একুশে মিডিয়া, আল-আমিন মুন্সী:
পলাশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে সকল প্রাইমারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে গড়ে তোলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার। এসব কর্ণারে স্থান পেয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই, আলোকচিত্র ও তথ্য। এতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারছে শিক্ষার্থীরা। লেখাপড়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পলাশ উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা প্রশাসন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পলাশের ৬৪টি প্রাইমারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গড়ে তোলা হয়েছে “মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার”। জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইনের পরিকল্পনায় প্রাথমিকের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজস্ব অর্থায়নে গড়ে তোলা হয়েছে এসব কর্ণার। কর্ণারগুলোতে স্থান পেয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আলোকচিত্র, বই, তথ্য ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। এতে উঠে এসেছে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার দৃশ্যপট। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে জেলার অবদান, ইতিহাস, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা ও বীরদের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত কর্ণারগুলো থেকে মুক্তিযুদ্ধকে জানা ও অনুভব করতে পারছে শিক্ষার্থীরা। একাত্তুরে পাকবাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞ, গণহত্যা, বাঙ্গালীর বীরত্বগাথাসহ মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস জানার আগ্রহ বাড়ছে তাদের মধ্যে। পলাশ আদর্শ বিদ্যা নিকেতন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুইটি আক্তার জানান, পাঠ্য বই পুস্তকে পড়ে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে খুব একটা জানা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধ কর্ণারের সংগ্রহে রাখা বই পড়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারছি। পূর্ব ঘোড়াশাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বন্যা দাস জানান, কর্ণারে স্থান পাওয়া মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক স্থিরচিত্রগুলো আমাদের মনকে নাড়া দেয়। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে আমাদেরকে উৎসাহিত করছে এই কর্ণার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার নি:সন্দেহে আমাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে। সানেরবাড়ী প্রাইমারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসরিন সুলতানা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ করতে “মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার” সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। শিক্ষার্থীরা অবসর সময়ে আগ্রহ নিয়েই কর্ণারে গিয়ে তথ্য জানছে। পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি বলেন, একটি জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে তার শেকড়কে জানা উচিত। আর আমাদের শেকড় হচ্ছে মহান মুক্তিযুদ্ধ। এজন্যই শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত করে তোলা, চিন্তা চেতনায় দেশাত্মবোধ, জাতীয়তাবোধ তথা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উপজেলা জুড়ে মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার গড়ে তোলা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment