বিভিন্ন অপরাধে সৌদি আরবের ১৩টি কারাগারে ৬৩০ বাংলাদেশি আটক রয়েছে। কারাগারে তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের বন্দি বিনিময় চুক্তি না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।।”।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বন্দিদের দেশে ফেরানোর সব প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সৌদি আরবের মালাজ জেলে ৯৭, আল হায়ের জেলে ১৮৭, দাম্মাম সেন্ট্রাল জেলে ১৫৬, আল হাসা জেলে ৩১, আল খোবার জেলে ৩৩, আল জোবাইল জেলে ৪৯, কাতিফ জেলে ১২, হাফার আল বাতেন জেলে ১৯, হাইল জেলে ১৮, বুরাইদাহ জেলে ১৮, কুরাইয়াত জেলে একজন, আরার জেলে ৩, সাকাকা জেলে ৬ জন বাংলাদেশি নাগরিক আটক রয়েছে।।”।
এরা সবাই সুনির্দিষ্ট অপরাধের ভিত্তিতে আটক রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে। সূত্র আরও জানায়, জেলে সাধারণত সুনির্দিষ্ট অপরাধের কারণে আটকদের রাখা হয়।।”।
এছাড়াও রেসিডেন্সি আইন বা লেবার আইন ভঙ্গের কারণে যাদের ডিপোর্ট করা হয় তাদের ডিপোর্টেশনে রাখা হয়। সুনির্দিষ্ট অপরাধ ছাড়া কাউকে জেলে আটক রাখা যায় না এবং অবশ্যই তা কোর্ট বা পাবলিক প্রসিকিউশনের নির্দেশেই করা হয়।।”।
এদিকে জেল ছাড়াও সৌদি আরবের ডিপোর্টেশন সেন্টারেও আটক আছে অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক। এরা শ্রম আইন ভঙ্গ করার অপরাধে ডিপোর্টেশন সেন্টারে আটক রয়েছে। এর আগে ২০১৩ সালের মার্চে কয়েক দফায় সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে অবৈধভাবে অবস্থানকারীদের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল।।”।
সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স অবৈধভাবে বসবাসকারীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে দেশ ত্যাগের জন্য ৯০ দিন সময় বাড়িয়ে দেন। কিন্তু অনেকেই দেশে ফিরে না আসায় তাদের জেলে যেতে হয়েছে অথবা চুরি করে সে দেশেই অবস্থান করছেন।।”।
সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে পাঠানো জুন মাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিয়াদ ডিপোর্টেশন সেন্টারে অবস্থান করছেন ৭৩৯ জন বাংলাদেশি। এদের মধ্যে ৬৮৩ জনকে আউটপাস ইস্যু করা হয়েছে এবং ৬৫২ জন দেশে ফিরেছেন। দাম্মাম ডিপোর্টেশন সেন্টারে অবস্থান করছেন ৪০৫ জন। এদের মধ্যে আউটপাস ইস্যু করা হয়েছে ২০৩ জনের এবং ৩০০ জন দেশে ফিরেছেন। সৌদিতে আটক বাংলাদেশিদের দেশে ফেরানোর বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব নহিদা রহমান সুমনা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেই যাই।।”।
আমাদের পক্ষে যত রকমভাবে সম্ভব আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। লেবার কাউন্সিলরদের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হয়। এছাড়া সৌদিতে বসবাসরত যাদের ভিসার মেয়ার শেষ হয়ে যায় তাদেরও আমরা যথাযথভাবেই ফিরিয়ে আনছি।’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক-১) আবু বকর ছিদ্দীক জানান, সৌদিতে আটকদের দেশে ফেরাতে সরকারের পদক্ষেপ নিয়েছে।।”।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ এ দায়িত্ব পালন করছে। সেবা ও সুরক্ষা বিভাগ থেকে জানা গেছে, পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আটকদের দেশে ফেরানোর কাজ অব্যাহত রয়েছে।।”।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (কর্মসংস্থান অনুবিভাগ) ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কোনও দেশের সঙ্গে চুক্তি না থাকলে আন্তর্জাতিক কনভেশনের মাধ্যমে ফেরত আনা যায়।।”।
সৌদি দূতাবাসে যোগাযোগ করলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘জেলে যারা বন্দি হিসেবে রয়েছেন, তাদের সাজা শেষ হলে আউট পাস দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। ফেরার জন্য টাকার কোনও সমস্যা হবে না। তবে যদি কারও সমস্যা হয়, দূতাবাস প্রয়োজনে সে ব্যবস্থা নেবে। একুশে মিডিয়া।”।
No comments:
Post a Comment