একুশে মিডিয়া, মুক্তমত রিপোর্ট:
লেখক: ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ:
প্রোস্টেট একটি নলাকার, বায়ুস্থলী গ্রন্থি ইহা পুরুষদের ইন্টারনাল অর্গানের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ প্রস্টেট । এটা না থাকলে মানুষের জীবন শুধু ঝুঁকিপূর্ণ হয় তাই নয়, পুরুষের সুখময় দাম্পত্য জীবনে প্রোষ্টেট-এর রয়েছে এক অনবদ্য ভূমিকা। এই প্রস্টেট- এর নানা সমস্যা, নানা রোগ রয়েছে, তাই আজ এই প্রোস্টট নিয়ে আলোচনা করবো,
প্রোস্টেট কাকে বলেঃপ্রস্টট গ্রন্থিটি দেখতে অনেকটা বড় কাজু বাদামের মত,ইহা থাকে মূএথলির ঠিক নীচে।এতে এসে প্রবেশ করে শুক্রবাহীনালী ও মূএনালী।ইহার একটি নিজস্ব নিঃসরণ আছে।এছাড়াওইহার সংগে এসে মিলিত হয় বীর্যস্থলির রস ও শুক্ররস।ইহাতে আছে অনেক গ্ল্যান্ড,ভাকট এবং পেশী।ইহার উপরের অংশকে কার্টেক্স বলে।প্রস্টেট গ্রন্থিটি বেশ শক্ত বলে মনে হয় তবে ইহা আকারে অনেক সময় ছোট বড় হতে পারে।ইহা মূএথলির গ্রীবা দেশের যে স্থান হতে মূএনালী আরম্ভ হয়েছে সেই গ্রীবাদেশকে ইহা বেষ্টন করে আছে। প্রষ্টেট গ্ল্যান্ড হতে দুধের মত অথবা বর্ণহীন একপ্রকার তরল রস নিঃসরণ হয় সেই রস সংগমকালীন রেত প্রবাহকে সহায়ত করে। কোন কারনে এই প্রষ্টেট গ্ল্যান্ডের প্রদাহ হলে তাকে বলে প্রষ্টাইটিস। এই পীড়ায় অনেক সময় রোগীর মূএবন্ধ হয়ে যেতে পারে।
কারণঃ
বহুবিধ কারণে প্রষ্টট গ্রন্থির প্রদাহ হতে পারে,যেমন কোন আঘাত লেগে,সাইকেল,স্কুটার,ঘোড়া চড়ার সময় কোন শক্ত জিনিসের উপর বসা,হস্থমৈথুন ইত্যাদি কারণে এই রোগ হতে পারে। এ ছাড়া প্রষ্টেট গ্রন্থির নিকটস্থ কেন যন্ত্রের প্রদাহ হতে যেমন,ইউরেথ্রাইটিস,মূএথলিতে পাথরী,মূএনালীর সংকোচন,বাত,গেটে বাত,সিফিলিস গনোরিয়া এবং কোন উওেজক ঔষধ সেবন ইত্যাদি কারণে ও ইহা হতে পারে।অনেক সময় প্রস্রাব দোষ নিবারণের জন্য বিভিন্ন প্রকারের উওেজক ঔষধ দিনের পর দিন ব্যাপক মাএায় ব্যবহার করার ফলে এই রোগ বেশি দেখা দেয়।
লক্ষণঃ
১)রোগীর ক্রমাগত কষ্টকর প্রসাবের বেগ হয়,বার বার প্রসাব ত্যাগের চেষ্টা করে কিন্তু অতি সামান্য নিঃসরণ হয়।
২)অনেকবার কুন্থনের পর ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব পড়ে। প্রত্যেকবারই এই প্রকার নিস্ফল চেষ্টার পর ক্রমশ যন্ত্রণার বৃদ্ধি।
৩)প্রসাব মূএথলির মধ্যে আবদ্ধ থাকে বলে প্রদাহের মাএা বৃদ্ধি পায় এবং রোগী যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে চিৎকার করতে থাকে।
৪)প্রষ্টেট গ্ল্যান্ড স্ফীত হয়ে উঠার জন্য রেক্টামের উপর প্রচন্ড চাপ পড়ে এবং ইহার ফলে রোগীর মলত্যাগের ও কষ্ট হয়।
৫)প্রষ্টেট গ্রন্থি প্রদাহিত হলে রোগী মূএথলির গ্রীবাদেশে বেদনা অনুভব করে,আক্রান্ত স্থান গরম হয়, পেরিনিয়াম ও রেক্টামে একপ্রকার দপদপানি বেদনা থাকে। এই বেদনা ও যন্ত্রণা ধীরে ধীরে কোমর ও পায়ের দিকে প্রসারিত হয়।
বিশেষকরে চল্লিশোর্ধ পুরুষের বছরে অন্ততঃ একবার অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি প্রস্টেট-পরীক্ষা করানো উচিত।
এই সব উপসর্গ থাকলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নিশ্চিত করতে হয়। সাধারণত
যে সব পরীক্ষা করা হয় তা হলো প্রস্রাবের রুটিন, মাইক্রোসকপিক ও কালচার সেনটিভিটি পরীক্ষা, আল্ট্রাসোনোগ্রাম, কে, ইউ বি এক্সরে-ইউরোফ্লোমেট্রি, সিরাম পি.এস.এ সটোমেট্রাগ্রাম বা ইরোডাইনামিক ষ্ট্যাডি ইত্যাদি।
প্রস্টেটের গ্রন্থির সমস্যার ক্ষেত্রে দুই ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়। একটি হলো ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে এবং অন্যটি হলো অপারেশন করে। অপারেশন আবার দুই প্রকার একটি প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে যন্ত্রের সাহায্যে অন্যটি পেট কেটে। কোন রোগী কোন পদ্ধতির জন্য উপযুক্ত তা চিকিৎসক নির্ধারণ করবেন।
হোমিওপ্রতিবিধানঃ
রোগ নয় রোগীকে চিকিৎসা করা হয়, এই জন্য এক জন অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসক রোগীর রোগের সকল লক্ষণ নির্বাচন করতে পারলে তাহলে আল্লাহর রহমতে প্রষ্টেট গ্রন্থি রোগীর চিকিৎসা দেয়া হোমিও চিকিৎসায় সমম্ভ
ক্ষেত্রে বিশেষে প্রস্টেট বৃদ্ধি জনিত উপসর্গসমূহ ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে উপশম লাভ করা যায়। সাদারণত দু'গ্রুপের ওষুধ প্রয়োগ করা যায়। এর এক গ্রুপ ওষুধ প্রস্টেটের মাংশপেশীসমূহ শিথিল করে প্রস্রাবের বাধা দূর করে।
লেখক: ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা,হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটি কেন্দ্রীয় কমিটি
কো-চেয়ারম্যান,হোমিওবিজ্ঞান গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
ইমেইলঃdrmazed96@gmail.com
No comments:
Post a Comment