবেশ, সবুজ মাঠ আমাকে শিশুকাল থেকে টানছে।”
No comments:
Post a Comment