ছবি: প্রতীকী
একুশে মিডিয়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক রিপোর্ট
আমাদের মাঝে অনেকেরই প্রস্রাবজনিত নানা ধরনের সমস্যা রয়েছে। প্রস্রাবের সমস্যাগুলো হচ্ছে; যেমন প্রস্রাবে কষ্ট, জ্বালাপোড়া, ঘন ঘন প্রস্রাব, প্রস্রাব ধারণে অক্ষমতা, প্রস্রাবকালীন ঝরা, বিছানায় প্রস্রাব ইত্যাদি। প্রত্যেক ধরনের সমস্যার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। আর চিকিৎসার পূর্বে অবশ্যই কারণ জানা দরকার, তা না হলে সঠিকভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করা হবে না।
মূত্রথলির সম্প্রসারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ার পেছনের কারণ হচ্ছে, মূত্রথলির প্রদাহ; যা কিনা ইনফেকশন, রেডিয়েশন, কেমিক্যাল প্রয়োগ, ক্যাথেটার প্রয়োগ করানো, পাথর জমা ইত্যাদির কারণে হয়ে থাকে। যদি মূত্রনালির মাংসগাত্রে টিউমার বিস্তার লাভ করে কিংবা সংলগ্ন অঙ্গ যেমন প্রস্টেটগ্রন্থি, মলনালি, জরায়ু ইত্যাদির টিউমারের বিস্তারের কারণে প্রস্রাবকালীন কষ্ট বেশি করে দেখা দিতে পারে।
একজন মানুষ ২৪ ঘণ্টায় সাধারণত ২.৫ থেকে ৩ লিটার পানি বা পানীয় পান করে থাকে। কিডনির কাজ করার ক্ষমতা স্বাভাবিক থাকলে, পারিপার্শ্বিক আবহাওয়ার খুব বড় তারতম্য না হলে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৫০০ সিসি প্রস্রাব কিডনি তৈরি করে থাকে।
আমাদের শরীর থেকে কিছু পানি ঘাম আকারে, কিছু পানি শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে, কিছু পানি মলের সঙ্গে বের হয়ে যায়। যেহেতু আমাদের প্রস্রাবের থলির স্বাভাবিক ধারণক্ষমতা ৩০০ সিসি, তাই স্বাভাবিকভাবে একজন মানুষ ২৪ ঘণ্টায় ৫ বার (দিনে ৪ বার আর রাতে ১ বার) প্রস্রাব করে থাকে।
তবে নানাবিধ স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক কারণে বারবার প্রস্রাবের প্রবণতা দেখা দিতে পারে, আবার কমেও যেতে পারে। যদি আমরা অতিরিক্ত পানি বা তরলজাতীয় খাবার খাই, তবে প্রস্রাবের পরিমাণ বেশি হয়, বারবার প্রস্রাব হয়। বারবার প্রস্রাব হয় ডায়াবেটিসেও।
অন্যদিকে পুরুষের ক্ষেত্রে বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে বয়সজনিত স্বাভাবিক পরিবর্তন হিসেবেই বৃদ্ধি ঘটে প্রোস্টেট গ্রন্থির। এটি প্রস্রাব প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করে। ফলে প্রস্রাবের থলি সব সময় সম্পূর্ণ খালি হয় না। আর বৃদ্ধি পাওয়া প্রোস্টেট সৃষ্টি করে প্রস্রাবের থলির মুখে এক ধরনের অস্বস্তি।
আমাদের দেহের প্রস্রাব ধারণের যে আধার রয়েছে, যাকে কিনা মূত্রথলি বলা হয়ে থাকে। কোনো কারণে যদি এর সম্প্রসারণ ক্ষমতা কমে যায়, তখনই ঘন ঘন প্রস্রাব, ঘুমের মাঝে প্রস্রাব এবং দ্রুত প্রস্রাবের বেগ চাপা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বয়োবৃদ্ধির কারণে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার প্রস্রাবের থলিরই ধারণক্ষমতা কমে যায়। বারবার প্রস্রাব করার প্রবণতা বেড়ে যায়। প্রস্রাব করা বা না করার এই নিয়ন্ত্রণ সব সময় রক্ষা করা সম্ভব নয়। নানা ধরনের স্নায়বিক অসুস্থতা, প্রস্রাবের থলির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে যেসব স্নায়ু, তার বৈকল্য বা সমন্বয়হীনতা, প্রস্রাব প্রদাহে, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বৃদ্ধি ও প্রস্রাবের থলির নানাবিধ অসুস্থতায় এ নিয়ন্ত্রণ সাময়িক বা স্থায়ীভাবে বিঘ্নিত হতে পারে।
ব্যক্তি যখন এ নিয়ন্ত্রণ হারায়, তখন সে আর পারে না নিজ ইচ্ছানুসারে প্রস্রাব করতে। কখনো কখনো কারো কারো ক্ষেত্রে ঘটে অনভিপ্রেত অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিজের অজান্তে প্রস্রাব ঝরে যাওয়ার মতো বিব্রতকর ঘটনা, যা কেবল অসুস্থতাই নয়, সামাজিকভাবে বিব্রতকরও বটে। তবে এসব নিয়ন্ত্রণযোগ্য ও নিরাময়যোগ্য। প্রয়োজন শুধু সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ। একুশে মিডিয়া।”
No comments:
Post a Comment