একুশে মিডিয়া, মুক্তমত রিপোর্ট:
লেখক: হাফিজ বিন রহমান:
‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, ইউ ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানটি ধর্ম নিরপেক্ষ। সময় নিরপেক্ষ ও অসাম্প্রদায়িক। এই স্লোগানের আবিষ্কর্তা এ দেশের তরুণ-তরুণী, কিশোর- কিশোরী। তারা বয়সে নবীন। আমাদের সন্তান-সন্ততি। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। এদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী। যাদেরকে মনে করা হতো, তথ্য-প্রযুক্তির যুগে অত্যধিক প্রযুক্তি-নির্ভর হয়ে অসামাজিক হয়ে যাচ্ছে। লাশের পাশে সেলফি তোলা, ট্রেন লাইনে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রাণ হারানো, হিংস্র জন্তুর সাথে সেলফি তুলে অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দেয়ার মতো হতভাগ্য এক প্রজন্ম মনে করা হতো তাদেরকে। কিন্তু চালক কর্তৃক ইচ্ছাকৃতভাবে রাজধানীর শহিদ রমিজউদ্দিন কলেজের দুইজন ছাত্র-ছাত্রীকে চাপা দেওয়ায় তাদের মাঝে ক্ষোভ দানা বাঁধলো।
এই মর্মান্তিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর বিষ্ফোরণোম্মুখ প্রতিবাদ ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্কারমূলক কর্মকাণ্ড দেশের আপামর জনসাধারণকে দারুণভাবে নাড়া দিয়ে গেল। ইতোপূর্বেও এদেশে সড়ক দুর্ঘটনার কবলে হাজার হাজার প্রাণ নির্মমভাবে ঝরে গেছে। কখনো কখনো আঞ্চলিকভাবে এসব দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়েছে। কখনো কখনো সমগ্র দেশে একসাথে প্রতিবাদ হয়েছে। কিন্তু এবারের প্রতিবাদ ছিল নজিরবিহীন। রাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য অধিকতর শিক্ষণীয়।
ঘটনার সূত্রপাত:
জাবালে নূর নামক পরিবহনে যাত্রী উঠা-নামা নিয়ে রেষারেষির ফল রাজিব ও দিয়ার প্রাণ বিসর্জন। অনেকের কাছে এটি নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে পরিগণিত হলেও বাস্তবিক পক্ষে এটি আদৌ কোনো দুর্ঘটনা নয়। প্রায়শই লক্ষ্যে করা যায়, বেশিসংখ্যক যাত্রী গাড়িতে তুলে বেশি লাভের প্রত্যাশায় পাবলিক বাসগুলো অসুস্থ প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে। তারা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে নিকটস্থ বাস স্টোপেজে আগে উপস্থিত হওয়ার জন্য পথচারীকে চাপা দেয়।
রিকশা, সিএনজি, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল আরোহীকে হত্যা করে। অনেক সময় রোড আইল্যান্ড ও ফুটপাতে উঠে পড়ে। আবার রাস্তার পাশে লাইট পোস্ট ভেঙে তছনছ করে দেয়। দুই বা ততধিক গাড়ির রেষারেষিতে মাঝখানে চাপা পড়ে নিরীহ নাগরিক নিহত হয়। আবার অনেক সময় এতো বেশি গতিতে প্রতিযোগী বাসকে অতিক্রম করে যে, স্টোপেজেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে অনেক বাস। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ-বিষয়গুলোর জন্য চালকের দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা দায়ী নয়; বরং অন্যের থেকে বেশি লাভবান হওয়ার এ এক ন্যাক্কারজনক মানসিকতা।
রাজিব ও দিয়ার অতি মূল্যবান জীবন এ-কারণেই ঝরে গেল। যার ফলাফল স্বরূপ ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় নেমে এলো। অত্যন্ত বুদ্ধি-বৃত্তিক আন্দোলন করলো তারা। সঠিক দায়িত্ব-জ্ঞান সম্পন্ন ট্রাফিকের মতো ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করলো। সিরিয়ালে গাড়ি চলতে বাধ্য করলো। যাদের লাইসেন্স নাই তাদেরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিলো। এসব ক্ষেত্রে মাননীয় মন্ত্রী, এমপিগণও বাদ গেলেন না। বাদ গেল না মিডিয়ার গাড়িও। অথবা সরকারি-বেসরকারি আমলা-কামলা কেউ-ই।
সারাদেশে এই আন্দোলন একটিই বার্তা দিলো, পরিবহন খাতের এই নৈরাজ্য বন্ধ করতে হবে। সড়ক নিরাপদ করতে হবে। সড়কে স্বেচ্ছাচারী হত্যার মিছিল থামাতে হবে। সড়ক-সন্ত্রাসী পরিবহন শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এমনই এক সংকটময় মুহূর্তে রাজিব ও দিয়ার স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে স্বজন হারানোর বেদনা তাঁকে বোধকরি কাউকে বোঝানোর প্রয়োজন নেই।
আন্দোলনকারীদের নয় দফা দাবি:
আন্দোলনকারী শিশু-কিশোর ছাত্র-ছাত্রীরা সময়ের প্রয়োজনে নয়-দফা দাবি উত্থাপন করে। দাবিগুলো নিম্নরূপ- ১। বেপরোয়া গাড়িচালককে ফাঁসি দিতে হবে এবং এ শাস্তি সংবিধানে সংযোজন করতে হবে। ২। নৌ-পরিবহন মন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। ৩। শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে হবে। ৪। প্রত্যেক সড়কে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিড ব্রেকার দিতে হবে। ৫। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। ৬। শিক্ষার্থীরা বাস থামানো সিগন্যাল দিলে থামিয়ে তাদের বাসে তুলতে হবে। ৭। শুধু ঢাকা নয় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ৮। রাস্তায় ফিটনেসবিহীন এবং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালনা বন্ধ করতে হবে। ৯। বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করলেন, নয় দফা দাবি মেনে নেওয়া হবে এবং তিনি রাজিব ও দিয়ার মাতা-পিতাকে ডেকে প্রত্যেককে বিশ লাখ টাকার সঞ্চয় পত্র অনুদান দেন। এ ছাড়াও শহীদ রমিজউদ্দিন কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য পাঁচটি গাড়ি উপহার দেন। তিনি নৌ-পরিবহন মন্ত্রীকে কেবিনেট মিটিং এ উল্লেখযোগ্য তিরস্কার করেন।
অন্যান্য দাবি বাস্তবায়নে দৃঢ় আশ্বাস প্রদান করেন। এরপরও ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসে ফিরে যায়নি। কারণ হিসেবে আন্দোলনকারীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে এনে বলে, ‘আশ্বাস নয় বাস্তবায়ন চাই’। এটা তাদের দাবি।
কোটা সংস্কার ও সড়ক দুর্ঘটনা:
আমি নিজেও কোটা সংস্কারের পক্ষে। কারণ মেধা ও ভিক্ষা সমতালে চলতে পারে না। কিন্তু কোমলমতি শিশুদের বোঝা দরকার যে, কোটা সংস্কার ও সড়ক দুর্ঘটনা নিরোধ সম্পর্কিত দাবি এক ও অভিন্ন নয়। কোটা সংস্কারের পক্ষ ও বিপক্ষ রয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনায় কার্যত পক্ষ বিপক্ষ নাই। যদি মালিক-শ্রমিককে পক্ষ বা বিপক্ষ ধরা হয় তাহলে, নিহত দিয়ার পিতা কি দিয়ার বিপক্ষ বা প্রতিপক্ষ? কারণ তিনি তো ড্রাইভার। যানবহন শ্রমিক। যাদের গাড়ি সড়কে চলছে, সে গাড়িতে তাদের সন্তান, আত্মীয়-স্বজন চলাফেরা করে। এক ড্রাইভার ভিন্নরুটে অন্য ড্রাইভারের গাড়িতে উঠছে।
যানবহন শ্রমিকদের পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন বিভিন্ন চালকের গাড়িতে চড়ে। সুতরাং এখানে পক্ষ-বিপক্ষ নির্ধারণ করা বড়ই কঠিন। কিন্তু কোটা সংস্কারের আন্দোলন ভিন্ন মাত্রিক। কারণ বিদ্যমান আইন কানুন অনুযায়ী মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সূর্যসন্তানদের সন্তান-সন্ততি ও পরবর্তীকালে নাতি-নাতনিদের চাকরি-বাকরিতে প্রাধিকার সুযোগ প্রদান করা হয়। পৃথিবীর আর কোনো দেশে এটি আছে কি না সন্দেহ। তাই এভাবে নাতি-নাতনি থেকে রক্তের সম্পর্ক বিস্তৃত হতে হতে যখন কোন মুক্তিযোদ্ধার কততম প্রজন্ম নির্ধারণ করা সম্ভব হবে না তখন ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে এসব সুযোগ সুবিধা না দিয়ে বরং সব ধরনের কোটা সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা প্রয়োজন। বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। কমিটি কাজও করছে। কোনো কিছু-তো আগে থেকে নির্ধারণ করা নেই। সুতরাং সময়-তো একটু দিতেই হবে।
এসব বিষয়ের সাথে সড়ক দুর্ঘটনাকে গুলিয়ে-মিলিয়ে ফেলা সমীচীন নয়। তাছাড়াও জেলা কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা এসব না রাখার কোনো বিকল্প নাই। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, কোটা সংস্কারের সাথে দেশের সকল জনগণ একমত নয়।
কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াল ছোবল থেকে বাঁচার ব্যাপারে দেশের সকল নাগরিক একমত। সুতরাং কোটা সংস্কার ও সড়ক দুর্ঘটনা নিরোধ বিষয়ক দাবি এক নয়। মনে রাখতে হবে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা আছে বলেই, নয় দফার সব দাবি তিনি মেনে নিয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ দাবি অনেকাংশে বাস্তবায়ন করেছেন। এমনকি দাবিতে নাই, সেটিও নিজ থেকে করে দেখিয়েছেন। ইতোমধ্যে তিনি রমিজ উদ্দিন কলেজকে পাঁচটি গাড়ি হস্তান্তর করেছেন।
আন্দোলনের শিক্ষা:
অনেকেই বলছেন, এই আন্দোলন অনেক শিক্ষ দিয়ে গেল। ‘নতুন প্রজন্ম গোল্লায় যাচ্ছে’এ ধরনের ধারণা যারা পোষণ করতেন, তারাই বলছেন, না নতুন প্রজন্ম সঠিকভাবে বেড়ে উঠছে।
তারা সঠিকভাবে বিদ্যার্জন করছে। এ-সমাজ এ-রাষ্ট্র নিয়ে তাদের বিদ্যার শেষ নেই। তারা সমাজ সচেতন। দেশ বিদেশের বহু কিছু তারা জেনে ফেলেছে। আইন কানুনের প্রতি তারা শ্রদ্ধাশীল। ভালো ভালো কথা দিয়ে তারা ব্যানার, ফেস্টুন, প্লাকার্ড লিখছে। তবে তাদের মূল শ্লোগান ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, ইউ ওয়ান্ট জাস্টিস’এই শ্লোগানটি সুগভীর অর্থ সংবলিত।
তারা এই শ্লোগান দিয়ে কী বুঝাতে চাচ্ছে সেটি স্পষ্ট নয়। কারণ তারা কি দেশের সামগ্রিক বিষয়ে জাস্টিস চাচ্ছে? নাকি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীর ঘাতক চালকের শাস্তির ব্যাপারে জাস্টিস চাচ্ছে? যদি সামগ্রিক বিষয়ে জাস্টিস চায়, তাহলে সেটি রাজনৈতিক আন্দোলনের নামান্তর; যেটির সাথে তাদের সম্পৃক্ততা কাম্য নয়।
তাহলে তারা চায়, ঘাতক ড্রাইভারের শাস্তি। সেক্ষেত্রে যদি তারা জাস্টিস চায়, তাহলে বিদ্যমান মোটরযান আইনে সর্বোচ্চ যে-শাস্তি আছে সেটিই দাবি করতে হবে। কিন্তু আন্দোলনের ভাব-ভাষা-দাবি দেখে এটি প্রতীয়মান হয় যে, বিদ্যমান আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি দিলেও তারা যে-জাস্টিস চাচ্ছে তা পাওয়া যাবে না। সুতরাং আইনের সংশোধন আগে প্রয়োজন।
বিবিধ ও তোমাদের প্রতি সবিনয় নিবেদন
ছোট ছোট শিশু কিশোর আমাদের অনেক শিখিয়ে গেল। রাস্তায় গাড়ি চালাতে গেলে বৈধ লাইসেন্স থাকতে হয়। রোড পারমিট থাকতে হয়। যানবাহনের ফিটনেস থাকতে হয়। ট্রাফিক আইন মানতে হয়। জনজীবনে শান্তি ও স্বস্তি আনতে গেলে জনশৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করা যায় না। কিন্তু এই আন্দোলন থেকে আন্দোলনকারীদেরও কিছু শিক্ষা রয়েছে। আমৃত্যু তাদের যেটি স্মরণ রাখতে হবে ও লালন করতে হবে।
আজকে যারা আন্দোলন করেছে ভবিষ্যতে তারাই হবে মন্ত্রী, এমপি, সচিব, আইজি, বিচারপতি, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, এমনকি মহামান্য রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও হবেন তারাই। তখন এ আন্দোলনের কথা ভুলে না গিয়ে সঠিকভাবে দায়িত্বপালন করলেই কেবল এদেরকে বাহবা দেয়া যাবে। এর আগে এখনি এতো বাহবা দেয়া খুব বেশি প্রয়োজন নাই। নাকি তখন আবার সিস্টেমের ঘরে বন্দী সব আইন-কানুন বলে পূর্ব-পুরুষের রক্তের দোষ দিয়ে নিজেকে মুক্ত করার অপচেষ্টা চলবে; কে জানে এসব? সে-কথা হয়তো এই মুহূর্তে আমরা পারছি না।
আল্লাহই ভালো জানেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পরও এ আন্দোলন দীর্ঘায়িত হওয়া কাঙ্ক্ষিত নয়। যে-দলের যে-মতের প্রধানমন্ত্রীই থাকতেন না কেনো, আমি একথাই লিখতাম। কারণ এ আন্দোলন কি নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপণার জন্য নাকি সরকার পতনের? যদি সরকার পতনের না হয়, তাহলে দুই দিনের বেশি দীর্ঘায়িত হওয়া উচিত হয়নি। আবার অসীম ক্ষমতাধর (?)
পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা সারাদেশে হঠাৎ যে-গাড়ি বন্ধ করে দিলেন এটিও আইনানুগ নয়। মানুষকে জিম্মি করে দাবি আদায় কাক্সিক্ষত নয়। ছাত্র-ছাত্রী বাবারা, তোমাদের অনেক পড়ালেখা বাকি রয়েছে
আন্দোলনের তৃষ্ণাকে বিদায় দিয়ে পড়ালেখার তৃষ্ণাকে অগ্রাধিকার দিয়ে স্কুলে ফিরে এসো। অনেক হয়েছে। এবার বন্ধ করো। প্লিজ আবার ক্লাসে ফিরে এসো। রাজনীতি করার জন্য সামনে অনেক বয়স পড়ে রয়েছে।
লেখক: বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত গীতিকার ও কলামিস্ট
No comments:
Post a Comment