একুশে মিডিয়া, ভোলা রিপোর্ট:
আমাগো পরিবারের কর্তা কাজের শেষে বিল থেকে শাপলা, শাপলার ফুল ও ফল নিয়ে আসতো। ছোট্ট ছেলেটা ফল খুব পছন্দ করে। ফলের ভেতরে ছোট ছোট বীজ থাকে। ওই বীজ গুলো নিয়ে ভেঙ্গে রোদে শুকিয়ে খই ভেজে খাওয়া হয়, এ খই খুবই সুস্বাদু। কথাগুলো বলেছিলেন ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার চরফৈজুদ্দিন গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডের গৃহিনী জুলেখা। বাড়ি তার বিল এলাকায়।
শুধু জুলেখা নয়, এরকম কথা বলেছিলেন উপজেলার চরফৈজুদ্দিন গ্রামের রহিমা, মালেকা, বিলকিস, রাশেদা, সাজেদা সহ কয়েকজন নারী। তারা বলেন, আগে বাড়ির পাশে খালে-বিলে শাপলা ফুল ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা যেতো। নদীর পাড়ে বসলে শাপলা ফুল দেখতে ভালোই লাগতো। কিন্তু এখন আর খুব একটা দেখা মিলে না।
মনপুরার অনেক খাল-বিলে ঘর-বাড়ি তৈরী করায় হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার মানুষের চির-চেনা শাপলা। এই আক্ষেপ শুধু কয়েকজন নারীর নয়, এলাকার অধিকাংশ মানুষের।
তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শাপলা ফুল বদ্ধ অগভীর জলাশয় জন্ম নেয়। নদী-নালা, খাল-বিলে শাপলা ফুল জন্মে থাকে। এ দেশে দুই ধরনের শাপলা ফুল দেখা যায়, সাদা ও লাল। সাদা শাপলাকে সাদা জল ফল ও লাল শাপলাকে লাল রক্ত জল ফল বলা হয়। শাপলা ফুল যখন আবদ্ধ জলাশয়ে একসঙ্গে অনেকগুলো ফুটে থাকে তখন জলাশয়ে এক অন্যরকম অপরূপ সৌন্দর্য়ের সৃষ্টি করে।
পরিবেশবিদরা মনে করেন, জমিতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ফসল চাষ করায় শাপলা জন্ম নেওয়ার ক্ষেত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে দেশের এক শ্রেণীর মানুষ বিশেষ খাবারের চাহিদা পূরন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এক সাক্ষাতকারে ভোলা সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মোঃ জামাল উদ্দিন বলেন, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ফসল চাষ করায় শাপলা জন্ম নেওয়ার ক্ষেত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনও কুচুরি পানার ফুল সৃষ্টি হওয়ায় নদী, নালা, বিলে তেমন একটা শাপলা ফুল দেখা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, শাপলায় পুষ্টিগুণ অনেক। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফলের জন্য মানবদেহের উজ্জলতা অটুট থাকে এবং তৃষ্ণাও মেটায়। একুশে মিডিয়া।
No comments:
Post a Comment