একুশে মিডিয়া, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
উড্ডয়নরতবস্থায় ক্রুটিগত কারণে কক্সবাজার বিমান বন্দরে অবতরণ করতে না পেরে বেসরকারী বিমান সংস্থার ইউএস বাংলার ৭৩৭ মডেলের বোয়িং বিমানটি চট্টগ্রাম শাহআমানত বিমান বন্দরে অবতরণ করতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে। কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত স্কোয়াড্রন লিডার জাকারিয়া বুদ্ধিমত্তায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে সকল যাত্রী রক্ষা পেয়েছে। এমনকি দুর্ঘটনা কবলিত বিমানেরও বড় ধরনের কোন ক্ষতি হয়নি।।”।
ক্যাপ্টেন জাকারিয়ার উদ্বৃতি দিয়ে ইউএস বাংলার একজন কর্মকর্তা বলেন, ইউএস-বাংলার ৭৩৭ মডেলের বোয়িং বিমানটি ১৬৪ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিলেন ক্যাপ্টেন জাকারিয়া। নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্য কক্সবাজার বিমানবন্দরের কাছাকাছি পৌছার পর হঠাৎ করে বিমানের সামনের নোজ হুইল কাজ করছিলো না। ফলে কক্সবাজার বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক বিমান অবতরনের অনুমতি দেয়নি।।”।
উপায়ন্তর না দেখে বিমান নিয়ে রওনা দিলেন ঢাকার উদ্দেশ্যে। সেখানেও মিললনা অবতরনের অনুমতি। যাত্রীরা উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়লেন। দুর্ঘটনা আতঙ্কে যখন সকলের জীবননাশের আশংকা অদম্য সাহস নিয়ে ক্যাপ্টেন জাকারিয়া বিমানটিকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরনের সিদ্ধান্ত নেন। ফুয়েল শেষ করার জন্য তিনি আকাশে বেশ কিছুক্ষণ চক্কর দিতে থাকেন। অসীম সাহস নিয়ে পেছনের চাকার উপর ভর করে অবশেষে তিনি বিমানটি অবতরণ করেন।।”।
শেষ পর্যায়ে এসে বিমানের সম্মুখ ভাগ রানওয়েতে মুখ থুবড়ে পড়ে। এবং বড় ধরনের দুর্ঘটনা ছাড়াই বিমানের সব যাত্রী নিরাপদে বিমান থেকে নেমে আসেন।।”।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (জিএম-পিআর) কামরুল ইসলাম বলেন, ফ্লাইটে ১১ শিশুসহ (ইনফ্যান্ট) ১৬৪ যাত্রী ও সাত ক্রু ছিল। তাদের সবাই নিরাপদে আছেন। বিমানের যাত্রী এবং সংশ্লিষ্ট সকলের মন্তব্য পাইলটের অসাধারণ দক্ষতায় ৭৩৭ মডেলের বোয়িং বিমানটি ক্র্যাস ল্যান্ডিং থেকে বেঁচে গেছে। রক্ষা পেয়েছেন ফ্লাইটে থাকা ১৬৪ যাত্রী ও সাত ক্রু।।”।
এদিকে শাহ আমানত বিমান বন্দরে ইউএস বাংলা বিমানের ঝুঁকিপূর্ণ অবতরণের পর ওই বিমানের যাত্রী সাভারের সাবেক এমপি মুরাদ সাংবাদিকদের কাছে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন-এতো বাজে একটা প্লেন জীবনে দেখিনি। আমাদেরকে কি তারা মানুষ ভাবে, না অন্যকিছু মাথায় ঢুকছে না। এভাবে যদি তারা সার্ভিস দেয়, তাহলে অচিরেই বিমানের প্রতি আস্থা উঠে যাবে।।”।
এসময় ইউএস বাংলার আরো কয়েকজন যাত্রী ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা বিমান সংস্থার অব্যবস্থাপনা, পুরনো বিমানে যাত্রী পরিবহনসহ নানা অভিযোগ তুলেন ভুক্তভোগী যাত্রীরা।।”।
বিমানটি অবতরণের পর ১৬৪ যাত্রী এবং বিমান ক্রুরা অক্ষত অবস্থায় বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। তবে দীর্ঘ আড়াই ঘন্টা চরম আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন যাত্রীরা। ফলে বেশিরভাগ যাত্রী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।।”।
মো. হাসান নামে অপর এক যাত্রী বলেন, ইউএস বাংলা সাধারণদের কম রেটে যাতায়াত সুবিধা দিয়ে পুরনো বিমানে যাত্রী পরিবহন করে। এতে করে প্রতিবারই কোননা কোন সমস্যায় পতিত হচ্ছে এই সংস্থার বিমান। ভালভাবে মেইনটেনেন্স না করার কারণে বার বার এ সমস্যা হচ্ছে বলে জানান তিনি।।”।
শাহ আমানত বিমানবন্দরের একাধিক সূত্র জানায়, ইউএস বাংলার বিএস ১৪১ নম্বর বিমানটি ১৬৪ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় কক্সবাজার বিমান বন্দরের উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করে। বিমানটি বেলা সাড়ে ১২ টায় কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা। কক্সবাজার বিমানবন্দরের কাছাকাছি পৌঁছালে বিমানে ত্রুটি ধরা পড়ে। কোন অবস্থানেই বিমানের সামনের চাকা নামছিল না। এরপর পাইলট পুনরায় বিমানটি নিয়ে ঢাকা হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের দিকে রওনা করে পাইলট। সেখানে অবতরণ করার অনুমতি না পেয়ে আকাশে উড়তে থাকে বিমানটি। জ্বালানি শেষ পর্যায়ে চলে আসার এক পর্যায়ে উপায় না দেখে পাইলট বিমানটি নিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পুনরায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিয়ে আসে।
শেষ পর্যন্ত বিমানের সামনের চাকা না নামায় দুপুর ১টা ২০ মিনিটে চট্টগ্রামেই অবতরণ করতে বাধ্য হয় বিমানটি। একুশে মিডিয়া।”।
No comments:
Post a Comment