ছবিঃ সংগৃহীত
একুশে মিডিয়া, আন্তর্জাতিক ১৮ জুলাই ২০১৮ ইং পিএম রিপোর্ট:
গত ২৩ জুন থাইল্যান্ডের চিয়াং রাইপ্রদেশের থাম লুয়াং নামে রহস্যময় গুহায় বেড়াতে গিয়ে ভেতরে আটকে পড়েন ১২ ক্ষুদে ফুটবলার ও তাদের কোচ। হঠাৎ বৃষ্টি আসার ফলে তারা গুহার মুখ থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার ভেতরে চলে যান এবং সেখানেই আটকা পড়ে যান। কোনো রকমে একটি উঁচু জায়গায় তারা ঠাঁই নেয়। এর নয়দিন পর তাদের খোঁজ পান ডুবুরিরা।
পরে ৮ জুলাই স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে তাদের উদ্ধারে অভিযান শুরু করে অত্যন্ত সুদক্ষ ১৮ জনের একটি ডুবুরি দল। আটকে পড়ার প্রায় দুই সপ্তাহ পরে কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই এক এক করে সবাইকে গুহা থেকে বের করে আনা সম্ভব হয়। সেখান থেকে বের করার পর ক্ষুদে ফুটবলারদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ বুধবার (১৮ জুলাই) তারা সবাই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
এর আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে এই প্রথম জনসম্মুখে আসে ১২ ক্ষুদে ফুটবলার ও তাদের কোচ। সবার মুখেই ছিল কয়েকটি প্রশ্ন। সেই গুহায় ১৮ দিন কিভাবে কাটিয়েছে তারা? কোন খাবার খেয়ে বেঁচে ছিল?
সেই সব প্রশ্নের উত্তর জানতে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি মুখোমুখি হয়েছিল সেই ফুটবলারদের। আর সেই আলাপচারিতায় জানা গেছে অনেক না জানা কথা।
বিবিসি তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, উদ্ধারকৃত বালকেরা ডুবুরিদের দেখা পাওয়ার মুহূর্তটিকে ‘অলৌকিক’ বলে অভিহিত করেন।
ওই বালকদের মধ্যে কেবল আদুল সাম-অন (১৪) ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ব্রিটিশ ডুবুরিরা তাদের খুঁজে পাওয়ার পর শুধু ‘হ্যালো’ বলবার শক্তি অবশিষ্ট ছিল তার দেহে।
পরে ওয়াইল্ড বোর ফুটবল দলের ওই ১২ সদস্য চিয়াং রাই রাজ্যে তাদের ক্লাবের সরঞ্জামসহ একটি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়। ফুটবল মাঠের মতো করে সাজানো মঞ্চে ‘ওয়াইল্ড বোরদের বাড়ি প্রত্যাবর্তন’ লেখা ব্যানারে তাদের স্বাগত জানানো হয়।
সেই সংবাদ সম্মেলনে একটি ছেলে জানায়, গুহার ভেতর তারা পাথরের চুঁইয়ে পড়া পানি খেয়ে বেঁচে ছিল। সে বলে, ‘পানি পরিষ্কার, কিন্তু কোনো খাবার ছিল না।’
কোচ একাপোল চান্টাওয়ং বলেন, ‘আমরা গুহা থেকে সুড়ঙ্গ খুড়ে বের হওয়ার কথা ভাবছিলাম। কর্তৃপক্ষ কখন এসে উদ্ধার করবে, তার আশায় বসে থাকা সম্ভব ছিল না।’
একই সঙ্গে তারা উদ্ধারকাজে অংশ নিতে গিয়ে প্রাণ হারানো ডুবুরি সামান কুনানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।
বেঁচে ফেরা ছেলেদের কিছুদিনের জন্য বৌদ্ধ ভিক্ষুর জীবন যাপন করতে হবে। থাইল্যান্ডে দুর্ভাগ্যের শিকার ছেলেদের জন্য এই প্রথা চালু আছে।
চিয়াং রাই রাজ্যের গভর্নর প্রাচন প্রাতসুকান জানান, ক্ষুদে ফুটবলারদের জন্য এটাই একমাত্র আনুষ্ঠানিক সংবাদ স্মমেলন। এরপর তারা আর কোথাও সাংবাদিকদের সাথে দেখা করবে না।
একজন মনস্তাত্ত্বিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা চাই এই বাচ্চাগুলো ঝঞ্ঝাটবিহীন স্বাভাবিক জীবন যাপন করুক। একুশে মিডিয়া।’
No comments:
Post a Comment