একুশে মিডিয়া, রাজশাহী রিপোর্ট:
আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩০ তারিখের আগে কোনো নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হলে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মেয়র পদে বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।
বলেছেন, ‘নির্বাচনে কোন অনিয়ম করার চেষ্টা করলে আমরাও ভোট কেন্দ্র দখল করবো। আর নির্বাচন কমিশনকেও সেদিন কৈফিয়ত দিতে হবে। নির্বাচন বাদ দিয়ে সেদিন ঘেরাও কর্মসূচি হবে।
সোমবার রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলে আশঙ্কা করছে বিএনপি। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর পর আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও করে আসছে দলটি।
রবিবার (২৯ জুলাই) দুপুরেও রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয় বিএনপি। এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রার্থী বুলবুল। বিএনপির প্রার্থী বলেন, ‘আমরা সবার কাছে অনুরোধ করছি, রাজশাহীর ঐতিহ্য লঙ্ঘন না করে ধৈর্যের সাথে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। এছাড়াও আমাদের আন্দোলন আগামীকাল অব্যাহত থাকবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আগামীকাল আমরা কাফনের কাপড় মাথায় দিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবো।’ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বুলবুল বলেন, ‘আজকে নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ প্রশাসন আওয়ামী লীগের একটি অঙ্গ সংগঠন। বর্তমানের ডিবি পুলিশদের দেখে মনে হচ্ছে, তারা পুলিশ সদস্য নয় এমনকি রাষ্ট্রের কর্মচারিও নয়। তারা আওয়ামী লীগের দালালি করতে এখানে এসেছে।
ডিবি পুলিশের কর্মকর্তারা আমাদের মহিলা কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছে। ১০, ১৮, ১৯ এবং ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির নেতাকর্মীদেরও হুমকি দিয়েছে। তাদের স্পর্ধা দেখে অবাক হই! তারা কোন সাহসে আমাদের নেতাকর্মীদের হুমকি দেয়?’ তিনি বলেন, ‘আগামী ৩০ তারিখের আগে যদি বিএনপি বা জোটের কোনো নেতাকর্মীকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়, তাহলে আমরা ২০ দলীয় ঐক্যজোট সে থানায় যাব; দরকার পড়লে থানা ঘেরাও করা হবে।
ঢাকা থেকে সিল মেরে ব্যালেট পেপার রাজশাহীতে আনা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে বুলবুল বলেন, ‘তিন লাখ ১৮ হাজারের বেশি ব্যালেট যদি এখনে পাওয়া যায় তবে নির্বাচন অফিসের ইট থাকবে কি না আমরা বলতে পারবো না। নির্বাচন কমিশনের যদি লজ্জা থাকে, তবে পুলিশ প্রশাসনকে তারা যেন নিয়ন্ত্রণে নেয়।’ বুলবুল বলেন, ‘আমরা দেখছি, রাজশাহীতে ১০টি কালো মাইক্রোবাস ঘুরছে। যারা খুলনা ও গাজীপুরে ভোট ডাকাতির মূল হোতা ছিল। তারা এখানে আবার আসছে, খালেক সাহেবের (খুলনার মেয়র) ও জাহাঙ্গীরের (গাজীপুরের) নির্দেশে। সে কারণে বলতে চাই, এই কালো গাড়িগুলো এখনই ধরা উচিত বা শহর থেকে বিদায় করা উচিত।
রাজশাহীর ভোটে যদি নিরবছিন্ন অবস্থান তৈরি না হয়, তাহলে রাজশাহীতে ২০ দলীয় ঐক্যজোটের যে ভূমিকা থাকবে, সেটি কিন্তু অকল্পনীয়।’ তিনি বলেন, ‘তাই এটুকু বলতে চাই, রাজশাহীর পরিবেশ শান্ত ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ রাখার জন্য আমরা সেনা বাহিনী নিয়োগ চেয়েছি। এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন কোন উত্তর দেয়নি।
এখনকার শান্তি প্রিয় মানুষরা ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছে। রাজশাহীর পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার স্বার্থে এখনো সেনাবাহিনী নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
কারণ তিনি যেন রাজশাহীর নির্বাচন দিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একটি মডেল তৈরি করতে পারেন।’ বুলবুল অভিযোগ করেন, ‘আজ পর্যন্ত আচরণবিধি লঙ্ঘনের যেসব অভিযোগ আমরা দিয়েছি তার একটিও মান্য করা হয়নি। আমরা সব নির্যাতন-জুলুম সহ্য করে এখন পর্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে নির্বাচনে আছি।
কিন্তু সবকিছুর সীমা থাকে। প্রশাসন-পুলিশ যেভাবে আওয়ামী লীগের মতো কাজ করছে, তাতে নির্বাচন পরিস্থিতি সুষ্ঠু নয়। পুলিশ আমাদের নির্যাতন করছে।’ ‘আমার ২৩-২৪ জন পোলিং এজেন্টকে খুঁজে পাচ্ছি না। অন্যদেরও নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আমাদের জেলা বিএনপির সাবেক নেতা দেলওয়ারকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে পুলিশ। তাই আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিলাম।
আমরা আমাদের পোলিং এজেন্টদের নিরাপত্তা চাইলাম, মুক্তি চাইলাম।’ ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও জেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এই অভিযোগ দাখিল করেন।
এ সময় মেয়র প্রার্থী বুলবুল ছাড়াও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। একুশে মিডিয়া।”
No comments:
Post a Comment