নড়াইলে বাদাম বিক্রির টাকায় পড়াশোনা করছে সপ্তম শ্রেণির অদম্য শিক্ষার্থী সাকিব।একুশে মিডিয়া - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Sunday 25 November 2018

নড়াইলে বাদাম বিক্রির টাকায় পড়াশোনা করছে সপ্তম শ্রেণির অদম্য শিক্ষার্থী সাকিব।একুশে মিডিয়া


উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি■:
বাদাম বিক্রির টাকায় পড়াশোনা করছে সপ্তম শ্রেণির অদম্য শিক্ষার্থী সাকিব! অন্য শিশুরা যখন পরিপাটি পোশাক পরে ক্লাসে মগ্ন থাকে। ঠিক তখন বাদামের ডালা গলায় ঝুলিয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়ায় সাকিব।
দিনমজুর বাবা দুই বছর আগে তাকে সাফ বলে দেন, তার পক্ষে পড়ার খরচ চালানো সম্ভব না। তখন সবে মাত্র পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র পরিবারের বড় ছেলে সাকিব। সে রাতে ঘুমাতে পারেনি, লেখাপড়া করা হবে না ভেবে অনেক কেঁদেছে। স্কুল তার ভালো লাগে, লেখাপড়া করতেই হবে। সিদ্ধান্ত নেয় কিছু একটা করার। তখনই মাথায় আসে বাদাম বিক্রির কথা।
তার বয়সী অনেককেই তো বাদাম বিক্রি করতে দেখেছে। সে না হয় পড়ার খরচের জন্য বাদাম বিক্রি করবে। এ ভাবনা থেকেই নাম লেখায় বাদাম বিক্রেতার খাতায়।
সপ্তাহে তিনদিন স্কুলে যায়, আর বাকি দিনগুলোতে ফেরি করে বাদাম বিক্রি করে সাকিব। নিজের লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোট দুই ভাই-বোনের পড়ার খরচও যোগান দিয়ে যাচ্ছে পল্লী মঙ্গল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এই অদম্য শিক্ষার্থী।
সে নড়াইলের আটলিয়া গ্রামের ইকবাল সিকদারের ছেলে। যে কোনো মূল্যে তাকে লেখাপড়া শিখতেই হবে। লেখাপড়া শেখাতে চায় ছোট বোন চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া ও প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছোট ভাইকেও। সাকিব বলে, বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি নেই তাদের। অসুস্থ বাবা দিনমজুরি দিয়ে সংসার চালান। শরীরও চলে না, আবার সব সময় কাজও থাকে না। যেদিন কাজ থাকে না সেদিন তাদের উপোস থাকতে হয়।
যেদিন তার পড়া বন্ধ করে দেওয়া হয়, সেদিন তার কাছে জমানো ছিলো ১০০ টাকা। পরদিন সেই টাকা দিয়ে বাদাম কিনে বাড়ি ফিরে পরিকল্পনার কথা জানায় মাকে। মাকে দিয়ে বাদাম ভাজিয়ে তা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে রাস্তায়। এখন সপ্তাহে তিনদিন স্কুলে যায় সে।
অন্য দিনগুলোতে ১৪ কিলোমিটার পারি দিয়ে নড়াইল শহরে হাজির হয় বাদাম বিক্রি করতে। দৈনিক ১২০ থেকে ২০০ টাকা আয় হয়। দুপুরে খেলে তেমন মুনাফা জমে না। এ কারণে এসব দিনে দুপুরে তাকে উপোস থাকতে হয়। সকালে বাড়ি থেকে খেয়ে বের হয়, আবার রাতে বাড়ি ফিরে খেয়ে ক্লান্ত শরীরে ভাইবোনদের সঙ্গে বই নিয়ে বসে।
তার বাবা ইকবাল সিকদার একুশে মিডিয়াকে বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে প্রতিদিন কাজ করতে পারেন না। দিনমজুরের কাজ করে পরিবারের পাঁচ সদস্যের খাবার জোগাড় করে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া করানো তার পক্ষে সম্ভব না। যে কারণে ছেলের লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এখন ছেলের আগ্রহ দেখে খুশি। তাই সমাজের বিত্তবানরা যদি সাকিবের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসে তাহলে হয়তবা সে জাতিকে ভালো কিছু উপহার দিতে সক্ষম হবে বলে মনে করেন তিনি।


একুশে মিডিয়া/এমএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages