অপরাধ
একুশে মিডিয়াম চট্টগ্রাম রিপোর্ট:
নিজের কম্পিউটারে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ৩৯ জন গ্রাহকের ২ কোটি ১৪ লাখ ১৫ হাজার ৫২৩ টাকা আত্মসাত করেছেন রাষ্ট্রায়ত্ত কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের দুই কর্মকর্তা। এছাড়াও একটি পেমেন্ট অর্ডারের বিপরীতে আরো ৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তারা।
ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখার এক্সিকিউটিভ অফিসার মঈন উদ্দিন আহমেদ এবং অফিসার (ক্যাশ) মনিরুল ইসলামের নামে চট্টগ্রামের কোতয়ালি থানায় সোমবার (২৩ জুলাই) মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অন্যদিকে ওই দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন ‘একুশে মিডিয়া’কে জানান, দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ফানাফিল্যা দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৮, ৪৭৭ (এ) এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মঈন উদ্দিন আহমেদের বাড়ি চট্টগ্রামের দামপাড়া এলাকায়। তার বাবা মৃত মকবুল আহমেদ। মনিরুল ইসলামের বাবা মৃত এম এ মান্নান।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১১ সালের ১১ জুলাই মঈন উদ্দিন আহমেদ কমার্স ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখায় এক্সিকিউটিভ অফিসার বা ওই শাখার দ্বিতীয় শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন।
মঈন উদ্দিন আহমেদের পাসওয়ার্ডে ওই ব্যাংকের লেনদেন হতো।
এই সুযোগে দুই কর্মকর্তা এক হিসাবের টাকা আরেক হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে ৩৯ জন গ্রাহকের ২ কোটি ১৪ লাখ ১৫ হাজার ৫২৩ টাকা সরিয়ে নেন। এছাড়া একটি পেমেন্ট অর্ডারের (নম্বর-০১৫৫২৭৪) বিপরীতে আরো ৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে সেটা রেজিস্ট্রারে জমা না দেখিয়ে দুই কর্মকর্তা মিলে আত্মসাৎ করেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৪ সালের ১ জুন থেকে ২০১৫ সালের ১ জুন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এই দুর্নীতির ঘটনা ঘটে। ২০১৫ সালের ৩০ মার্চ কয়েকজন গ্রাহক টাকা উত্তোলন করতে গেলে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। তখন গ্রাহকরা ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ করেছিলেন। এরপর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও দুদক তদন্তে নামে।
এজাহারে উল্লিখিত কমার্স ব্যাংকের বিশেষ তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঈন উদ্দিন আহমেদ নিজের কম্পিউটার আইডি (০২৩০০২) ব্যবহার করে অনুমোদন ছাড়াই গ্রাহকের টাকা স্থানান্তর করেন, যার ভাউচারের অথরাইজড স্বাক্ষরের স্থলে মঈন উদ্দিনের স্বাক্ষর আছে।
বিধি বর্হিভূত এই অর্থ স্থানান্তর প্রক্রিয়ার জন্য মঈন উদ্দিন আহমেদ এককভাবে দায়ী বলে ব্যাংকের বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে মনিরুল ইসলাম নগদ টাকা জমা এবং উত্তোলনের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি না করে গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করেন। এছাড়া নগদ টাকা গ্রাহকের কাছ থেকে গ্রহণ করা হলেও রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি না দিয়ে পে-অর্ডার ইস্যুতে সহায়তা করেন।
দুই কর্মকর্তা ব্যাংকের সুনাম ক্ষুণ্নের জন্য দায়ী বলেও ব্যাংকের বিশেষ তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়। এই তদন্তের ভিত্তিতে দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়।
গ্রাহকদের এসব টাকা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছে বলে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে। একুশে মিডিয়া।
No comments:
Post a Comment