ফাইল ফটো |
ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন ও অপ্রাপ্তবয়স্ক গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিআরটিএ এবং ডিএমপিকে নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বিআরটিএ ও বিআরটিসিসহ সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
গত রোববার বিমানবন্দর সড়কে দুইজন শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নেওয়া আইনানুগ ব্যবস্থার অগ্রগতি সম্পর্কেও সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়।
রোববার বিমানবন্দর সড়কে দুই বাসের পাল্টাপাল্টিতে একটি বাস কয়েকজন শিক্ষার্থীকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। আহত হয় আরও কয়েকজন। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে আসে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে আজও রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা নৌপরিবহনমন্ত্রীর পদত্যাগ ও ঘাতক বাস চালকের বিচারের দাবিসহ নয় দফা দাবি উত্থাপন করে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা কয়েকটি জায়গায় বাসে আগুন ও ভাঙচুর করেছে।
শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ১. বেপোরোয়া ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই শাস্তি সংবিধানে সংযোজন করতে হবে। ২. নৌপরিবহনমন্ত্রীর গতকালের বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। ৩. শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে হবে। ৪. প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাতে স্পিড ব্রেকার দিতে হবে। ৫. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। ৬. শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে, থামিয়ে তাদের বাসে তুলতে হবে। ৭. শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ৮. ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবে না। ৯. বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না।
দুপুরে ঘাতক চালকের বিচারের দাবিতে সায়েন্সল্যাব মোড়ে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে ঢাকা কলেজ ও আশপাশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা হিমাচল পরিবহনের একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় ছাত্র ও পুলিশের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়।
এছাড়া উত্তরায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। এসময় বুশরা পরিবহন ও এনা পরিবহনের একটি বাসে আগুন লাগিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।
এদিকে মতিঝিল শাপলা চত্বরে অবরোধ করে বিক্ষোভ করে নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা, ফামর্গেটে সড়ক অবরোধ করে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ও মিরপুর ১০ এ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে আশপাশের শিক্ষার্থীরা।
মিরপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয় পুলিশের সঙ্গে। এসময় লাঠিচার্জে কয়েকজন আহত হয়। পুলিশের লাঠিচার্জে মাথায় আঘাত পেয়ে রক্তাক্ত হয় মিরপুর শহিদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের এক শিক্ষার্থী। এছাড়া আরও দুইজন গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের মিরপুর গ্যালাক্সি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে রমিজ উদ্দিন কলেজ ও আশপাশের শিক্ষার্থীরা। পুলিশ সেখানে অবস্থান নিয়ে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তাদের বুঝিয়ে রাস্তার পাশে সরিয়ে নেয়া হয়। পরে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। একুশে মিডিয়া।’
No comments:
Post a Comment