একুশে মিডিয়া ডেস্ক:
ম্যাচ ফিটনেস পরখ করে দেখার তাগিদ আছে। ম্যাচ অনুশীলন করানোর তাড়না আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ওয়ানডে সিরিজের আগে তাই বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে একটি চারদিনের ম্যাচে মুস্তাফিজুর রহমানকে পাঠায় জাতীয় নির্বাচকেরা।
আইপিএল থেকে নিয়ে ফেরা পায়ের অগ্রভাগের চোটে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলতে পারেননি কাটার মাস্টার। হয়তো ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট সিরিজেও বাইরে থাকতে হতে পারে। আর তাই বাঁহাতি এ পেঁসারের ফিট হওয়ার জন্যই এই পন্থা অবলম্বন করেছেন নির্বাচকেরা। তাদের এই আশা বিফলে যেতে দেননি মুস্তাফিজুর। মাঠে নেমেই জানান দিয়েছেন তিনি ফুরিয়ে যাননি।
তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ চারদিনের ম্যাচের প্রথম দিন শেষে স্বাগতিক বাংলাদেশ ‘এ’ দলের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৮৯ রানে পিছিয়ে আছে সফরকারী শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দল।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে করা ১৬৭ রানের জবাবে দিন শেষে তাদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৭৮ রান। বল হাতে তিন উইকেট নেওয়ার পর ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নেমে অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৫৩ রানে অপরাজিত আছেন শেনান জয়াসুরিয়া তার সঙ্গে অপর অপরাজিত ব্যাটসম্যান আসালঙ্কা। যার সংগ্রহ প্রথম ইনিংসে ৭ রান।
বাংলাদেশের ইনিংসের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই সৌম্য সরকারের বলে লেগ-বিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরেন সামারারিকরামা। ৫ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর দলীয় ৩২ রানে নাঈম হাসান লঙ্কান ইনিংসে আঘাত হানেন দ্বিতীয়বারের মতো। এবার তার জালে পা দিয়ে শিকার হন আগের দুই ম্যাচে তাণ্ডব চালানো থিরিমান্নে। মাত্র ১২ রানে তার ফেরার পর ক্রিজে আসা প্রিয়ঞ্জনও ব্যর্থ হন নিজেকে মেলে ধরতে।
চোট কাটিয়ে লম্বা সময় পর মাঠে ফেরা মুস্তাফিজুর রহমানের প্রথম শিকারে পরিণত হয়ে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন তিনি। ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসলেও কোণঠাসা না হয়ে এরপর লড়ে যান জয়াসুরিয়া ও আসালঙ্কা। দলের বিপর্যয় আর বাড়তে না দিয়ে স্কোরবোর্ডে ৭৮ রান জমা করে দুজনে মিলে শেষ করেন দিনের খেলা।
এর আগে, টস জিতে অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনের আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্তের পর ক্রিজে এসে শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। দলীয় ১৪ রানের সময় ব্যক্তিগত ৯ রানে আউট হন ওপেনার সাদমান ইসলাম। এরপর দলীয় ৩৭ রানে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে ২ চারে মাত্র ১৪ রান করে সাজঘরে ফিরেন সৌম্য সরকারও।
বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যানকে সরাসরি বোল্ড আউট করে স্বাগতিকদের প্রথম ইনিংসে চাপে ফেলেছেন লঙ্কান বোলার পুষ্পাকুমারা। চাপ থেকে বের হওয়ার আগে মাত্র ৫ বলের ব্যবধানে ১৪ রান করা মিজানুর রহমান জয়াসুরিয়ার ফাঁদে পড়লে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।
৩৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশকে এরপর লড়াইয়ের স্বপ্ন দেখান সাইফ-জাকির জুটি। দলীয় স্কোরবোর্ডে আরও ১১ রান যোগ করে লাঞ্চ বিরতিতে যান তারা। বিরতি থেকে ফিরে প্রতিরোধ গড়ার সম্ভাবনা জাগালেও আবারও বাংলাদেশের ইনিংসে ছন্দপতন ঘটান জয়াসুরিয়া। তার বলে দলীয় ৭২ রানে থিরিমান্নের হাতে সাইফ তালুবন্দী হলে বিচ্ছিন্ন হয় দু’জনের মধ্যকার ৪৫ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি।
এরপর ক্রিজে জাকিরের সাথে যোগ দেন অধিনায়ক মিঠুন। তবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনিও। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে জাকিরের সাথে আফিফ ২০ রান যোগ করে প্রতিরোধ গড়ার ইঙ্গিত দিলেও তা আর হয়ে ওঠেনি। পুষ্পকুমারার বলে বোল্ড হয়ে ১২ রান করা আফিফ সাজঘরে ফিরলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এই চাপ সামাল দিতে ব্যর্থ হন এখন পর্যন্ত টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা জাকির হাসান। ব্যক্তিগত ৪২ রানে তিনি ফাঁদে পা দেন জয়াসুরিয়ার।
এর ফলে ১০৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে স্বল্প রানে অল-আউট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা জাগে টাইগারদের। এরপর শেষ দিকে সানজামুল ও নাঈমের মধ্যকার ইনিংসের সর্বোচ্চ ৫৪ রানের জুটিতে চড়ে ১৬৭ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করতে সক্ষম হয় স্বাগতিক বাংলাদেশ ‘এ’ দল।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪২ রান এসেছে জাকির হাসানের ব্যাট থেকে। তাছাড়া সানজামুল ইসলাম করেছেন ৪১ রান। প্রতিপক্ষ শিবিরের বোলারদের মধ্যে ৩টি করে উইকেট লাভ করেন পুষ্পাকুমারা, জয়াসুরিয়া ও প্রতাপ।
সংক্ষিপ্ত স্কোরবোর্ড
বাংলাদেশ ‘এ’ দল: ১৬৭/১০ (প্রথম ইনিংস)
(সাদমান ৯, সৌম্য ১৪, মিজানুর ১৪, সাইফ ৭, জাকির ৪২, মিঠুন ৩, আফিফ ১২, সানজামুল ৪১*, নাঈম ২২, মুস্তাফিজ ০, খালেদ ১)
শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দল: ৭৮/৩ (সাদিরা ৫, জয়াসুরিয়া ৫৩*, থিরিমান্নে ১২, প্রিয়ঞ্জন ০, আসালঙ্কা ৭*; সৌম্য ৩-২-৪-১, মুস্তাফিজ ৪.৪-০-২০-১, নাঈম ৫-০-২৬-১) একুশে মিডিয়া।
No comments:
Post a Comment