উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি■:
নড়াইলে কালিয়া উপজেলার বিএনপির সভাপতি ও সালামাবাদ ইউনিযনের সাবেক চেয়ারম্যান সরদার আনোয়ার হোসেন (৬০) কে গ্রেফতার করেছে কালিয়া থানা পুলিশ। ভোরে তার নিজ গ্রাম জয়পুরস্থ বাড়ী থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কালিয়া থানার অফিসার ইনর্চাজ মোঃ আনোয়ার হোসেন গ্রেফতারের বিষয় স্বীকার করে একুশে মিডিয়াকে বলেন, আনোয়ার হোসেন নড়াগাতি একটি মামলার এজাহার নামীয় আসামী, তাই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, গত শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে কালিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খান শামীম রহমান বাদী হয়ে নড়াগাতি থানায় ৭৩ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় গত দু’দিনে বিএনপির ১৭ নেতাকর্মী ও সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, নড়াইল-১ আসনে নড়াগাতি থানার খাশিয়াল বাজারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থী ও সমর্থকদের সংর্ঘষে কালিয়া উপজেলার চেয়ারম্যান খান শামিমুর রহমানসহ ৫জন আহত হয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৬ ডিসেম্বর ৭৩ নাম উল্লেখ করে উপজেলার চেয়ারম্যান খান শামিমুর রহমার নড়াগাতি থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন। উক্ত মামলার এজাহার নামীয় আসামী সরদার আনোয়ার হোসেন। নড়াইল ১ আসনের বিএনপি প্রার্থী বিশ্বাস জাহাঙ্গির আলমের কালিয়া শহরের বাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিএনপি সমর্থকদের ৬-৭টি দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।
কালিয়া উপজেলার খাশিয়াল বাজারে বিএনপির নির্বাচনী কার্যালয়ের চেয়ার-টেবিল ভাংচুর করা হয়েছে। কালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা খান শামীমুর রহমান ওসিকে মারপিট করার অভিযোগে আ’লীগের নেতাকর্মীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে স্থানীয়রা জানান, ১৪ ডিসেম্বর সন্ধায় খাশিয়াল বাজারে বিএনপি কর্মীদের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলীগ নেতা খান শামীমুর রহমান ওসিকে বিএনপি কর্মীরা মারপিট করে।
এ ঘটনায় তিনিসহ আরও ২জন আহত হন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আলীগ নেতাকর্মীরা নড়াইল ১ আসনের বিএনপি প্রার্থী বিশ্বাস জাহাঙ্গির আলমের কালিয়া শহরের বাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগ করে। পরে নড়াইল থেকে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। এ সময় ধানের শীষের প্রায় ২ লক্ষ পোষ্টার পুড়ে যায়। এদিকে একই ঘটনায় উপজেলার খাশিয়াল বাজারে বিএনপির নির্বাচনী কার্যালয়ের চেয়ার টেবিল ভাংচুর করা হয়েছে এবং কার্যালয়ের পাশের কয়েকটি দোকানে ভাংচুর করা হয়।
এদিকে এ ঘটনায় উপজেলার জয়পুর মোড়ে বিএনপি কর্মী জাহাঙ্গির কাজী ও চুন্নু কাজীর মুদি দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিএনপি প্রার্থী বিশ্বাস জাহাঙ্গির আলমের বাড়িতে অবস্থানরত বিএনপি নেতা মো: ইকরামুল হক জুলু জানান, আলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী বিশ্বাস জাহাঙ্গির আলমের বাড়ির গেটের তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করে টিভি, ফ্রিজ, সোফা, গাসের চুলা, মটরসহ বিভিন্ন আসবার পত্র নিয়ে যায়।
এ সময় ঘরের জানালা দরজাসহ অন্যন্য আসবারপত্র ভাংচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় ধানের শীষের প্রায় ২ লক্ষ পোষ্টার পুড়ে যায়। এদিকে উজেলার জয়পুর মোড়ের মিজানুর কাজীর স্ত্রী আকাশি বেগম বলেন, বিএনপি করার অপরাধে তার দেবর জাহাঙ্গির কাজী ও চুন্নু কাজীর ২টি দোকান ভাংচুর করে প্রায় দেড় লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে আলীগের লোকজন। খাশিয়াল বাজার এলাকার তামিম জানান, ওসি খার (আলীগের) লোকজন তাদের নির্বাচনী কার্যলয়ের চিয়ার টেবিল ভাংচুর করেছে এসময় কার্যলয়ের পাশের কয়েকটি দোকানও ভাংচুর করা হয়।
এদিকে কালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা খান শামিমুর রহমান ওসিকে মারপিট করার প্রতিবাদে বড়দিয়া বাজারে দোকান পাঠ বন্ধ রেখে বিচারের দাবীতে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করে আলীগের লোকজন। মারপিটের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা খান শামিমুর রহমান ওসি বলেন তাকে হত্যা করার উদ্দেস্যে তার উপর এ হামলা করা হয়। বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট ও আগুন দেওয়ার ঘটনার সাথে তার বা তার দলের (আলীগ) লোকজন জড়িত নয় বলে জানান তিনি। বিএনপি প্রার্থী বিশ্বাস জাহাঙ্গির আলম জানান, তার নিজ বাড়িসহ নেতাকর্মীদের দোকানপাট ও নির্বাচনী কার্যালয় ভাংঙচুর করা হয়েছে। তার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। নির্বাচন থেকে তাকে সরিয়ে রাখতেই এ সব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনুরোধ করেছেন তিনি। নড়াগাতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন একুশে মিডিয়াকে বলেন, এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিত স্বাভাবিক আছে। কোন পক্ষ থেকে মামলা দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনিয় ব্যাবস্থা নিব। কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নিব।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment