একুশে মিডিয়া, স্বাস্থ্য রিপোর্ট:
কিশোরীর গলা থেকে বের করা হয়েছে ৯টি সুচ। তবে এ নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য কিশোরী নিজে থেকে এতগুলি সুচ খেয়েছে নাকি কেউ জোর করে বাইরে থেকে চামড়ার মধ্যে ফুটো করে ঢুকিয়ে দিয়েছে, নাকি ব্লু হোয়েলের মতো কোনও মারণখেলার নেশায় জড়িয়ে পড়েছিল না এর নেপথ্যে কোনও তন্ত্রসাধনার যোগ রয়েছে কি না তা নিয়ে দ্বিধা দন্দে চিকিৎসকরা।
এ বিষয়ে কিশোরীর অস্ত্রপচারকারী ডাক্তার বলেন, সুচ রোগী নিজে ঢোকাতে পারে অথবা কোনও গুনিনের কারসাজিও হতে পারে। কুসংস্কারের বশে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে গুনিন–নির্ভর চিকিৎসা এখনও চলে। রোগ সারাতে কিছু মন্ত্রপুত সুচ বাইরে থেকে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ঢুকিয়ে দেয়। মনে হচ্ছে ওর ক্ষেত্রে বাইরে থেকে চামড়া ফুটো করে গলায় ঢোকানো হয়েছে।
এদিকে টানা সাড়ে তিন ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের পর কিশোরীর গলা থেকে বের হয় বিঁধে থাকা সুচ। ১০টির মধ্যে ৯টি সুচ বের করেছেন এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের চিকিৎসকেরা। আর একটি সুচ খুঁজতে শনিবার এক্স–রে হবে।
অস্ত্রোপচারের পর আপাতত স্থিতিশীল কৃষ্ণনগরের কিশোরী ১৪ বছরের অপরূপা বিশ্বাস। এখন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে। ইএনটি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ মনোজ মুখার্জির নেতৃত্বে চলে অস্ত্রোপচার।
চিকিৎসক জানিয়েছেন, ‘খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার ছিল। খড়ের গাদায় সুচ খোঁজার মতো অবস্থা ছিল। কারণ সুচগুলি গলার চারদিকে ছড়িয়ে–ছিটিয়েছিল। এখন রোগী ভাল আছে, কথা বলছে। গুনতে অনেক সময় ভুল হয়। কারণ সরাসরি চোখে দেখে নয়, এক্স–রে রিপোর্ট অনুযায়ী গোনা হয়। ফলে একটা–দুটো কম–বেশি মনে হয়। পরে পরীক্ষা করে দেখা হবে, শরীরে আর কোথাও সুচ রয়েছে কি না।
চিকিৎসকেরা আরো জানান, গলার ডানদিক থেকে বাঁদিকে সোজাসুজি ৬ ইঞ্চি কেটে খুব ধীরে ধীরে সুচগুলি বের করা হয়েছে। মোট ৩০টি সেলাই পড়েছে। সুচগুলির সাইজ এক ইঞ্চি থেকে আড়াই ইঞ্চির মধ্যে।
এ বিষয়ে অপরূপার মা অর্পিতা বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘আমার মেয়ে খুব রাগী, পড়াশোনায় অমনোযোগী। তাই বলে এ সব কাজ করবে বলে বিশ্বাস হচ্ছে না। আমার ছেলে চার বছর বয়সে মারা যাওয়ার পর মেয়ে আরও জেদি হয়ে যায়।’ একুশে মিডিয়া।’
No comments:
Post a Comment