ছবি: সংগৃহীত
একুশে মিডিয়া, ঢাকা ১৭ জুলাই ২০১৮ ইং পিএম রিপোর্ট:
বহুল আলোচিত নারী কেলেঙ্কারির জন্য পুলিশের বির্তকিত ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার-ডিআইজি মিজানুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) তাকে বরখাস্ত করা হয়।
ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনে বিচারিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তদন্ত যাতে নির্ভুল হয় সেই লক্ষ্যে কাজ করছে। আমি এটুকু বলতে পারি তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং যদি প্রয়োজন পড়ে বিচারিক ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে। এখানে আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।
ডিআইজি মিজানুর রহমান ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ বছরের জানুয়ারিতে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়।
দ্বিতীয় বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রী মরিয়ম আক্তারকে গ্রেফতার করানোর অভিযোগ ওঠে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে।
প্রসঙ্গত, ‘তুলে নিয়ে বিয়ে করলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার!’ শিরোনামে ৭ জানুয়ারি ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। ‘এক সংবাদপাঠিকার জীবনও বিষয়ে তুলেছেন ডিআইজি মিজান’ শিরোনামে পরদিন ৮ জানুয়ারি আরও একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করে। জনমনে প্রত্যাশা ছিল- অভিযুক্ত এ পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সময়ের ব্যাপার।
এর মধ্যে প্রকাশিত হয় ‘অস্ত্রের মুখে সংবাদপাঠিকাকে তুলে নেয়ার সময় জনতার রোষানলে পড়েন’ শিরোনামে আরও একটি তথ্যবহুল রিপোর্ট। ৮ জানুয়ারি থেকে একটি বেসরকারি টেলিভিশন বিষয়টি নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন সম্প্রচার করে। যেখানে তথ্য-প্রমাণ হিসেবে অভিযোগের অনেক কিছু অডিও ও ভিডিওর মাধ্যমে সম্প্রচার করা হয়। এরপরই ডিআইজি মিজানুর রহমানকে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্তটি সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়।
ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত গুরুতর অভিযোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- তিনি মরিয়ম আক্তার ইকো নামে আনুমানিক ২৫ বছয় বয়সী এক মেয়েকে জোরপূর্বক তার পান্থপথের বাসা থেকে নিজের গাড়িতে তুলে নিয়ে রাজধানীর তিনশ’ ফুট এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে তাকে মারধর করে চোখ বেঁধে রাতে বেইলি রোডের নিজ ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন। তিন দিন আটকে রাখার পর মেয়ের মাকে সেই ফ্ল্যাটে এনে মেয়েকে ফিরিয়ে দেয়ার পরিবর্তে হত্যার হুমকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করেন। এরপর মরিয়ম আক্তার ইকোকে নিয়ে লালমাটিয়ার একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে চার মাস সংসার করেন। পরবর্তী সময়ে কাবিননামার কপি তোলার জন্য মেয়ের মা আবেদন করলে এবং ফেসবুকে স্বামী পরিচয় দিয়ে স্ত্রী মরিয়ম আক্তার ইকো ডিআইজি মিজানের ছবি আপলোড করায় মিজান ক্ষেপে যান। এরপর পরপর দুটি মিথ্যা মামলা দিয়ে স্ত্রী ইকোকে কারাগারে পাঠান ডিএমপির ওই অতিরিক্ত কমিশনার। ২১ দিন কারাভোগের পর ১ জানুয়ারি ইকো কাশিমপুর কারাগার থেকে ছাড়া পান।
এদিকে শুধু ইকো নয়, এ রকম বহু মেয়েকে তিনি ফাঁদে ফেলে এবং ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে হয়রানি ও নানাভাবে নির্যাতন করেন। এ অনুসন্ধানের সূত্র ধরে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলের জনৈক সংবাদপাঠিকাকে হেনস্তা করার বিষয়টি সামনে চলে আসে। জানা যায়, ইকোর মতো ওই সংবাদপাঠিকাকেও তিনি জোর করে গাড়িতে তুলে নির্যাতন করেন। একুশে মিডিয়া।
No comments:
Post a Comment