খাদ্য সহায়তা পায়নি ভোলার জেলেরা-একুশে মিডিয়া - একুশে মিডিয়া একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ গণমাধ্যম হিসেবে সংবাদ পরিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Monday, 22 October 2018

খাদ্য সহায়তা পায়নি ভোলার জেলেরা-একুশে মিডিয়া


একুশে মিডিয়া, মোঃ আরিয়ান আরিফ: ভোলা:
ইলিশের নিরাপদ প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষার ২২ দিনের সরকারী নিষেধাজ্ঞা চলছে। এই ২২ দিনে নদীতে সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তুু এরই মধ্যে প্রজনন মৌসুমের পেরিয়ে গেছে ১০ দিন।
কিন্তুু এখন পর্যন্ত ভোলার ৭ উপজেলার অন্ত্যত দেড়লক্ষাধিক জেলে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।এই অবস্থায় খেয়ে না খেয়ে দি কাটাচ্ছেন জেলে পরিবাররা। আর জেলা প্রশাসক বলছে দ্রুত জেলেদের চাল বিতরণ এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্ব-স্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ইলিশের প্রজনন সময়ে ভোলার মেঘনা-তেতুলিয়া নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ হলেও এখনো খাদ্য সহায়তা পায়নি উপকূলীয় জেলা ভোলার জেলেরা।
মা ইলিশ রক্ষা ও ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে পহেলা ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন মেঘনায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। আর এ সময় খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২০ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা জেলেদের। কিন্তু ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো খাদ্য সহায়তা পাননি তারা। মাছ ধরা ছাড়া অন্য পেশার অভিজ্ঞতা না থাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে জেলেদের।
অন্যদিকে জেলেরা জানান, মাছ ধরা বন্ধ। খাদ্য সহায়তাও নেই। ফলে আমাদেরকে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে অমানবিক জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। নিজেদের কথা না হয় বাদই দিলাম। সন্তানদের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। তারা ক্ষুধার জ্বালায় ছটফট করছে। এখন সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত খাদ্য সহায়তা না পেলে আমাদেরকে না খেয়ে মরতে হবে।
চরফ্যাসন উপজেলার দুর্গম ইউনিয়ন ঢাল চরের মৎস্য শাহে আলম ফরাজী বলেন, ইলিশের ভড়া মৌসুমে তিন মাস-আষাড়, শ্রাবন ও ভাদ্র। এ বছর তা ছিল সব মিলিয়ে ১৫ দিন। ওই ১৫ দিনে জেলেদের যা আয় হয়েছে, তা দিয়ে সংসার চলছে না। নদীতে মাছ না থাকায় মা ইলিশ প্রজনন মৌসুমের সঙ্গে সঙ্গে অনেক জেলে নৌকা ডাঙ্গায় তুলে রেখেছে।অনেকেই এলাকা ছেড়ে ঢাকা চট্রগ্রাম চলে গেছে।
বিভিন্ন মাছ ঘাটে জেলেদের সংঙ্গে কথা বলে জানা যায় বরাদ্দ কার চাল জেলেরা সময় মত পাচ্ছে না। যখন চাল পাচ্ছেন তখন জেলেদের কোন উপকারে হচ্ছে না। ফলে জেলারা বাধ্যই নদীতে নামছেন মাছ শিকারে।
বেতুয়া মাছ ঘাটের আড়তদার মোঃ ছলিমুল্লাহ (৫৬) বলেন, তাঁর ২০টি ট্রলারের ২০ জন মাঝিকে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা দাদন দিয়েছেন। এতটাকা দাদন দিয়ে গত ৪ মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) মাত্র তিন লাখ টাকার মাছ আনতে পেরেছেন জেলেরা।কর্মচারীর বেতন ও আড়ত খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা। ঋনের টাকা শোধ না করে জেলেরা পালিয়ে যাচ্ছেন।
বেতুয়া ঘাটের জেলে নুরুল আলম (৩৫) বলেন, তাঁর ট্রলারে ১০ জন জেলে। তিনি আড়তদারের কাছে এক লাখ টাকা দাদান নিয়েছেন।গত (জুলাই থেকে সেপ্টেবর) তিন মাসে মাছ বিক্রি করে সাড়ে নয় হাজার টাকা আড়ত দারী দিয়েছেন বাকী টাকা ১০ জন ভাগ করে খুব সামান্যই ভাগে পেয়েছেন। এখন তাঁরা দিন চলাই দায় হয়ে পরেছে। দাদান শোধ করবেন কিভাবে? বিভিন্ন মাছ ঘাটে জেলেদের সংঙ্গে কথা বলে জানাযায় বরাদ্দ কার চাল জেলেরা সময় মত পাচ্ছে না। যখন চাল পাচ্ছেন তখন জেলেদের কোন উপকারে হচ্ছে না। ফলে জেলারা বাধ্যই নদীতে নামছেন মাছ শিকারে।
জেলা খুদ্র মৎস্যজীবি জেলা সমিতির সভাপতি মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, তাঁরা ইলিশ প্রজোনন মৌসুমের আগে ৫ দফা দাবীতে আন্দোলন করে আসছেন। জেলা প্রশাসক এর সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন। তখন বেকার জেলেদের হাতে চাল পৌছানোর দাবী করা হয়।জেলা প্রশাসক তাদের দাবী বাস্তবায়ন করবেন বলে আশ্বস দেনে। কিন্ত অভিযানের দশ দিন চলে গেলেও জেলেদের হাতে চাল পৌছায় নি।
জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এবিএম আকরাম হোসেন বলেন, ৩ অক্টোবর তাঁদের কাছে মন্ত্রনালয় থেকে জেলেদের জন্য বরাদ্দ করা চাল ছাড়ের চিঠি এসেছে। ওই চিঠি তাঁরা ৭ অক্টোবর উপজেলায় পৌছে দিয়েছেন। এরপরের দিন ছাড়পত্র দেওয়ার কথা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আহাসান হাবিব খান বলেন, ২২ দিন (৭-২৮ অক্টোবর ) মা ইলিশ প্রজোনন মৌসুম। এ সময় নদীতে মাছ শিকার নিষিদ্ধ। এ সময় জেলার দেড়লাখ বেকার জেলেদের মধ্যে ৮৮ হাজার ১১১ জন জেলের জন্য ২০ কেজি করে প্রায় ১ হাজার ৭৬৩ টন চাল বরাদ্দ করেছে মন্ত্রনালয়। ইতিমধ্যে ইলিশ প্রজনন মৌসুমে জেলেদের যে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে তা প্রতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের দ্রুত জেলেদের মাঝে বিতরণ করার জন্য বলা হয়েছে।
এদিকে গত ১০ দিনে (৭-১৬) অক্টোবর অভিযান হয়েছে ১১৫টি। দুই শাতাধিক জেলে আটক হয়েছেন। ৮৫টি ভ্রাম্যান আদালত বশিয়ে নির্বাহী হাকিম ১৭৩ জনের বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও বাকিদের ২লাখ ১৮ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।
উল্লেখ্য, ভোলার সাত উপজেলার আটটি খ্যাদ্য গুদামের কর্মকর্তরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত মনপুরা উপজেলা ছাড়া বাকি ছয় উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা তাঁদের ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ছাড়পত্র দিয়েছেন। তবে কোথাও চাল বিতরণ করা হয়নি।

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages