ছবি: প্রতীকী
একুশে মিডিয়া, ফরিদপুর, ১৮ জুলাই ২০১৮ ইং এএম রিপোর্ট:
ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে ১২ বছরের এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাদুল্লাহ্ মাতুব্বরের ডাংগী গ্রামের গোপালপুর ঘাট সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরে ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায়। মেয়েটি বর্তমানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। এ ব্যাপারে চরভদ্রাসন থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।
জানা যায়, রবিবার (১৫ জুলাই) বাড়ির পাঁশে পদ্মার ঘাট ও দোকানপাট হওয়ায় বিভিন্ন সময় ওই মাদ্রাসা ছাত্রী সেখানে যাতায়াত করে। কিন্তু রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে প্রায় রাত ১টার দিকে হঠাৎ বাড়ির উঠানে তাকে কান্নারত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরের দিন সকালে দ্রুত তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে ট্রমা সেন্টারে নিবির চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কিশোরির পিতা কান্নারত অবস্থায় সাংবাদিকদের জানান, আমি দিন-মজুর ভ্যান চালক সাধারণ মানুষ। গত আট মাস পুর্বে সাপে কামড় দেওয়ার পর থেকে আমি অসুস্থ। তারপরও কাজ করতে হয়। গত রবিবার আমি চরভদ্রাসন বাজার থেকে বাজার করে বাড়ি যেয়ে শুনি, আমার মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছে না। তারপর রাতে খুঁজতে খুুুঁজতে রাত ১২টা বেঁজে যায়। আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে ফোন দিয়ে খোঁজ খবর নেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু কোন খোঁজ খবর পাইনা। হঠাৎ প্রায় রাত ১ টার দিকে ওর কান্নাকাটির শব্দ শুনতে পাই। তারপর আমি আর ওর মা ওকে ঘরের মধ্যে নিয়ে যাই। পরে অবস্থা খারাপ দেখে সকালে ওকে হাসপাতালে নিয়ে আসি।
মাদ্রাসা ছাত্রীর বাবা জানায়, স্থানীয় জাভেদ বাছার (২৮) পিতা মৃত রোকন বাছাড় নামে এক প্রতিবেশী ওকে গোপালপুর ঘাট দোকান থেকে অনেক খাবার কিনে দিয়ে ঘাটের পূর্ব দিকে পাট ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে যায়। আগে থেকে সেখানে উপস্থিত থাকা ৪ জন চঞ্চল খালাসি, সঞ্জিত খালাসি, পান্নু মোল্লা ও কুদ্দুস এর কাছে কিশোরিকে দিয়ে অনেক টাকা নিয়ে চলে আসে। মেয়েটি ডাক দিলেও জাভেদ ফিরেনি। তারপর ওই ৪ জন ওর মুখে কাপড় দিয়ে মুখ বেঁধে দেয়। কথা বলতে বলতে কিশোরীর পিতা ভেঙে পড়েন।
এ ব্যাপারে আহত মাদ্রাসা ছাত্রী সাংবাদিকদের জানায়, জাভেদ (৩০) পরিচিত হওয়ায় দোকানের অনেক খাবার কিনে দেয়। খেতে খেতে সে তার সাথে ঘাটের পাঁশ দিয়ে পাট ক্ষেতের দিকে যায়। “জাভেদ আমাকে ওদের চারজনের কাছে দিয়ে টাকা নিয়ে চলে আসে ,আমি ডাকদিলেও শুনেনি। তারপর ওরা আমার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করে, আমাকে মারধর করে ,আমার হাতমুখ আটকায়ে রাখছিলো। ওরা আমাকে অনেক কষ্ট দিছে ,তারপর অনেক রাতে বাড়ির সামনে দিয়ে যায়”।
অভিযুক্তরা হলেন চঞ্চল খালাসি (২৫) পিতা মন্টু খালাসি, সঞ্জিত খালাসি (২৫) পিতা-অভি খালাসি, পান্নু মোল্লা (৪০) পিতা জুদু মোল্লা, ও কুদ্দুস (৪০) পিতা দ্বিরাজউদ্দিন। এরা সবাই উক্ত ইউনিয়নের খালাসি ডাংগি গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় উক্ত ঘাটে নৌকা ও সি বোড চালক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেয়েটি খালাসি ডাংগি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করত। নিয়মিত স্কুলে না যাওয়ায় ওর বাবা ওকে ছয়মাস পূর্বে পার্শ্ববর্তী মাদ্রসায় ভর্তি করে।
এ ব্যাপারে চরভদ্রাসন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাম প্রসাদ ভক্তের সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি জানান, ঘটনার কথা আমি শুনেছি তবে আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি।
অভিযোগের ব্যাপারে কিশোরীর আত্মীয় নাজমুল হক নান্নু জানান, মামলার সকল প্রস্তুতি শেষে আমরা আজকে অভিযোগ করতে যাব। একুশে মিডিয়া।’
No comments:
Post a Comment