নতুন চাকরিতে যোগ দিয়ে প্রথমদিকে অনেকেই খুব মানসিক দুশ্চিন্তায় থাকেন। সবার মন কীভাবে জয় করবেন, বস খুশি হচ্ছেন কিনা সেসব বিষয়ে বেশ উদ্বিগ্ন থাকেন। নিজের কাজটি ভালোভাবে করলেও চাপটা যেন পিছু ছাড়ে না।
এ ক্ষেত্রে প্রথম প্রথম নিজেকে অফিসের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য বেশ কষ্টও করতে হয়। কাজের ধরণ, সহকর্মীদের মন-মানসিকতা বুঝতে ২/৩ সপ্তাহ লাগে।
একইসঙ্গে অফিসের সময় সূচির সঙ্গে খাপ-খাওয়ানো, সিনিয়র-জুনিয়রদের মেজাজ মর্জি বুঝতেও সময় লাগতে পারে। কিন্তু এই বোঝাপড়ার জন্য খুব বেশি সময় না নিয়ে, নিজের কাজটা সঠিকভাবে করা, অন্যদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলায় মন দিতে হবে।
নতুন চাকরিতে যোগ দিয়ে কী করা উচিত নয়, সে বিষয়ে আমরা কমবেশি সবাই জানি। তারপরও সেই জানা বিষয়গুলোতেই আরেকবার চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন:
ক. একনাগাড়ে কাজ করার পর মন ও শরীর বিশ্রাম চায়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা কাজ করাই যথেষ্ট। নতুন অফিস বলে বাড়তি আরো ২/৩ ঘণ্টা থাকবেন, সেটা আপনার জন্য সুস্বাস্থ্যকর হবে না।
গবেষকরা বলছেন, কাজ শেষ হয়েছে আগে, কিন্তু আরো ২/৩ ঘণ্টা অফিসে কাটিয়ে ফিরলে হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কোনো অবস্থাতেই সপ্তাহের কাজ ২/৪দিনে শেষ করার ঝুঁকি নেবেন না। কেননা বেশি দিন এই অভ্যাস ধরে রাখতে পারবেন না। তখন চাপ বাড়বে।
খ. নতুন চাকরিতে বাড়তি দায়িত্ব পালন করার ঝোঁকে পড়বেন না কখনও। যদি একবার পড়েন তাহলে সেই ফাঁদ থেকে বেরুতে পারবেন না। অনেকে গভীর রাতেও অফিসের মেইল চেক করেন। এমনকি, বেশিরভাগ চাকরিজীবী ছু্টিতে থাকলেও অফিসের খোঁজ-খবর রাখার চেষ্টা করেন। এ কাজটা কখনোই করবেন না। ছুটিতে আছেন, তো সব ভুলে ছুটিটা উপভোগ করুন। প্রয়োজনে মোবাইল, ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখুন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমনটি না হলে আপনার স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। ছুটিতে মন ও শরীরের ওপর চাপ কমাতে পারলে, জয়েন করেই ভালো পারফরমেন্স দেখাতে পারবেন।
গ. টানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করছেন, কোনো অবস্থাতেই এ পরিস্থিতি স্বাস্থ্যকর নয়। তাই দুই/তিন ঘণ্টা পরপর একটু হাঁটাচলা করুন। অন্য সহকর্মীর রুমে যান, কথাবার্তা বলুন। দেখবেন সামান্য বিরতিতে আপনার কাজের প্রতি ভালোবাসা আরো বাড়বে। কাজটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে।
ঙ. দুপুরে না খাওয়া আমাদের অনেকেরই অভ্যাসে পরিণত হয়। নতুন অফিসে যোগ দিলে কাজের চাপে নাওয়া-খাওয়া ভুলে যাওয়ার প্রবণতা অনেকের মধ্যেই দেখা দেয়। কিন্তু কাজের চাপ সামলিয়ে খাবার খাওয়ার সময়টা বের করতেই হবে। কারণ খাবার না খেলে সেই প্রভাব স্বাস্থ্যের ওপর পড়বে।
চ. সীমিত আয়ের চাকরিজীবীরা চেষ্টা করেন হালকা নাস্তা খেয়ে দুপুরটা পার করতে। নতুন কর্মস্থলে গিয়ে কোনো অবস্থাতেই এমনটা করবেন না। দুপুরের সঠিক খাবারটা খাওয়া জরুরি। তবেই স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, কাজে মন বসবে। সুযোগ থাকলে সবুজ শাকসবজি বেশি খাবেন। কোমল পানীয় পান না করাই শ্রেয়। খেতে পারেন ফলমূল।
ছ. কাজের ফাঁকে, আলোচনার সুযোগ তৈরি হলে অল্প কথায় মনের ভাব প্রকাশ করুন। অন্যকে কথা বলার সুযোগ দিন। দেখবেন সহজেই একে অপরের প্রতি সহমর্মী হয়ে উঠছেন। কাজটাও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। নতুন অফিসে এ সব ব্যাপারে জড়তা থাকে। সেটা যত দ্রুত কাটিয়ে উঠবেন ততই মঙ্গল।
No comments:
Post a Comment