একুশে মিডিয়া, চট্টগ্রাম, ১৮ জুলাই ২০১৮ ইং এএম রিপোর্ট:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় লণ্ডভণ্ড করে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে ছাত্রলীগ।
দুই শিক্ষক হলেন, সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম ও আলী আর রাজী। এ দুই শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করার দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপিও প্রদান করেন তারা।
মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপুসহ ছাত্রলীগের নেতারা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি জমা দেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে কটূক্তি করেছেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে দেশব্যাপী জামায়াত-শিবির ও বিএনপির যৌথ নীল নকশার অংশ হিসেবে শিক্ষক নামধারী জামায়াত-শিবিরের তাবেদার মাইদুল ইসলাম ফেসবুকে উস্কানিমূলক স্ট্যাটাস দিয়ে যাচ্ছেন। চবি শিক্ষার্থী কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে জামায়াত-বিএনপির নাশকতার চেষ্টাকে প্রতিহত করে আসলেও মাইদুল ইসলাম ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষার্থীদের উসকিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছেন।
মাইদুলের এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ হিসেবে ছাত্রলীগ সমাজতত্ত্ব বিভাগের সভাপতির কাছেও প্রতিবাদ জানিয়েছে। শিক্ষক মাইদুল বিগত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সময়ে বিশেষ যোগ্যতা কমিয়ে দেয়া বিশেষ সার্কুলারের অধীনে নিয়োগ পান। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক জননেত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তি করে যদি ফেসবুকে পোস্ট দেয় তা ছাত্রসমাজ মেনে নিতে পারে না।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, শিক্ষক মাইদুলের পাশাপাশি যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আলী আর রাজী তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। যে পোস্টে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়কে সুকৌশলে সহিংসতার মাধ্যমে লণ্ডভণ্ড করে দেয়ার উসকানি দিয়েছেন। আমরা জানি, এই শিক্ষক আলী আর রাজী বিশ্ববিদ্যালয় যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক ছাত্রীকে (বর্তমানে ওই বিভাগের শিক্ষক) প্রশ্নপত্র ফাঁস করার দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চার বছর বহিষ্কার হয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডির নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি থাকাকালে লাখ লাখ টাকার কোনো হিসাব তিনি প্রদান করেননি। শিক্ষার্থীদের উপর মাত্রাতিরিক্ত নির্যাতন করায় বিভাগের শিক্ষার্থীরা তার কক্ষে মলমূত্র নিক্ষেপ করে প্রতিবাদ জানাতে বাধ্য হয়েছিলেন।
শুধু তাই নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন তিনি বাম ছাত্র সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে নিয়মিত বিষোদ্গার করতেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। বর্তমানে তিনি সরকার পতনে জামায়াত-বিএনপি যে নীল নকশা এঁকেছে, সে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের মূল এজেন্ডা হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। তিনি ছাত্রদের তার কক্ষে ডেকে নিয়ে নিয়মিত সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক দিক নির্দেশনা প্রদান করছেন। শুধু তাই নয়, বিভাগের সভাপতি থাকাকালে প্রগতিশীল ছাত্রদের শিক্ষাজীবন নষ্ট করলেও শিবির নেতাদের এটেন্ডেন্স না থাকার পরও তিনি অনৈতিক সুবিধা দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান করেছেন। তিনি সুকৌশলে ছাত্রীদের সাথে একটি সুসম্পর্ক গড়ে তুলে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছেন বলে বিভিন্ন ছাত্রীরা অভিযোগ করে আসছেন। অবাক করা বিষয় হল, তিনি দীর্ঘ ১৮-২০ বছর ধরে শিক্ষকতা করলেও এখনো সহকারী অধ্যাপক হিসেবেই আছেন। অথচ তার ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করে বর্তমানে পদোন্নতি পেয়ে সহযোগী অধ্যাপক হয়েছেন। সম্প্রতি তিনি প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেওয়া জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন, কিন্তু একটি গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের প্রেক্ষিতে তার জামায়াত-শিবির কানেকশনের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় সে পদে তিনি আর যোগ দিতে পারেননি।
স্মারকলিপিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তি, আওয়ামী লীগ সরকার ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করে তোলার টেন্ডারপ্রাপ্ত এ দুই শিক্ষককে ১৯৭৩ অ্যাক্টে দেয়া উপাচার্যের বিশেষ ক্ষমতা বলে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানানো হয়। এতে তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানানো হয়।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তি করার পরও যদি এ দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্পণ্য করা হয় তাহলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মীরা হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে। আজ থেকে এ দুই শিক্ষককে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আমরা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি। একুশে মিডিয়া।’
মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপুসহ ছাত্রলীগের নেতারা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি জমা দেন।
No comments:
Post a Comment