ঘুষখোরদের বাহুবলে চট্টগ্রাম বিআরটিএ-একুশে মিডিয়া - একুশে মিডিয়া একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ গণমাধ্যম হিসেবে সংবাদ পরিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Thursday, 2 August 2018

ঘুষখোরদের বাহুবলে চট্টগ্রাম বিআরটিএ-একুশে মিডিয়া

n
একুশে মিডিয়া, বিশেষ রিপোর্ট:
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চট্টগ্রাম। অবস্থিত জেলার হাটহাজারী থানাধীন নতুনপাড়া এলাকায়। এখানে বছরের বারোমাসই চলে ঘুষের কারবার। ঘুষ ছাড়া এখানে কোন কাজ হয়না।

ঘুষে মিলে রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে রোড পারমিট, ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, ডিজিটাল নাম্বারপ্লেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ নানাবিধ কাজ।.আর এ ঘুষ লেনদেনের মূল হোতা দালাল। আর দালালদের নিয়ন্ত্রন করে নৈশ প্রহরী লিটন। আর লিটনকে পরিচালিত করেন চট্টগ্রাম বিআরটিএ’র উচ্চপদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তা।

জানা যায়, চট্টগ্রাম বিআরটিএর উপ-পরিচালক শহীদুল্লাহ কায়সার গত মাসে সিলেটে বদলী হয়ে চলে গেছেন। তার আগের উপ-পরিচালক মো: শহীদুল্লাহ বিভিন্ন অনিয়ম আর দূর্নীতির অভিযোগে বদলী হয়ে রংপুরে চলে যান। কিন্তু মাত্র তিনমাসের মাথায় আবার পোষ্টিং নিয়ে চলে আসেন চট্টগ্রাম বিআরটিএতে। বর্তমানে তিনিই দায়িত্ব পালন করছেন। তার ফিরে আসার সুবাদে দালালরা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ঘুষ ছাড়া সেবা গ্রহিতাদের মিলছে না কোন সেবা।

দালালদের সূত্রে জানা যায়, প্রতিটি বাসের রুট পারমিট ও ফিটনেসের জন্য ১০ থেকে ৫০ হাজার, হিউম্যান হলার ৫ থেকে ৬ হাজার, ট্রাকের ক্ষেত্রে ২ থেকে ৩ হাজার, ড্রাম ট্রাকের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ হাজার, মিনি ট্রাক ২ থেকে ৩ হাজার, ছোট ভ্যান এক থেকে দেড় হাজার টাকা, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ৪০০ টাকা, টেম্পু থেকে -৫ হাজার টাকা বাড়তি ঘুষ হিসেবে দিতে হয়। ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্যও অতিরিক্ত ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা দিতে হয়।

তবে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শহীদুল্লাহ।

তিনি জানান, ঘুষ নেয়ার প্রশ্নই উঠে না। ‘ঘুষ’ অপ্রচারের কারন হিসেবে তিনি জানান, তার জনপ্রিয়তায় বিআরটিতে একটা সংঘবদ্ধ চক্র তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। কারো কোন অভিযোগ থাকলে সরাসরি তাকে জানানোর অনুরোধ জানান এই কর্মকর্তা।

সরেজমিনে দেখা যায়, কার্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এএসআই সাদেক প্রতিদিন অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে কাজ নেন সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে। তিনি বিআরটিএ চত্বরের এ প্রান্ত ওই প্রান্তে দৌড়ঝাঁপ করেন গাড়ির কাগজপত্র নিয়েই। চট্টগ্রাম বিআরটিএ’র নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, উপপরিচালক মো: শহীদুল্লাহ বদলীর পর শহীদুল্লাহ কায়সার দায়িত্ব নিয়ে দালাল নির্মূলে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেন। তখন তিনি জানান, পরিবহন নৈরাজ্য থামাতে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবে বিআরটিএ। তখন তিনি জানান, নগরে বাস, মিনিবাস, কাভার্ডভ্যান, হিউম্যান হলার, অটোটেম্পুসহ ৭৫ রকমের প্রায় ৮৫ হাজার গাড়ির রেজিস্ট্রেশন আছে।

১৯৯০ সাল ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে এসব গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়েছিল। তবে গাড়িগুলো নিয়মিত ফিটনেস পরীক্ষার জন্য বিআরটিএ কার্যালয়ে আনার নির্দেশনা থাকলেও অনেক মালিক তাদের গাড়ি ফিটনেস পরীক্ষার জন্য আনেন না। ফিটনেসবিহীন এসব গাড়িই বেশি নৈরাজ্যের সৃষ্টি করে। নির্ধারিত রুট অনুসরণ করে না।

সুশৃঙ্খলভাবে গাড়ি চললে যানজটের সৃষ্টি হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, নগরে বাস-মিনিবাসের ১৪টি রুটে ১ হাজার ১২০টি চলাচল করে, কিন্তু এসব রুটে নির্ধারিত সিলিং ১ হাজার ৪৭৫টি। অন্যদিকে হিউম্যান হলারের ১৭টি রুটে ১ হাজার ৩২৯টি গাড়ি চলাচল করে, কিন্তু এসব রুটে নির্ধারিত সিলিং ১ হাজার ৪০৬টির।একইভাবে নগরের ১৬টি রুটে ২ হাজার ২৪৭টি অটোটেম্পুর নির্ধারিত সিলিং থাকলেও সেখানে চলছে ৬৮২টি।

বিআরটিএ নতুন গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নেওয়ার আগে রুট পারমিট নিতে হবে জানিয়ে তিনি তখন জানিয়েছিলেন, আগে কেউ গাড়ি নিয়ে আসলেই আমরা রেজিস্ট্রেশন করে দিতাম। তবে এখন রেজিস্ট্রেশনের আগে তাকে রুট পারমিট নিতে হবে। অর্থাৎ যে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি চাইছেন তা রুট ‘এবজর্বড’ করে কি না তা যাছাই করে রেজিস্ট্রেশন করার অনুমতি দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট রুট অনুসরণ না করলে সংশ্লিষ্ট গাড়ির রুট পারমিট বাতিল করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, গণপরিবহনের নির্দিষ্ট রুট অনুসরণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কোনো গাড়ি তা অমান্য করলে তার রুট পারমিট বাতিল করা হবে। কিন্তু তার বদলির পর এ উদ্যেগ আবার ভেস্তে যেতে শুরু করেছে। সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম মহানগরীতে নতুন নিবন্ধনপ্রাপ্ত রুট পারমিট নেই এমন থ্রি-হুইলার ম্যাক্সিমা, এইচ পাওয়ার, মাহিন্দ্রা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরি ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এ আদেশ দেন। কিন্তু বিআরটিএ ও ট্রাফিক পুলিশের সহযোগীতায় তা নগরীতে হাইকোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে চলাচল করছে। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম মহানগরীতে গত ২ বছর যাবৎ থ্রি-হুইলার অটোরিক্সার আদলে প্রায় ৩ হাজার অটোরিক্সা বিআরটিএ নিবন্ধন প্রদান করে।
এসব আমদানি করা ম্যাক্সিমা, এইচ পাওয়ার, মাহিন্দ্রা, টমটমসহ ৪ আসনের অটোরিক্সা আমদানি করে ১০ আসনের অটো টেম্পুর আদলে নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছিল। নিবন্ধনকৃত এসব রুট পারমিটবিহীন যান বিভিন্ন মালিক সমিতির চাঁদা দিয়ে অবৈধভাবে নগরীতে চলাচল করছিল।

বিষয়টি চট্টগ্রাম অটোরিকশা-অটো টেম্পো শ্রমিক লীগের (রেজি নং-চট্ট ১৪৬৯) সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খোকন আদালতের নজরে এনে রিট আবেদন দায়ের করলে রিটটির শুনানি শেষে এ আদেশ দেন আদালত। একইসঙ্গে অননুমোদিত এসব ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন জব্দেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়।
রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, অটোরিক্সা সার্ভিস নীতিমালা ২০০৭ বাস্তবায়ন না করে উক্ত যানবাহন চলাচলের জন্য কেন রুট পারমিট দেওয়া হবে এই মর্মে রুল জারি করা হয়। রিটের শুনানী শেষে এমন আদেশ দেন হাইকোর্ট। একুশে মিডিয়া'

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages