একুশে মিডিয়া ডেক্স:
সব দলের অংশ গ্রহণের মধ্য দিয়ে নির্বাচন হতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান। বলেছেন, ‘সরকার যদি বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মত নির্বাচন করার চেষ্টা করে তাহলে জনগণ সেটা মেনে নেবে না। বাংলাদেশে সেই নির্বাচনও জনগণ হতে দেবে না। অতএব, দলের চেয়ারপারসনকে মুক্তি দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে হবে।’
বিডি২৪লাইভের প্রতিবেদক হাসান আল মাহমুদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, বিএনপির চলমান আন্দোলনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেন।
আপনার দৃষ্টিতে দেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট কেমন?
আমান উল্লাহ আমান:
বাংলাদেশ বর্তমানে একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এ পরিস্থিতিতে বর্তমানে বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। সাংবাদিকদের লেখনির স্বাধীনতা নেই। দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চলছে। এই পরিস্থিতিতে জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের মতামত ব্যক্ত করতে পারছে না। রাজনৈতিক ভাবে এক দলীয় শাসনের মধ্য দিয়ে যেভাবে ১৯৭২ থেকে ৭৫ চলেছিলো। ঠিক তেমনি অঘোষিত ভাবে বাকশাল চলছে। এসব থেকে মুক্তি পেতে হলে। ভোটার বিহীন এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচন দিতে হবে।
চলমান রাজনৈতিক সংকটে বিরোধী দলগুলোর কোনো দুর্বলতা রয়েছে কি না?
আমান উল্লাহ আমান:
সভা সমাবেশ, মিছিল, মিটিং এগুলো রাজনৈতিক দলের মৌলিক অধিকার, কিন্তু এগুলো করতে গেলেই সরকারের প্রশাসন র্নিবিঘ্নে গুলি চালায়। তবুও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে দেশের সব বিরোধী দল চেষ্টা করছে। তবে সেভাবে না।
আজকে মাদক ও সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণের নামে, বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে ধরে নিয়ে ক্রসফায়ার দিচ্ছে, গ্রেফতার করছে, জেলে পুরে নির্যাতন করছে। এসব বিষয়ে বিরোধীদল গুলোর যে ভুমিকা রাখা দরকার ছিলো সেটা তারা রাখতে পারেনি। দেশে এভাবেই অগণতান্ত্রিক সরকার চেপে বসেছে। এভাবে চলতে পারে না। এজন্য আমাদের জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন।
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসা বিষয়ে বিএনপির অবস্থান কি?
আমান উল্লাহ আমান:
বেগম জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। অথচ সাজানো মামলা দিয়ে তাকে জেলে রাখা হয়েছে। আর এটা ভোটারবিহীন সরকারের পক্ষেই সম্ভব। দেশের সরকার প্রধানের প্রতিহিংসা আর আক্রশের শিকার বেগম খালেদা জিয়া। আদালত নিরপেক্ষ হলে তাকে কখনও এ সাজা দেওয়া হতো না। শুধু সাজা দিয়েই তার ক্ষান্ত হয়নি, কারাগারে একজন বন্দির নুন্যতম যে অধিকার সেটা থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য যে ব্যবস্থা করা দরকার সেটার বিন্দু পরিমাণও তারা করেনি।
বেগম খালেদা জিয়া আগে থেকেই তার স্বাস্থ্যের চিকিৎসা করান বেসরকারী হাসপাতাল ইউনাইটেডে। কিন্তু সরকার সেখানে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে বঙ্গবন্ধু (পিজি) হাসাপাতাল, সিএমএইচ এর প্রস্তাব দিচ্ছে। এটা আসলে চিকিৎসা না করানোর বাহানা।
শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম জিয়ার মুক্তি কি সম্ভব?
আমান উল্লাহ আমান:
শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের দাবি গুলো জানাচ্ছি। কারণ, আমরা শান্তি চাই। আমরা শান্তির পক্ষে। কিন্তু বর্তমান সরকার বিভিন্নভাবে অশান্তির চেষ্টা করছে। শান্তি প্রিয় আন্দোলনের মধ্যেও বিনা ওয়ারন্টে অনেক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছে। এমনকি বিএনপি মহাসচিবের বুকের মধ্যে থেকে নেতাকর্মীদের ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।
এভাবে নির্যাতন করে দমনের পথ বেছে নিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। তবুও আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাব। আর এর মাধ্যমেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো। তাকে মুক্ত করার মধ্য দিয়ে দেশে একটা নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। সেই সরকারের অধিনে নির্বাচন হবে। এবং জনগণ তাদের পছন্দ মত ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচিত করবে।
কৌশলগত ভাবে বেগম জিয়াকে বন্দি রেখে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হলে বিএনপি সেখানে অংশ নেবে কি?
আমান উল্লাহ আমান:
আমাদের প্রথম কথা হলো বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। এর সঙ্গে নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে জাতীয় নির্বাচনের আন্দোলন অব্যাহত ভাবে চলবে।
সরকার ২০১৪ সালে দেশের ৪০ দলের মধ্যে ২৮টি দল বাদ রেখে ১২টি দলকে নিয়ে নির্বাচন করেছে। সেই নির্বাচন আর বাংলাদেশের মাটিতে হতে দেয়া হবে না। সকল দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে নির্বাচন হতে হবে। তখন দেশ ও আন্তর্জাতিক ভাবে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে। অন্যথায় দেশে কোনো নির্বাচনই হবে না।
No comments:
Post a Comment