একুশে মিডিয়া, রাজশাহী ও সিলেট ১৬ জুলাই ২০১৮ ইং নিবার্চনী রিপোর্ট:
সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীতা দেওয়াকে কেন্দ্র রাজনৈতিক জোটবন্ধু বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যকার সুসম্পর্কে ফাটল ধরেছে।
গত সিটি নির্বাচনগুলোর মতো রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী দেয়নি জামায়াত। তবে সিলেটে তা প্রত্যাহার করে দলীয় প্রার্থী দেয় দলটি। আর এই মেয়র প্রার্থী দেওয়াকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি অবস্থানে এ দুই রাজনৈতিক দল।
তারই ধারাবাহিকতা দেখা গেছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও। কারণ এই সিটিতে বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের আশপাশে জামায়াতের কোনো নেতা-কর্মীকে দেখা যাচ্ছে না।
আগামী ৩০ জুলাই হতে যাওয়া রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের তফসিল ঘোষণার আগেই রাজশাহী ও সিলেটে প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে মাঠে সক্রিয় হয় জামায়াত। সিলেটে এহসান মাহবুব জুবায়ের এবং রাজশাহীতে মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি সিদ্দিক হোসেন মেয়র পদে লড়বেন বলে ঘোষণা দেয় দলটি।
ভোটের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর পর বিএনপি রাজশাহী ও সিলেটে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এবং আরিফুল হককে ধানের শীষ প্রতীক দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আর বরিশালে বর্তমান মেয়রের বদলে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক মেয়র মজিবর রহমান সারোয়ার।
আর জামায়াত সিলেট মহানগরের আমির অ্যাডভোকেট এহসান মাহবুব জুবায়েরকে প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনের ঘোষণা দেয়। তাই রাজশাহীতে দলটি কী করে এ নিয়ে প্রশ্ন ছিল জোটের। কিন্তু পরবর্তীতে রাজশাহীর মেয়র প্রার্থী দেয়নি জামায়াত।
এ ব্যাপারে রাজশাহী জামায়াতের একাধিক নেতারা বলেন, এখানে আমাদের যথেষ্ট ভোট আছে। মেয়র পদে প্রার্থী দেওয়ার জন্য আমাদের প্রথম পছন্দই ছিল রাজশাহী। কিন্তু কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বাইরে তো যাওয়া যায় না। ২০ দলের সিদ্ধান্ত মেনেই তারা ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বলে জানান তারা।
রাজশাহী মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির আবু ইউসুফ সেলিম বলেন, ২০ দলীয় জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। রাজশাহীতে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে আমরা বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকেই সমর্থন দেব।
কিন্তু ভোটের মাঠে দেখা যাচ্ছে উল্টোটা। বিএনপির নির্বাচনী প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে না জামায়াত-শিবিরের কোন নেতা-কর্মীকে। এ নিয়ে প্রশ্ন জেগেছে অনেকের মনে। তাহলে কি বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যকার সুসম্পর্কে ফাটল ধরেছে?
দলীয় সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী সিটি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে ‘অভিমান’ করেছে জামায়াত। মেয়র পদে প্রার্থী না দিলেও কাউন্সিলর পদে জামায়াতের নেতাদের বিএনপির ‘ছাড়’ না দেওয়াটাই এই অভিমানের কারণ। তাই অভিমানের জেরে রাজশাহী সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের আশপাশে জামায়াতের কোনো নেতা-কর্মীকে দেখা যাচ্ছে না।
তবে বিএনপির প্রার্থী বুলবুল বলছেন, পুলিশের ভয়েই তারা আসছেন না।
উল্লেখ্য, আগামী ৩০ জুলাই যে তিন সিটিতে ভোট হচ্ছে, তার মধ্যে জামায়াতের শক্তি সবচেয়ে বেশি রাজশাহীতেই। কারণ ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে এখানে বিজয়ী বিএনপির নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল জামায়াত।
প্রার্থী নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের এই টানাপোড়েন থাকলেও সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন নাগরিক কমিটির প্রার্থী আওয়ামী লীগের এইচ এম খায়রুজ্জামান। আওয়ামী লীগ বা মহাজোটের অন্য কোনো প্রার্থী নেই। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, ১৪ দলের সব নেতা-কর্মীই একসঙ্গে কাজ করছেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারের মন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামানের ছেলে এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে। আর তার হাত ধরেই ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে জয় পায় আওয়ামী লীগ। এবারও লিটনকেই মেয়র প্রার্থী করেছে ক্ষমতাসীন দলটি। একুশে মিডিয়া।
No comments:
Post a Comment