একুশে মিডিয়া ডেস্ক:
সিলেট নগরীকে পরিকল্পিত নগর গড়ার অঙ্গীকার করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী সাত মেয়রপ্রার্থী। বুধবার দুপুরে নগরীর রিকাবিবাজার ইনডোর জিমনেশিয়ামে ‘জনতার মুখোমুখি’ অনুষ্ঠানে তারা এ অঙ্গীকার করেন। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেট জেলা কমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
লটারির মাধ্যমে অনুষ্ঠানে প্রথমেই বক্তব্য দেয়ার সুযোগ পান ইসলামী আন্দোলনের মেয়রপ্রার্থী ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন খান। তিনি দলীয় প্রতীক ‘হাতপাখা’ নিয়ে নির্বাচনে প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা করছেন।
বক্তব্যে তিনি বলেন, মেয়র নির্বাচিত হলে সকালে মসজিদ-মন্দিরে শিশুদের ধর্মীয় বিষয়ে পড়ার ব্যবস্থা করা হবে। শিশু ও নারীদের চিত্তবিনোদনে আলাদা পার্ক করব। যেখানে পুরুষরা প্রবেশ করতে পারবেন না। ভোট আল্লাহর পবিত্র আমানত, তথা সাক্ষ্য দেয়া। আর মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া পাপ। এসব কারণে কাকে দিয়ে নগরবাসীর উপকার হবে জেনে শুনে ভালো প্রার্থীকে ভোট দেয়ার আহ্বান রইল আমার।
এরপর বক্তব্য রাখেন নাগরিক ফোরামের ব্যানারে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী নগর জামায়াতের আমীর অ্যাডভোকেট এহসানুল হক জুবায়ের। তিনি বলেন, দেশ-বিদেশে মানুষের কাছে সম্মানের স্থান সিলেট। আমরা সেই স্থানের বাসিন্দা। আমরা নির্বাচিত হওয়ার পর বা নির্বাচিত না হলেও সিলেটকে দেখতে চাই আকর্ষণীয় সুন্দর, পরিবেশবান্ধব শহর হিসেবে। এ জন্য আদর্শ নীতিবান মানুষের প্রয়োজন। আমরা যে স্বপ্নের শহর দেখতে চাই, এ জন্য সিলেট শহর সম্প্রসারণ করা দরকার। নতুবা কিছু সম্ভব না।
পরে পর্যাক্রমে বক্তব্য রাখে আওয়ামী লীগের বদর উদ্দিন কামরান, সিপিবি-বাসদের আবু জাফর, স্বতন্ত্র প্রার্থী এহসানুল হক তাহের, বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী এবং সবার শেষে বক্তব্য রাখেন বিএনপির বিদ্রোহী বদরুজ্জামান সেলিম।
‘নৌকা’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা আওয়ামী লীগের বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, মেয়র হিসেবে শুধু রাস্তা-কালভার্ট ঠিক করা নয়। নাগরিকদের সকালে ঘর থেকে বের হওয়া ও ঘরে ফেরা পর্যন্ত মেয়রের দায়িত্ব থাকে। রাস্তা-ঘাট ড্রেন নির্মাণ রুটিন ওয়ার্কের অংশ। নাগরিক সমস্যা থাকবে, সমাধানও করতে হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
মই প্রতীকে সিপিবি বাসদ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী আবু জাফর বলেন, সবার জন্য বাসযোগ্য শহর গড়তে আমরা কিছু পরিকল্পনা তুলে ধরতে চাই। সিলেটকে সুন্দর করতে পুনর্বাসনে ফুটপাত হকারমুক্ত করার জন্য দ্রুত কাজ করব। সিসিকের নিজস্ব অর্থায়নে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। মাদকমুক্ত যুব সমাজ গড়তে পাড়ায় পাড়ায় লাইব্রেরি ও খেলার মাঠ করে দেবে।
হরিণ প্রতীকে মেয়র পদে স্বতন্ত্রপ্রার্থী এহছানুল হক তাহের বলেন, স্বপ্ন আমি দেখি না, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করি। সংগঠক হিসেবে মশা নিধনে মশারি মিছিল করি। আমার টার্গেট তরুণদের কাজে লাগিয়ে যেমন সোনার বাংলা গড়া সম্ভব। তেমনি আমি মেয়র হলে সবার মতামতের প্রেক্ষিতে আধুনিক শহর গড়ে তুলব।
ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, বিগত নির্বাচনে জনগণ আমাকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত করেছিলেন। আমি পাঁচ বছরের মধ্যে তিনটি বছর কারাগারে থাকায় মাত্র দুই বছর সেবা দিতে পেরেছি। আমি যা করেছি, তা বাস্তবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এখন আর নগরীতে জলাবদ্ধতা হয় না। এরপরও আমরা পরিকল্পিত নগরায়নে একসঙ্গে কাজ করতে চাই।
বিএনপির বিদ্রোহীপ্রার্থী নাগরিক কমিটির বদরুজ্জামান সেলিম বলেন, বিগত দিনে দুই মেয়র যা করতে পারেননি। মেয়র নির্বাচিত হলে আমি তা করে দেখাব এক বছরে। এই সিলেটকে পরিকল্পিত তিলোত্তমা নগরী হিসেবে গড়ে তুলবো।
সুজন সিলেট জেলা সভাপতি ফারক মাহমুদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকট শাহ শাহেদা আক্তার। একুশে মিডিয়া।
No comments:
Post a Comment