![]() |
সাজেদুল ইসলাম টিটু, পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রহিনিধি:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচার প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে জয়পুরহাট সদর ও পাঁচবিবি উপজেলা নিয়ে গঠিত জয়পুরহাট-১ আসন। আওয়ামীলীগ ও বিএনপির প্রায় দেড় ডজন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। কে পাচ্ছেন মনোনয়ন তা নিয়ে সর্বত্র চলছে জল্পনা কল্পনা ।
জয়পুরহাট-১ আসনটি ১৭টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫’শ ৩৬ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৯৯ হাজার ৪’শ ২১ জন এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৯ হাজার ১’শ ১৫ জন৷
বিএনপির দুর্গ হিসাবে খ্যাত এ আসনে ১৯৯১ , ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৯ সনে বিএনপির প্রার্থীরা বিপুল ভোটে বিজয়ী হোন।
২০১৪ সনে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু সংসদ সদস্য হন৷ পুনরায় মনোনয়ন পেতে ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন৷ তিনি দাবি করেন এলাকায় রাস্তাঘাট, বিদ্যুতায়ন, স্কুল, কলেজ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান উন্নয়নে কাজ করেছেন। সেই ফলশ্রুতিতে তিনি দল থেকে মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদী।
আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়নের চেষ্টা করছেন পাঁচবিবি পৌর সভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব৷ তিনি বলনে, ছাত্রলীগের নেতা হিসাবে রাজ পথে লড়াই সংগ্রামের মধ্যদিয়ে তৃনমূল কর্মীদের সুখ দুঃখে পাশে আছি। আমাকে মনোনয়ন দেয়া হলে নৌকা মার্কার বিজয় ছিনিয়ে আনবো। নেত্রী যদি আমার পরিবর্তে অন্য কাউকে মনোনয়ন দেন তবে আমি তার জন্যও কাজ করে যাব৷
জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল, এ্যাডভোকেট মোমিন আহম্মেদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এস,এম সোলায়মান আলী, অধ্যক্ষ খাজা সামছুল, সাবেক মহিলা সংরক্ষিত সাংসদ মাহফুজা মন্ডল রিনা,জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম রকেট,জয়পুরহাট পৌরসভার মেয়র মোস্তাক, দোগাছি ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ও জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুল ওয়াহেদ উজ্জল আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে জানা গেছে। মনোনয়ন নিশ্চিত করতে অনেকেই দলীয় হাই কমান্ডে চালিয়ে যাচ্ছেন জোড় লবিং। আওয়ামীলীগ নির্বাচনী শো-ডাউন ও প্রচারণা চালালেও বিএনপি অনেকটা নীরব।
বিএনপি নেতা কর্মীরা মনে করছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করাই প্রধান কাজ। সুষ্ঠ ভোট হলে এ আসন থেকে বিএনপি প্রার্থীর বিজয় অনেকটায় সুনিশ্চিত তাই প্রার্থীর সংখ্যাও বেশি।
১৯৯১ সনে এই আসন থেকে বিএনপির তরুণ নেতা গোলাম রব্বানী বিজয়ী হন।
তার বিপরীতে জামায়াতের হেভিওয়েট প্রার্থী কেন্দ্রীয় কমিটির তৎকালীন আমীর আব্বাস আলী খান ও আওয়ামীলীগের জেলা সভাপতি বর্ষিয়ান নেতা আব্বাস আলী মন্ডল পরাজিত হন৷
১৯৯৬ ও ২০০১ সনে আব্দুল আলীম এবং ২০০৯ সালে মোজাহার আলী প্রধান বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন।মোজাহার আলী প্রধানের মৃত্যুর পর এই আসনে মনোনয়ন পেতে দৌঁড়ঝাপ করছেন অনেকে।
মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফয়সল আলীম৷ তিনি মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রে জোড় চেষ্টা চালাচ্ছেন৷ মনোনয়ন পাবেন বলে তিনি আশাবাদী।
মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জয়পুরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ফজলুর রহমান৷ তিনি গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন৷ মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করছেন জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মমতাজ উদ্দিন মন্ডল, জেলা বিএনপির সহ সভাপতি অধ্যক্ষ সামছুল হক, সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট নাফিজুর রহমান পলাশ, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল গফুর মন্ডল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের সাবেক ডীন অধ্যাপক ড. আব্দুল হাই৷
মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রয়াত এমপি মোজাহার আলী প্রধানের ছেলে জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মাসুদ রানা প্রধান বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার আন্দোলনের অংশ হিসাবে এই নির্বাচনে আমি মনোনয়ন চাইবো। তিনি আরো বলেন, সর্বোচ্চ আন্দোলন, সংগ্রাম ও নির্যাতন মাথায় নিয়ে প্রয়াত বাবার রেখে যাওয়া স্বপ্ন জয়পুরহাটের উন্নয়নে কাজ করে যাব৷
এছাড়া বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রে যোগাযোগ করছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী পাঁচবিবি দানেজপুরের জামাই এস কে রাসেল। তিনি তরুণদের দলে ভিড়াতে ক্রীড়ানুষ্ঠান ও সামাজসেবা মূলক কাজ করে যাচ্ছেন৷
ইতোমধ্যে মনোনয়ন ফরম ক্রয় ও জমাদানের কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন প্রার্থীদের অনেকেই। তবে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বক্তব্য ধানের শীষ প্রতিক যেই পাবেন তার পক্ষেই কাজ করবেন৷
জমায়াত থেকে মনোনয়নের চেষ্টা করছেন জেলা জামায়াতের আমীর ডা. ফজলুর রহমান সাঈদ।
জাতীয় পার্টি থকেে মনোনয়ন প্রত্যাশী আ,স,ম মোক্তাদির তিতাস বলনে, ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাকে মহাজোট থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। তখনকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পল্লী বন্ধু হুসাইন মোঃ এরশাদের নির্দেশে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেছিলাম। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন।
এদিকে দিন যতই ঘনিয়ে আসছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌঁড়ঝাঁপ ততোই বাড়ছে। নিজেদের অবস্থান জানান দিতে লোকবল নিয়ে কেন্দ্রীয় নীতি নির্ধারকদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন অনেকেই।তবে কে পাবেন কাঙ্খিত টিকিট তা আর ক'দিন পরই জানা যাবে।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment