নড়াইলে ১০ টাকার চাল বিতরণে ডিলার ও ট্যাগ অফিসাররা সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না!-একুশে মিডিয়া - একুশে মিডিয়া একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ গণমাধ্যম হিসেবে সংবাদ পরিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Sunday, 21 October 2018

নড়াইলে ১০ টাকার চাল বিতরণে ডিলার ও ট্যাগ অফিসাররা সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না!-একুশে মিডিয়া


একুশে মিডিয়া, উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ” প্রতিপাদ্য উল্লেখ করে ডিলারের নাম ও ঠিকানাসহ বড় বড় অক্ষরে দোকানের সামনে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখার কথা থাকলেও তা মানছেন না ডিলাররা। ফলে ডিলারের দোকান খুজে পেতে যেমন কষ্ট হচ্ছে তেমনি প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতার কথা জানতে পারছেন কার্ডধারীরা।
সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে কার্ডধারী উপকারভোগীদের মাঝে সরকার কর্তৃক শুভেচ্ছা মূল্যে খাদ্যশস্য বিতরণ শুরু হয়েছে। ১০ টাকায় চাল পেয়ে খুশি হয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষ। সরকারের এমন যুগান্তকারী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে দেশের সর্বস্তরের জনগন। এই কার্যক্রম চলমান থাকার কারনে মানুষের মধ্যে ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্যতা।
খাদ্য বান্ধব কর্মসুচীর এই ধারা অব্যহত রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ডিলারদের চাল বিক্রয় কার্যক্রম সঠিকভাবে তদারকির জন্য ডিলার ওয়ারী ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করেছেন। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে এবং ডিলারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট ডিলারের ট্যাগ অফিসাররা সঠিক ভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন না।
এমনকি চাল বিতরণের সময়ও তাঁদেরকে পাওয়া যায়নি। কোন কোন ডিলার একাধিক বার ট্যাগ অফিসারকে ফোন করেও বিক্রয় কেন্দ্র পরিদর্শনে আনতে পারেননি। তাই উপকার ভোগীদের কথা চিন্তা করে নিয়ম বহির্ভুত ভাবে তদারকি কর্মকর্তা ছাড়াই চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু এবং শেষ করেছেন তাঁরা। এদিকে তদারকি কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে এক শ্রেনীর অসাধু ডিলার ওজনে চাল কম দিয়ে ঠকাচ্ছেন কার্ডধারী হতদরিদ্রদের।
বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায় চাউলের ডিলার বি.এম. ফায়েজ আহম্মেদ এর দোকান বন্ধ। দোকানের সামনে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কোন সাইনবোর্ড নেই। স্থানীয়দের সহায়তা নিয়ে অন্য একটি দোকানে গিয়ে তার দেখা মেলে তার।
অদ্য পর্যন্ত কি পরিমাণ চাল বিক্রি করেছেন জানার জন্য রেজিষ্টার দেখতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ডিলার। দোকান খুলে যখন রেজিষ্টার সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন তখন স্টককৃত চালের সাথে রেজিষ্টারে উল্লেখিত চালের হিসাব মেলাতে পারেন না ফায়েজ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, রেজিষ্টারে চাল বিক্রির যে তথ্য লিপিবদ্ধ আছে সে অনুযায়ী আমার দোকানে ৫ জন কার্ডধারীর চাল বেশি আছে। বেশি চাল কোথায় পেলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অন্য ডিলার আমার দোকানে চাল রেখে গেছেন।
দোকানে ঢুকে দেখা যায়, ফায়েজ বিশেষ সুবিধা পাবার আশায় সরকারের নির্দেশনা থাকা সত্বেও ডিজিটাল মাপযন্ত্র ব্যবহার না করে ভিন্ন পন্থায় চাল বিক্রি করছেন। ট্যাগ অফিসারের তদারকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ট্যাগ কর্মকর্তা নিয়মিত আসেন না।
এ বিষয়ে ট্যাগ কর্মকর্তা দিঘলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলিপ কুমার সাহা বলেন, বিভিন্ন কাজের ব্যস্ততায় ঠিকমত তদারকি করা সম্ভব হয় নি। একই ইউনিয়নের ডিলার মাসুদ মোল্যা বলেন, একাধিক বার আমার ট্যাগ অফিসারকে চাল বিতরণের বিষয় অবগত করার পরও তিনি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দোকানে আসেন নাই। তাই নিরুপায় হয়ে কার্ডধারীদের কথা চিন্তা করে অনিয়ম হলেও চাল বিক্রি করেছি।
এ বিষয়ে ট্যাগ কর্মকর্তা দিঘলিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মধুমঙ্গল বিশ্বাস আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, চাল বিতরণের বিষয়ে চিঠি পেয়েছি।
কিন্তু কবে থেকে চাল বিক্রি শুরু হবে তা আমাকে ডিলার জানায়নি। রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সকাল হতে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চাল বিতরণের নির্দেশনা থাকলেও বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) চাল বিক্রি বন্ধ রাখেন মল্লিকপুর ইউনিয়নের ডিলার মো. ইকবাল হোসেন মোল্যা। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন দুর দুরান্ত থেকে আসার কার্ডধারীরা। চাল বিক্রয় কেন্দ্র/ দোকানের অবস্থান সংশ্লিষ্ট তালিকায় মল্লিকপুর বাজার উল্লেখ থাকলেও নিজ বাড়িতে চাল বিক্রি করছেন ইকবাল।সেখানেও দৃষ্টিগোচর হয়নি কোন সাইনবোর্ডের।
এ বিষয়ে ডিলার ইকবাল বলেন, বৃহস্পতিবার চাল বিক্রির কথা থাকলেও দোকান বন্ধ রেখেছি এটা আমার অন্যায় হয়েছে। তবে রবিবার চাল বিক্রি শুরু করব।
ডিলার ইকবালের ট্যাগ অফিসার উত্তম কুমার সাহা, আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, বৃহস্পতিবার চাল বিক্রি করছে কিনা সে বিষয়ে ইকবাল আমাকে কিছু জানায় নি।
এছাড়াও লাহুড়িয়া ইউনিয়নের ডিলার মো. ফরিদুজ্জামান এবং শালনগর ইউনিয়নের ডিলার মো. মিজানুর রহমানের দোকানে গিয়েও দেখা মেলেনি সংশ্লিষ্ট ট্যাগ কর্মকর্তাদের।
এ বিষয়ে ট্যাগ কর্মকর্তা স্বপন কুমার টিকাদার ও মো. মহিদুর রহমান চাল বিতরণের সময় উপস্থিত না থাকার বিষয়ে বিভিন্ন অযুহাত দেখান।
জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মনতোষ কুমার মজুমদার আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে বলেন, তদারকি কর্মকর্তার উপস্থিতি ছাড়া কোন ভাবেই চাল বিতরণ করা যাবে না। যদি কোন ডিলার এবং সংশ্লিষ্ট ট্যাগ কর্মকর্তা নিয়ম ভঙ্গকরে চাল বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন তার বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা খাদ্য বান্ধব কমিটির সভাপতি মুকুল কুমার মৈত্র, আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, বিষয়গুলি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages