একুশে মিডিয়া, কক্সবাজার রিপোর্ট:
প্রায় সাড়ে এগার লক্ষ রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জনপদের নাম উখিয়া। রোহিঙ্গাদের কারণে উখিয়া এখন বিশ্বের কাছে একটি পরিচিত নাম। উখিয়াবাসির সরলতা ও আন্তরিকতা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। বারো লাখ রোহিঙ্গাদের কারণে উখিয়ায় নিত্যপণ্যের চাহিদা ব্যাপক। এখানে সরকারি-বেসরকারি এবং এনজিওদের কাজে মানুষের ভিড় সবখানেই।
পালংখালী, থাইংখালী, বালুখালী ও কুতুপালং বাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন হওয়ায় সেখানে নিত্যপণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গরুর মাংস, মুরগি ও সবজির দাম বেড়ে গেছে। বাজার ভেদে গরুর মাংসের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। আর দেশি মুরগির দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ১০০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০ টাকা। গত কয়েক মাসের মতো ৫০ থেকে ৬০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো সবজি।
উখিয়া সদর দারোগা বাজার, কোটবাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দুই মাসের বেশি সময় ধরে বেগুন, পটল, ঝিঙা, করলা, বরবটি ঢেড়স ৬০ টাকার নিচে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রমজানে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশ মোতাবেক ৪৫০ টাকা দরে মাংস বিক্রি করলেও এখন তা পারছেন না।
বর্তমানে প্রতি কেজি (হাঁড়সহ) ৫০০ ও (হাঁড়ছাড়া) ৬০০ টাকায় বিক্রি করছেন। সাদা ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। লাল ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি দরে। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা দরে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে।
দারোগা বাজারের গরু মাংস বিক্রেতা মুসলেম উদ্দিন বলেন, সামনে কোরবানের ঈদ তাই আজ মাংসের দাম একটু বেশি। এখন গরুর দাম বেশি। কোরবানের পর গরুর দাম কমে যাবে তখন আবার দাম কমে যাবে। মূলত কোরবানের কারণে দাম একটু বেড়েছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন বাজারগুলোতে ৫৫০ টাকা কেজি দরে গরু মাংস বিক্রেতা হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা যে গরু জবাই করেছি, বড় ষাড় গরু। এই গরুর মাংস অনেক ভালো তাই একটু দাম বেশি রাখছি। যারা বাচ্চা গরু জবাই করেছে তাদের কাছে ৫০০ টাকা কেজিতে মাংস পাওয়া যাবে।
উখিয়া সদর দারোগা বাজারের সবজি বিক্রেতা শাহনেওয়াজ বলেন, গত ১৫ দিন আগেও যে ঢেড়স ৫০ টাকায় বিক্রি করেছি সেই ঢেড়স এখন ৮০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। রমজানেও সবজির দাম অনেকটা স্থিতিশীল ছিল। চাহিদার তুলনায় সবজি বাজারে কম আসায় এবং বৃষ্টির কারণে সবজির দাম বেড়েছে।
ব্রয়লার মুরগি বিক্রেতা ফয়সাল বলেন, যেখানে দেশি মুরগি ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে সেখানে ব্রয়লার মুরগির দাম ততটাই বাড়েনি। সাদা মুরগি ১৮০ টাকায় এখন বিক্রি করছি এটা দাম বেড়ে ২০০ টাকায় হবে। এখানে এই মুরগির চাহিদা বেশি।
দেশি মুরগি বিক্রেতা শামসুল আলম বলেন, দেশি মুরগি যারা কিনেন তারা ব্রয়লার মুরগি খায় না। দেশি মুরগি ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকায় বিক্রি করছি। এই মুরগির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। চাহিদা থাকলে দাম একটু বাড়ে।
শ্রমিক দল নেতা শফি সওদাগর বলেন, রোহিঙ্গা আসার কারণে পরিবেশ ধ্বংস, সামাজিক অবক্ষয় ও যাতায়াত ও নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় খেটে খাওয়া মানুষের সীমাহীন কষ্ট হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এনজিওরা পাহাড় কেটে বন উজাড় করে পরিবেশের মারাত্নক ক্ষতি করেছে। এনজিওতে চাকরিরত মহিলারা অধিকাংশই ঢাকা, রংপুর, দিনাজপুর উত্তরবঙ্গসহ দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে এখানে এসেছে, তাদের একেক জনের চাল-চলন একক রকম। মেয়েরা ছেলেদের মতো সার্ট-প্যান্ট পরে বেপরোয়াভাবে চলা-ফেরা করে। আমাদের এখানকার মেয়েরা ঘর থেকে বের হলেই বোরকা পরে বের হতো। এখন তাদের দেখাদেখি এনজিওতে চাকরি করার সুবাধে তাদের মতো বেপরোয়া হয়ে গেছে। যা সামাজিক অবক্ষয়। একুশে মিডিয়া।’
No comments:
Post a Comment