![]() |
একুশে মিডিয়া, মোঃ আরিয়ান আরিফ, ভোলা:
জেলার ২০ লাখ মানুষের জন্য বর্তমানে ৫৬ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন ১১ জন। নেই কার্ডিওলজী কনসালটেন্ট ও সার্জারি কনসালটেন্ট। নেই প্যাথলজিস্ট ও রেডিওলজিস্ট। এমনকি নেই মেডিকেল অফিসারও । এ হলো ভোলা জেলার সদর হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা।
হাসপাতালটির এমন নাজুক অবস্থায় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন স্থানীয়রা। রোগীদের অপারেশনের জন্য উচ্চমূল্যে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে ঢাকা কিংবা বরিশালে। যাত্রাপথে প্রায়ই রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। ফলে দরিদ্র রোগীরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগী সালমা বেগেম বলেন, গর্ভবতী মহিলা বেশী বিপাকে পড়ছেন। তাদের চিকিৎসা হচ্ছেনা এ হাসপাতালে। বাধ্য হয়ে সিজারিয়ান অপারেশন করতে হচ্ছে ক্লিনিকগুলোতে। আর জটিল অপারেশ করতে হচ্ছে ভোলার বাইরে থেকে।
রোগীর স্বজন নাজনিন আক্তার বলেন, প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে রোগী আসলেও তাদের হস্তান্তর করা হয়। যারা দরিদ্র রোগী তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সহিদ তালুকদার একুশে মিডিয়াকে বলেন, ভোলার ২০লাখ মানুষের প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্র ভোলা সদর হাসপাতাল। এ সদর হাসপাতালে দিনের পর দিন কোনো অপারেশন হয়না। ডাক্তারের অভাবে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা মারাত্মক ঝুকিঁর মধ্যে পরেছে। সম্প্রতি হাসপাতালে ইলিশা থেকে আসা সাপেঁ কাটা এক রোগী ভ্যাকসিনের অভাবে মারা গেছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায় উপকূলীয় জেলা ভোলার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ভোলা সদর হাসপাতাল। ১৯৯৮ সালে হাসপাতালটি ৫০ থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও বাড়েনি এর জনবল। বর্তমানে হাসপাতালে ৫৬টি পদের বিপরীতে বর্তমানে চিকিৎসক রয়েছে মাত্র ১১জন ।
চিকিৎসকের পদের মধ্যে ৪৫টি শূন্য রয়েছে। বিশেষ করে নেই কার্ডিওলজী কনসালটেন্ট, সার্জারী কনসালটেন্ট, প্যাথলজিস্ট, রেডিওলজিস্ট সহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে কোনো চিকিৎসক নেই। এমনকি নেই মেডিক্যাল অফিসারও। হাসপাতালটিতে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করলেও মেলেনা চিকিৎকের দেখা। এছাড়াও নার্সসহ অন্যান্য জনবলেও তীব্র সংকট রয়েছে।
হাসপাতালের আরএমও ডা: তৈয়বুর রহমান একুশে মিডিয়াকে বলেন, ১০০ শয্যার হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন ভর্তি হয় ২০০ থেকে ৩০০ রোগী। আর আউট ডোরে চিকিৎসা নিতে আশে প্রতিদিন ৫০০-থেকে ৬০০ রোগী। এতো রোগীর সেবা দিতে গিয়ে ডাক্তার নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ভোলা সিভিল সার্জন ডা:রথীন্দ্র নাথ মজুমদার একুশে মিডিয়াকে বলেন, ভোলা বিচ্ছিন্ন জেলা তাই অনেক ডাক্তার এখানে পদায়ন হলেও আসতে চায়না। চিকিৎসক সংকট নিরসনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এছাড়া ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা গেলে কিছুটা সংকট নিরসন করা যাবে।
ভোলা জেলায় সাতটি উপজেলায় চিকিসৎকের ২০৯ টি পদ থাকলেও ১৫২ টি পদ শূন্য রয়েছে। মাত্র ৫৭ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে পুরো জেলার চিকিৎসা কার্যক্রম।
No comments:
Post a Comment