একুশে মিডিয়া, চট্টগ্রাম রিপোর্ট:
গ্যাস নেই, জ্বলেনি চুলা খাবার কিনতে রেস্টুরেন্টগুলোতে ভিড় গ্যাসের চাপ বাড়াতে কর্ণফুলী গ্যাস মূল লাইন পরিষ্কার করছে আজো কিছু এলাকায় গ্যাস দুর্ভোগ থাকতে পারে
গ্যাস নেই, জ্বলেনি চুলা খাবার কিনতে রেস্টুরেন্টগুলোতে ভিড় গ্যাসের চাপ বাড়াতে কর্ণফুলী গ্যাস মূল লাইন পরিষ্কার করছে আজো কিছু এলাকায় গ্যাস দুর্ভোগ থাকতে পারে
আকবর শাহ থানাধীন পশ্চিম ফিরোজশাহ এলাকার গৃহিনী নাজমুন নাহার। সকাল সাড়ে ৮টায় গ্যাসের চুলা জ্বালাতে গিয়ে দেখেন গ্যাস নেই। এই এলাকায় সাধারণত সবসময় গ্যাস থাকে।
হঠাৎ করে গ্যাস চলে যাওয়ায় তিনি ভেবেছেন কিছুড়্গণ পর হয়তো চলে আসবে। কিন’ সেই গ্যাসের দেখা নেই। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় বাসায় রান্নার চাপও বেশি ছিল। অগত্যা গ্যাসের দেখা না পেয়ে হোটেলমুখী হতে হয়েছে। কিন’ ততড়্গণে এলাকার অনেকেই হোটেলে গিয়ে ভিড় করায় সেখানেও খাবার শেষ হয়ে যায়। শুধু আকবরশাহ এলাকায় নয়, গতকাল নগরীর প্রায় পুরো এলাকায় ছিল একই চিত্র।
হঠাৎ করে গ্যাস না থাকা বিষয়ে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সাথে কথা হলে তারা জানায়, গ্যাসের চাপ বাড়াতে গ্যাসের লাইন পরিষ্করের কাজ চলছে। এজন্য গ্যাসের ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের মেইন লাইনে একটি পিগ (একটি পদার্থ) প্রবেশ করিয়ে তা পরিষ্কার করা হচ্ছে। এই পিগ পাইপের তেল, গ্রিজসহ বিভিন্ন আবর্জনা অপসারণ করে এবং এতে পরবর্তীতে গ্যাসের চাপ বাড়বে।
কিন’ কাজটি করার সময় বাসা বাড়িতে যে গ্যাস থাকবে না তা কেন জানানো হয়নি জানতে চাইলে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস’াপনা পরিচালক প্রকৌশলী খায়েজ আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘গ্যাস তো সব জায়গায় ছিল। গ্যাস বন্ধ থাকবে কেন? এছাড়া পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বলা হয়েছে গ্যাসের অন স্ট্রিম রিগিং কার্যক্রম চলবে।
সেই বিজ্ঞাপনে কোথাও লেখা ছিল না যে গৃহস’ালীতে গ্যাস থাকবে না এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বাসাবাড়িতে গ্যাস থাকার কথা ছিল। বৃষ্টির কারণে কার্যক্রমটি শুরম্ন করতে এক ঘণ্টা বিলম্ব ঘটে, তাই কয়েক এলাকায় সমস্যা হয়েছে। আবার যে এলাকায় কাজ শেষ হয়েছে সেই এলাকায় লাইন খুলে দেয়া হয়েছে। এটা গ্রাহকদের স্বার্থেই করা হয়েছে।
রিং মেইন গ্যাস লাইন অন স্ট্রিম কার্যক্রম প্রসঙ্গে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস’াপনা পরিচালক প্রকৌশলী খায়েজ আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘চট্টগ্রামের গ্যাসের মেইন লাইনটি ফৌজদারহাট থেকে পতেঙ্গা আনোয়ারা হয়ে ঘুরে আবারো ফৌজদারহাটে এসে শেষ হয়েছে। এজন্য এটিকে রিং লাইন বলা হয়।
৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মেইন লাইনটি পুরোটা পরিষ্কার করা হচ্ছে। যে এলাকার উপর দিয়ে এই পিগটি যাবে সেই এলাকায় কিছুড়্গণের জন্য গ্যাসের চাপ কম থাকবে এবং পরিষ্কার হয়ে গেলেই তা আবার চালু হয়ে যাবে। এভাবে পুরো পাইপটি পরিষ্কার করা হবে এবং আজ ( শুক্রবার) রাতের মধ্যেই তা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।’
কর্ণফুলী গ্যাসের কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায়, গতকাল রাতে আনোয়ারা ও কালুরঘাট এলাকায় কাজ চলছিল। শনিবার বহদ্দারহাট, বায়েজিদ বোসত্মামী এলাকায় হয়তো কিছু সময়ের জন্য গ্যাস নাও থাকতে পারে।
এদিকে বাসায় গ্যাস না থাকায় নগরবাসীকে খাবার কিনতে ছুটতে হয়েছে রেস্টরেন্টে। হালিশহর জি বস্নক এলাকার বাসিন্দা মামুনুর রশিদ হোটেলে খাবার কিনতে গিয়ে দেখেন সেখানেও খাবার নেই। কারণ সব হোটেলেই গ্যাসের সংযোগ, গ্যাস না থাকায় তারাও রান্না করতে পারেনি। অনেক হোটেল আবার লাকরির চুলা বা সিলিন্ডার দিয়ে রান্না শুরম্ন করে। এসব হোটলে ছিলো খাবার ক্রেতাদের লম্বা লাইন।
আগ্রাবাদ, বড়পোল, চৌমুহনী, দেওয়ানহাট, হালিশহর, একেখান, জিইসি প্রভৃতি এলাকায় সব রেস্টুরেন্টে ছিলো খাবার বিক্রির ধুম। কেউবা খাবার পেয়েছে আবার কেউবা খালি হাতে ফিরেছে। একেখান মোড়ে কুটুম্ববাড়ি রেস্টুরেন্ট কর্তৃপড়্গ জানায়, বাসায় গ্যাস না থাকায় মানুষের কষ্ট হচ্ছে বলে অনেকে খাবারের জন্য আমাদের কাছে আসছে। কিন’ গ্যাস না থাকায় আমাদেরও রান্নায় সমস্যা হচ্ছে। তারপরও চুলা তৈরি করে রান্না করে খাবার দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এজন্য বিরিয়ানি ও খিচুরি বেশি করা হচ্ছে।
জামালখান, আসকারদীঘি, আগ্রাবাদ, পতেঙ্গা, আন্দরকিলস্না, চৌমুহনী, আলকরণ, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, সদরঘাট, মাঝিরঘাট, গোসাইলডাঙ্গা প্রভৃতি এলাকায়ও সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর একটা পর্যনত্ম গ্যাস ছিল না। আবার কোথাও কোথাও বিকাল তিনটায়ও গ্যাসের দেখা পাওয়া যায়নি। এসব এলাকার রেস্টুরেন্টগুলোতে ছিলো ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়।
উলেস্নখ্য, কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপড়্গ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে শুক্রবার থেকে রোববার পর্যনত্ম এই পিগিং কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছে। আবাসিকে গ্যাস দুর্ভোগ কমাতে শিল্প কারখানায় সরবরাহ বন্ধ এবং সিএনজি স্টেশনগুলোকে বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে। একুশে মিডিয়া।”
No comments:
Post a Comment