![]() |
একুশে মিডিয়া, রিপোর্ট:
শ্রমিক ধর্মঘটের নামে সাধারণ মানুষের হয়রানি করার প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ মানববন্ধন পালিত হয়। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা মুখে কালো রঙের মবিল লাগিয়ে প্রতিবাদ জানান। শ্রমিকদের আন্দোলনে নারী নির্যাতন, শিশুহত্যা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা তুলে ধরে তারা এর প্রতিবাদ জানান।
প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা তিনটি দাবির কথা জানান। তাদের দাবিগুলো হলো- শিক্ষার্থীদের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করতে হবে, আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বন্ধ করা এবং অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য রোগী বহনকারী গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। সেখানে লেখা ছিল-‘নবজাতকের কি অপরাধ?’, ‘ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি কেন?’, ‘আলকাতরা সন্ত্রাস নিপাত যাক’, ‘দেশের বুকে চুনকালি, শ্রমিক নেতার নেই বুলি’, ‘স্কুল ড্রেসে কালি কেন?, ‘কালি নাকি কলঙ্ক?’ ইত্যাদি।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘একজন শ্রমিকনেতা (শাজাহান খান) আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন কিন্তু তিনি বলেছেন আন্দোলন সম্পর্কে কিছু জানেন না। তিনি একদিকে শ্রমিক নেতা অন্যদিকে মন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন। যখন সংসদে আইনটি পাশ হয়েছে, তখন তিনি এটিকে সমর্থনও করেছেন। আবার তিনি কেন আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষ এবং শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এটা কোন আন্দোলনের আচরণ হতে পারে না। এখন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা চলছে। শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষা দিতে যেতে পারছেনা। পুরো দেশটা এখন অচলাবস্থায় পরিণত হয়েছে।
চারুকলা শিক্ষার্থী আবদুল করিম বলেন, ‘সংবিধান যেকোনও রাষ্ট্রের নাগরিকদের আন্দোলন করার অধিকার দিয়েছে। এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। তবে, তারা আন্দোলনের নামে কোনও নাগরিকের চলাফেরা করার অধিকার এবং তাদের পথ অবরোধ করার অধিকার সংবিধান তাদের দেয়নি। যখন যৌক্তিক আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছিল, তখন তাদেরকে দমন করতে হেলমেট বাহিনী মরিয়া হয়ে উঠেছিল। আজকে যখন সাধারণ মানুষ এবং শিক্ষার্থীরা শ্রমিকদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তখন পুলিশ বাহিনী ও হেলমেট বাহিনী নিরব ভূমিকা পালন করছে। গতকালকে যে শিশুটি মারা গেছে,এটাকে আমরা মৃত্যু বলতে পারি না। এটা একটি স্পষ্ট হত্যাকাণ্ড। আমরা শ্রমিকদের আন্দোলনের বিপক্ষে না। কিন্তু এধরনের অরাজকতা কোনও শ্রমিক করতে পারে না। এধরনের অপকর্মগুলো সরকারের একটি মাফিয়াচক্র দ্বারা করা হচ্ছে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে এসব অরাজকতা মেনে নিতে পারি না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, ‘দাবি আদায়ের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকরা চাইলে একজন নারীকে লাঞ্ছনা করতে পারে না। গতকাল আমরা যে ধরনের দৃশ্য দেখতে পেয়েছি, তা খুবই নৃশংস। আমরা মনে করি রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে তারা আন্দোলন করতে পারে। কিন্তু তারা বিশৃঙ্খলা তৈরী করতে পারে না। এধরনের নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা এর নিন্দা জানাই। একুশে মিডিয়া।
No comments:
Post a Comment