একুশে মিডিয়া, বিশেষ রিপোর্ট:
আগামীকাল ১৪ জুলাই শুরু হচ্ছে চলতি বছরের হজ ফ্লাইট। ৪১৯ জন যাত্রী নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-১০১১ ফ্লাইটটি ঢাকা ছাড়বে সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহা-ব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে হজ ফ্লাইট শুরু হলেও এখনও প্রায় ১১ হাজার টিকিট অবিক্রিত রয়ে গেছে।
সূত্র জানায়, প্রথম দিনে সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে বিজি-৩০১১, বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে বিজি-৫০১১ এবং শিডিউল ফ্লাইট বিজি-০০৩৫ রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা ছাড়বে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল ও ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান প্রথম ফ্লাইটের হজযাত্রীদের বিমানবন্দরে বিদায় জানাবেন।
বাংলাদেশ থেকে এবছর ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন যাত্রী হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারিভাবে ৭ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারিভাবে ১ লাখ ২০ হাজার জন হজে যাচ্ছেন।
বিমান সূত্র জানায়, চলতি বছরে হজ ফ্লাইট ও শিডিউল ফ্লাইটসহ ৩৫৯টি ফ্লাইটে মোট ৬৩ হাজার ৫৯৯ জন এবার জেদ্দা যাবেন হজ পালনের জন্য। এর মধ্যে ২৯৮টি ডেডিকেটেড এবং ৬১টি শিডিউল ফ্লাইট। বাকি ৫৬ হাজার ৪০১ জন যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
শাকিল মেরাজ বলেন, ‘নির্বিঘ্নে এবং নির্ধারিত ফ্লাইটে হজ পরিচালনার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ঢাকা ছাড়াও সিলেট ও চট্রগ্রাম থেকে চলতি বছরে যথাক্রমে ৩টি এবং ৯টি ফ্লাইট পরিচালিত হবে হজ যাত্রীদের জন্য। এবারে হজ যাত্রার জন্য বিমানের ৪টি নিজস্ব বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর ছাড়াও ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকার নিয়মিত শিডিউল ফ্লাইটেও যাত্রীরা হজ পালনের জন্য জেদ্দা যাবেন।
বিমান সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১৪ জুলাই থেকে শুরু হয়ে আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত হজ ফ্লাইট ও শিডিউল ফ্লাইটসহ ৩৫৯টি ফ্লাইটে মোট ৬৩ হাজার ৫৯৯ জন এবার জেদ্দা যাবেন হজ পালনের জন্য। এর মধ্যে ২৯৮ টি ডেডিকেটেড এবং ৬১টি শিডিউল ফ্লাইট। হজের পরে ১৭২টি ফ্লাইট চলবে ২৭ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যার মধ্যে ডেডিকেটিড ১৪৩টি এবং শিডিউল ফ্লাইট হবে ২৯টি।
তবে হজ ফ্লাইট শুরু হলেও এখনও টিকিট নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গেছে। এখনও প্রায় ১১ হাজারের মতো টিকিট অবিক্রিত রয়ে গেছে।
হজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি আবদুস ছোবহান ভুঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘চলতি বছরে ৫২ হাজার ৭০০ টিকিট ইতোমধ্যে বিক্রি হয়েছে। আর চট্টগ্রাম থেকে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার আর সিলেট থেকে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার। তারপর বাকি থাকছে ১১ হাজারের মতো। তবে সবকিছু নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। আশা করছি সব ঠিক হয়ে যাবে।’
তবে এবারে জেট ফুয়েল ও ডলারের দাম বাড়াতে হজযাত্রীদের ব্যয় বাড়ছে ১৪ হাজার টাকা বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। তিনি বলেন, ‘এবার হজ যাত্রীরা দুই ধরনের প্যাকেজের আওতায় সরকারিভাবে হজে যেতে পাবরেন। সরকারিভাবে প্যাকেজ-ওয়ান এর আওতায় মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৯২৯ টাকা। আর প্যাকেজ-টু এর আওতায় ব্যয় হবে ৩ লাখ ৩১ হাজার ৩৫৯ টাকা। এর মধ্যে বিমান ভাড়া এক লাখ ৩৮ হাজার ১৯১ টাকা।’
১১ হাজার অবিক্রিত টিকিট কেনার জন্য বারবার এজেন্সিগুলোকে অনুরোধ করছি মন্তব্য করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ সারাবংলাকে বলেন, “যদি তারা সময়মতো টিকিট না নেয় এবং আমাদের ‘ক্যাপাসিটি লস’ হয় কিংবা যাত্রীর অভাবে ফ্লাইট বাতিল করতে হয় তাহলে ওই ফ্লাইটের যাত্রীদের হজ যাত্রার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে যাবে। কারণ, সৌদি কর্তৃপক্ষ স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, তারা এবারে হজযাত্রীদের জন্য বাড়তি কোনও স্লট বরাদ্দ করবে না, অর্থ্যাৎ এবারে আমরা বাড়তি কোনও ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পাবো না।’
শাকিল মেরাজ আরও বলেন, ‘এ কারণে শুরু থেকেই সজাগ ছিলাম যে প্রত্যেক ফ্লাইটে যেন সঠিক যাত্রী পাওয়া পাওয়া যায় এবং প্রতিটি আসন বিক্রি হয়। যেন ক্যাপাসিটি লস না হয় এবং ফ্লাইট বাতিলের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে। গতবছর যাত্রীর অভাবে ২৪টি ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছিল। পরে সৌদি সরকারকে অনেক অনুরোধ করে আমরা ২৮টি বাড়তি স্লট পেয়েছিলাম। সবাইকে সৌদি আরব নিতে পেরেছিলাম, কিন্তু চলতি বছরে সে সুযোগ নেই।’
‘তাই এ বছরে আমরা হজ শুরু হওয়ার ৫০ দিন আগে থেকে টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। এবং সরকার ধর্মমন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছে এ বছর বাড়িভাড়া এবং ভিসা করার আগেই টিকিট করতে হবে। কিন্তু এখনও অনেকেই টিকিট সংগ্রহ করেন নাই’ বলেন তিনি।
তবে প্রথম ১০ দিনের ফ্লাইটের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছে এবং তখনকার অপারেশন বেশ স্মুথ থাকবে বলেই আশা করছি মন্তব্য করে শাকিল মেরাজ বলেন, “শেষের ১০ দিনের টিকিটও ‘অলমোস্ট’ শেষ। তবে মাঝের সময়টা অর্থ্যাৎ ২৭ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট-এই সময়ের বিভিন্ন ফ্লাইটের ১১ হাজার টিকিট এখনও অবিক্রিত রয়েছে। আমরা এজেন্সিগুলোকে অনুরোধ করবো যেন অতিসত্বর টিকিট সংগ্রহ করেন এবং যাত্রীদের নির্ধারিত ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়ার ৫ ঘণ্টা আগে এয়ারপোর্টে নিয়ে আসেন। কোনও কারণে যদি ফ্লাইট দেরি হয় তাহলে বিশাল অংকের টাকার জরিমানা দিতে হয়। গত বছর মাত্র ৫টি ফ্লাইট দেরি হওয়ার কারণে ১০ লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানা দিতে হয়েছিল বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে, আর ফ্লাইট বাতিল হলে বিপর্যয় হয়ে যায়। তাই এজেন্সিগুলোকে অনুরোধ করা হচ্ছে দ্রুত টিকিট সংগ্রহের জন্য। একুশে মিডিয়া।
No comments:
Post a Comment