দোহার নবাবগঞ্জে চলছে জুয়ার ট্রাক-একুশে মিডিয়া - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Sunday, 14 October 2018

দোহার নবাবগঞ্জে চলছে জুয়ার ট্রাক-একুশে মিডিয়া


একুশে মিডিয়া, মোঃ জাকির হোসেন, দোহার (নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:
মোটরসাইকেল সহ লোভনীয় সব পুরস্কারের পসরা নিয়ে নবাবগঞ্জ ও দোহারের রাস্তায় রাস্তায় নির্বিঘে ঘুরছে লটারী নামক জুয়ার ট্রাক ও ইজিবাইক। লোভে পড়ে সারাদিনের কষ্টার্জিত টাকায় ১০/২০ করে টিকিট কিনে সর্বশান্ত হচ্ছে বিশেষ করে ইজিবাইক ও রিক্সাচালকরা। এমনকি ঘরের গৃহিনীরাও আসক্ত এমন জুয়ায়। প্রকাশ্যে এমন লটারী নামক জুয়া চলতে থাকলেও নির্বিকার দুই উপজেলার প্রশাসন।
জানা যায়, নবাবগঞ্জ উপজেলার চূড়াইনে হস্ত ও কুটির শিল্প মেলায় আয়োজিত লটারির নামক জুয়ার ফাঁদে পড়ে মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সব শ্রেণি পেশার মানুষ। সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে অর্থনীতি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চূড়াইন সাংস্কৃতিক সংঘ গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে মাসব্যাপী ওই মেলার আয়োজন করেছে। তবে মেলায় বেচাকেনার চেয়ে লটারির প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেশি। মেলা আয়োজক কর্তৃপক্ষও টাকার লোভে পড়ে সর্বনাশা এমন জুয়ার আয়োজনকে প্রাধান্য দিয়ে যাচ্ছে। আবার লটারী নামক এ জুয়ার ড্র প্রচার করা হচ্ছে স্থানীয় ক্যাবল নেটওয়ার্কের চ্যানেলে।
সরেজমিন ঘুরে বিভিন্নজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, কমপক্ষে অর্ধশত ট্রাক ও ইজিবাইক লটারির টিকিট বিক্রির জন্য সকাল থেকে রাত ৯/১০ পর্যন্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে দোহার-নবাবগঞ্জের প্রধান সড়ক সহ পাড়ামহল্লার অলিগলি। এসব টিকিট কিনতে ভিড় জমাচ্ছে গৃহবধুরাও। লটারির প্রতি বেশি আকর্ষণ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করা দিনমজুরদের। তারা দামি পুরস্কারের আশায় প্রতিদিনই ১০/২০টি করে লটারির টিকিট কিনছেন। সংসারে খাবার জোটেনা অথচ সে টাকায় লটারির টিকিট কিনছেন এমন ঘটনাও অহরহ। আবার লটারিতে পুরস্কার না পাওয়ায় সংসারে অশান্তি বাড়ছে তাদের।
নবাবগঞ্জ শহীদ মিনারের সামনে দুই যুবককে ঘিরে আছে বিভিন্ন বয়সী আট-দশজন ব্যক্তি। এর মধ্য থেকে এক যুবক বেরিয়েই চিৎকার করে বলে উঠল, ‘মামা, মাথাই নষ্ট, খালি হুন্ডা আর হুন্ডা।’ খানিকটা দূরে ব্যাটারিচালিত অটোর এক চালক ওই যুবকের কথার উত্তরে বলেন, ‘হ মামা, খালি হুন্ডা। আইজও হোন্ডা দিব। কিনেন টিকেট, কপাল ভাল হলে আপনেও পাইতে পারেন হুন্ডা। নবাবগঞ্জ ও দোহারের বিভিন্ন সর্বত্র এ ধরনের কথা প্রতিমূহুর্তে শোনা যাচ্ছে। র্যাফেল ড্রতে পুরস্কার হিসেবে প্রতিদিন মোটরসাইকেল, এলইডি টিভি, মোবাইল ফোনসেট, ওয়াটার ফিল্ডার, প্রেসার কুকার, রাইস কুকারসহ ৫০ রকমের পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে মোটরসাইকেলের আশায় হুমড়ি খেয়ে টিকিট কিনছে লোকজন।
বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বহুল প্রচার, বিক্রি ও মানোন্নয়নের জন্য হস্ত ও শিল্প মেলার আয়োজন করা হলেও এটি মূলত লটারী নাম জুয়া নির্ভর হয়ে পড়েছে। আর এর ফাঁদে পড়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতছাড়া হচ্ছে দুই উপজেলাবাসীর। ব্যবসা বানিজ্যেও মন্দা প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে।
‘র্যাফেল ড্র’ এর নামে প্রতারক চক্র এভাবেই দিনের পরদিন দিন মানুষকে ঠকিয়ে চলেছে। প্রতারক চক্র নিজেদের ষোলকলা পূর্ণ করে টিকিটের ড্র না করে একদিনের টাকা নিয়ে আবার হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। সেখানেই বড় অংকের লাভ। কারণ একদিনেই টিকিট বিক্রিহয় কয়েক লাখ টাকার। সমাজের গরীব মানুষের ঘামে ভেজা টাকাগুলো সুক্ষ্মবুদ্ধি দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র।
নবাবগঞ্জের ইজিবাইক চালক সবুজ মোল্লা বলেন, ‘মোটরসাইকেলের আশায় প্রতিদিন আমিও ২০টা করে টিকিট কিনতাছি। এহনও পুরস্কারও পাই নাই। তবে মনে হয় পাইয়া যামু।’
স্থানীয় এক শিক্ষক বলেন, ‘লটারির নামে যা হচ্ছে তা জুয়ার চেয়েও ক্ষতিকর। জুয়া কিছু নির্দিষ্ট মানুষ গিয়ে খেলে। আর লটারির সাথে সব শ্রেণির মানুষজন সম্পৃক্ত হয়। এমন লটারির মাধ্যমে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে জুয়া খেলায় অংশগ্রহণ করানো হচ্ছে। এটি বন্ধের জন্য সংশিষ্ট ব্যক্তিদের বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করছি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রাজনীতিবিদ বলেন, চূড়াইনের প্রভাবশালী একটি মহলের ছত্রচ্ছায়ায় এটি হচ্ছে। এ জন্যই স্থানীয় প্রশাসনসহ উপজেলার সব মহল নিশ্চুপ। কারণ টাকার ভাগ কমবেশি সবার কাছেই যাচ্ছে। জুয়ার আয়োজক সেলিম রেজা নামে এক ব্যক্তি।
এ বিষয়ে জানতে সেলিম রেজাকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান প্রিয় বাংলাকে বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে অবগত নয়। এখনি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages