জহরুল ইসলাম (জীবন) হরিপুর (ঠাকুরগাও) প্রতিনিধি:
আজ শুক্রবার ৭ই ডিসেম্বর জেলার হরিপুর উপজেলার চাঁপাসার তাজিগাঁও সীমান্তের নীভৃত গ্রাম টেংরিয়া গোবিন্দপুর কুলিক নদীর পারে পাথর কালি মেলায় বসেছিল বাংলাদেশ-ভারত মিলনমেলা। বংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত হাজার হাজার নারী-পুরুষ আবালবৃদ্ধ বলিতা ভারতে বসবাসরত তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ ও মনের ভাব আদান-প্রদানের জন্য সকাল থেকে ভীড় করতে থাকে এই মেলায়।
বৃটিশ আমল থেকেই আজকের এই দিনে ‘‘পাথরকালির মেলায়’’ নামে প্রতি বছর এখানে এক দিনের জন্য মেলা বসে আসছে। দেশ স্বাধীনের পর মেলাটি বাংলাদেশের অংশে পরলেও মেলায় ভরতীয়দের সীমান্তে উন্মমুক্ত করে দেয় ভারত। কোন প্রকার বাধা ছাড়াই ভারতীয়রা ঐ মেলায় আসতে পারে। হাজার হাজার ভারতীয় প্রতিবছরই মেলায় এসে বাংলাদেশে অবস্থানরত তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করে। খবরটি লোক মুখে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পরে। এতে বাংলাদেশের বসবাসরত হাজার হাজার মানুষ ভারতে বসবাসকারী তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সহজে দেখা করার জন্য এই দিনটি অপেক্ষা করতে থাকে। সাধারণত জানা গেছে, কালী পূজার কয়েক দিন পর প্রতিবছর এই মেলা বসানো হয়। আত্মীয়-স্বজনদের দেখা সাক্ষাৎ ও মনেরভাব আদা-প্রদানের জন্য দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ এই মেলায় আসে। এবারও স্বজনদের সাথে দেখা করতে গত কয়েকদিন ধরেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার লোক স্থানীয় আত্মীয়-স্বজদের বাড়িতে এসে আশ্রয় নেয়।
এছাড়াও শুক্রবার ভোর থেকে রিক্সা, ভ্যান, মটরসাইকেল, টেম্পু, মাইক্রো, বাস, নছিমন-করিমন, বাইসাইকেল, অটোগাড়ি যোগেও হাজার হাজার মানুষে এই মেলায় আসে। আজ ১০টায় ভারতের মাকড়হাট ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা সীমান্তের ৩৪৬ ও ৬৮ নং টিলারের মিন গেট না খুললেও তার কাটার বেড়ার পাশে দাড়িয়ে শুরু হয় দুই দেশের মানুষের দেখা সাক্ষাৎ ভাব বিনিময়।
প্রায় কয়েক ঘণ্টার অধিক সময় ধরে চলে স্বজনদের সাথে মতবিনিময়। কাটাতারের বেড়ার ফাঁক দিয়ে হাত ধরাধরি করে খাবার বিনিময় করে সময় কাটে তাদের। দীর্ঘদিন পর স্বজনদের পেয়ে অনেকেই কান্নাই ভেঙে পড়েন।
এই বিষয়ই হরিপুর থানার অফিসার ইনচার্য আমিরুল ইসলাম আমির বলেন, মেলায় আইন-শিঙ্খলার জন্য সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে স্থানীয়ভাবে গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় মেলাটি সুনামের সাথে প্রতিবছরই বসে থাকে তাই অন্যান্য বারের মতো এবারেও কোনরূপ অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ছাড়াই মেলা শেষ করা হবে।
মেলাস্থলে কথা হয় জেলা সদর থেকে আসা দানেস, সংগিতা রানি, দিনাজপুরের মিলন, শিলারানী, রমেস, শ্রীকান্ত, নীলফামারি জেলার বিমল, নারায়ণ, সুদীপ, আখিরানী পঞ্জগড়ের সুভাস জিতেন গোবিন্দগঞ্জের তমাবসাক, তনুরানী পীরগঞ্জের আলীম, মমিনাসহ অনেকে জানান, ভারতে বসবাসরত আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করার জন্যই তারা মেলায় আসেন। এই দিনটির জন্য প্রতিবছর তারা অপেক্ষা করেন বলেও জানান।
একুশে মিডিয়া/এমএ
No comments:
Post a Comment