রাজশাহী সিটি নির্বাচনে পুবুলবুলের নির্বাচনী কার্যালয় সব বন্ধ!-একুশে মিডিয়া - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Saturday, 28 July 2018

রাজশাহী সিটি নির্বাচনে পুবুলবুলের নির্বাচনী কার্যালয় সব বন্ধ!-একুশে মিডিয়া

একুশে মিডিয়া, রাজশাহী রিপোর্ট:

রাজশাহীতে মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সব নির্বাচনী কার্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে। পুলিশের ভয়ে দলটির নেতাকর্মীরা নির্বাচনী কার্যালয়ে বসতে পারছে না তিন-চার দিন ধরে। রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হওয়ার পর নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে নির্বাচনী ক্যাম্প বা কার্যালয় স্থাপন করেছিল বিএনপি। মূলত মেয়র পদে নির্বাচন ঘিরেই তখন উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল ওই সব নির্বাচনী কার্যালয়ে। পরে কর্মীশূন্য হতে হতে একপর্যায়ে বন্ধ হয়ে পড়েছে সেগুলো।

গতকাল শুক্রবার রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বুলবুলের সব নির্বাচনী কার্যালয় বন্ধ দেখা গেছে। নগরীর মালোপাড়ায় বিএনপির মহানগর কার্যালয় থেকেই চলছে বুলবুলের নির্বাচনী কার্যক্রম। জানা যায়, ওই অফিসেও সব সময় থাকে না দলটির নেতাকর্মীরা।
মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলসহ দলের কেন্দ্রীয় ও নগর নেতারা যখন সেখানে অবস্থান করেন তখনই শুধু জড়ো হয় স্থানীয় অন্য নেতাকর্মীরা। নেতারা বেরিয়ে গেলে কর্মীরাও চলে যায়। তাদের সবার মধ্যেই বিরাজ করছে গ্রেপ্তার আতঙ্ক।  
আগামী ৩০ জুলাই রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। এতে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলসহ পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন। শিক্ষা নগরী খ্যাত রাজশাহীর ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব কার হাতে যাবে, তা নির্ধারিত হবে ভোটে। কিন্তু রাজশাহীর বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ভোটের ফল যাই হোক, এখন তারা সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারছে না। তাদের মতে, ধানের শীষের নাম উচ্চারণ করলেই পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তাই প্রকাশ্যে প্রচার চালাতে সাহস করছে না তারা। বিএনপির দাবি, এ পর্যন্ত দলটির ৮৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 
বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পুলিশের কারণে আমাদের নেতাকর্মীরা নির্বাচনী ক্যাম্পগুলোতে যেতে পারছে না। পুলিশ সরাসরি বাসায় গিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দিচ্ছে। এ ছাড়া রাতে পুলিশের সহায়তায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা এসে পোস্টার ছিঁড়ে দিয়ে যায়। আওয়ামী লীগের ১০ থেকে ৪০ জন পর্যন্ত কর্মী মোটরসাইকেলে এসে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। তাই ভয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা নির্বাচনী কার্যালয়ে যাচ্ছে না।’
নগরীর ৩০ নম্বর এবং বিএনপির সাংগঠনিক ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচনী কার্যালয় গড়ে তোলা হয়েছিল বিনোদপুর বাজারে কৃষি ব্যাংকের পাশে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, ওই কার্যালয়টিতে কোনো লোক নেই। কার্যালয়টিও তালাবদ্ধ। পরে ফোনে কথা হয় ওই ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাজমুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কার্যালয়ে বসব কী করে! পুলিশ যেভাবে এসে অভিযানের নামে নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে আর গ্রেপ্তার করছে, তাতে কার্যালয়ে বসা তো দূরের কথা, ঠিকমতো প্রচারণাও চালাতে পারছি না।’
নগরীর পশ্চিম বুধপাড়া এলাকায় ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বিএনপির সাংগঠনিক ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয়ের সামনে ঝোলানো আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের কয়েকটি ব্যানার-ফেস্টুন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘মনে হচ্ছে যুদ্ধ লেগে গেছে। পুলিশ আর আওয়ামী লীগের লোকজন এসে ভয় দেখাচ্ছে। আমরা তাই আর কার্যালয়ে বসছি না। ওদেরই ছেড়ে দিছি। ওরা কয়েকটা ব্যানার-ফেস্টুন লাগিয়েছে। তাতেও কোনো বাধা দিইনি। আমরা এখন ভোটের দিনের অপেক্ষা করছি। ভোটের মাধ্যমেই ওদের জবাব দেওয়া হবে।’
নগরীর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের দড়িখরবোনা এলাকায় গিয়ে বন্ধ দেখা যায় বিএনপির কার্যালয়। জানা যায়, ওই ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির কার্যালয় ছিল। কিন্তু তিন-চার দিন ধরে বন্ধ হয়ে আছে। বিএনপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সকালে শুধু কার্যালয়টির তালা খুলে দিতাম। কিন্তু আমার নামে মামলা হয়ে যাবে বলে পুলিশের এক এসআই ফোন করে জানায়। এর পর থেকে আর কার্যালয় খুলে দিইনি। বন্ধ হয়ে আছে।’
১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী বলেন, ‘আমাদের একটি নির্বাচনী কার্যালয়ে প্রথমে হামলা করে কয়েকজনকে পিটিয়েছিল আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের লোকজন। পরে ২৬ জুলাই কার্যালয়টি দখল করেও নিয়েছিল। তবে এখন আর দখলে নেই তাদের। কিন্তু আমাদের লোকজন আর ওই কার্যালয়ে বসতে পারছে না।’
রাজশাহী মহানগর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক নাজমুল হক ডিকেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের সাংগঠনিক ৩০টি ওয়ার্ডেই নির্বাচনী কার্যালয় গড়ে তোলা হয়েছিল। কিন্তু এখন কোনো কার্যালয়েই নেতাকর্মীরা বসতে পারছে না। কোথাও কোথাও কার্যালয় দখল পর্যন্ত করে নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এতে ভয়ে আমাদের নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে বসতে পারছে না।’
তবে গ্রেপ্তার ও ভয় দেখানোর অভিযোগ অস্বীকার করে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ইফতে খায়ের আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবেই নগরীতে প্রতিদিন অভিযান চলছে। কাউকে অযথা হয়রানি বা গ্রেপ্তারের বিষয়টি সঠিক নয়। পুরনো মামলার যারা আসামি, শুধু তাদেরই ওই সব মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। নতুন করে মামলা দেওয়ার বিষয়টিও সঠিক নয়। 
আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের নির্বাচনী সমন্বয়ক ডাবলু সরকার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীদের স্বভাব হলো মিথ্যা প্রচারণা চালানো। ওদের পায়ের নিচে মাটি নেই। তারা এখন জনগণবিমুখ। নির্বাচনে ভরাডুবি হবে নিশ্চিত জেনে এখন নানাভাবে অজুহাত খুঁজছে। তারা আমাদের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নানাভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে তাদের অপপ্রচারে রাজশাহীর মানুষ বিরক্ত। এর জবাব তারা ব্যালটের মাধ্যমেই দেবে বিএনপিকে।’
ডাবলু সরকার আরো বলেন, ‘নির্বাচনের কারণে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করছে বলে আমাদের জানা নেই। তবে যারা নাশকতা মামলার আসামি, আগুন-সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, তাদের তো গ্রেপ্তার করবেই। তারা নির্বাচনের মাঠে এসে যদি পরিবেশ বিনষ্ট করার চেষ্টা করে, তাহলে তা করতে দেওয়া হবে না। একুশে মিডিয়া। সূত্র: কলেরকণ্ঠ অনলাইন।

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages