এবিএস রনি, যশোর জেলা প্রতিনিধি:>>>
জাতীয় পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে যশোর জেলার শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম মসিউর রহমান পুলিশের আইজি পদক অর্জন করেন। তিনি চাকরিতে যোগদানের পর থেকে জঙ্গিবাদ ও নাশকতা দমন, অস্ত্র উদ্ধার, আইন শৃংখলার উন্নতি, সন্ত্রাস দমন, চোরাচালান পণ্য উদ্ধার, মাদক ব্যবসা নির্মূলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখেন।
বলা বাহুল্য যে, শার্শা থানায় যোগদানের পর থেকে ২টি বিদেশীসহ ৫টি পিস্তল, ১টি এয়ার পিস্তল, ১টি রিভলভার, ৪৩টি ওয়ান শুটারগান, ৭টি ম্যাগাজিন, ৭৪রাউন্ড গুলি, ৯৯টি অবিষ্ফোরিত হাত বোমা, ২৫টি পেট্রোল বোমা, দেশীয় অস্ত্রসহ ৯০জন আসামী গ্রেফতার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করতে সক্ষম হন।
এসময় শার্শা থানা থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ৩২কেজি হেরোইন, ১০হাজার বোতল ফেন্সিডিল, ৬৮কেজি গাঁজা, ৫০হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ১২৯ বোতল মদ, ৭২লিটার দেশী মদ, ৭৬কেজি স্বর্ণ, ৩হাজার কেজি ভারতীয় চাপাতি, ২০টি ভারতীয় গরু, ৭টি ট্রাক, ৪টি প্রাইভেট কার, ১১টি মটরসাইকেল, ৩টি নছিমন, ২টি ব্যাটারী চালিত ভ্যানগাড়ীসহ ভারতীয় পেষ্ট, শাড়ী, থ্রী-পিস, চাদর, স্যান্ডেল, চুড়ি ও বিভিন্ন প্রকার বীজ।
এ সংক্রান্ত কাজে জড়িত থাকার অপরাধে ১৫৮৭ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তার অক্লান্ত পরিশ্রম ও দক্ষ পুলিশী পদক্ষেপের কারণে তিনি ১২ জন আন্ত:জেলা ডাকাত গ্রেফতার করে তাদের নিকট হতে অস্ত্র উদ্ধার করার ফলে এলাকার লোকজন ডাকাতির কবল হতে পরিত্রাণ পায়। এহেন দক্ষ তৎপরতা ও নিরলস প্রচেষ্টায় চিহ্নিত অপরাধী, সন্ত্রাসী ও নাশকতাকারীদের গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।
দূরদর্শিতা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে যশোর জেলার শার্শা থানাধীন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক বিক্রেতাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। এ ধরণের কাজের মাধ্যমে এলাকায় মাদক মুক্তসহ সুন্দর পরিবেশের সৃষ্টি হওয়ার ফলে পুলিশী কার্যক্রম সমাজে সমাদৃত হয়ে পুলিশের ভাবমূর্তিকে আরো উজ্জ্বল করেছে।
মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেন। সম্প্রতি তিনি নারী ও শিশুবান্ধব ডেক্স চালু করেন এবং শার্শা থানাকে একেবারেই মাদকমুক্ত করার জন্য পাইলট প্রজেক্ট হাতে নেন। এসব মিলিয়ে কর্ম দক্ষতার গুণে তিনি এই বিশেষ সম্মামনা পদকে ভূষিত হয়েছেন।
প্রকাশ থাকে যে, যশোর জেলার শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম মসিউর রহমান ১৯৯১সালের ৮জানুয়ারী বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ঢাকা ডিএমপিতে এসআই হিসাবে যোগদান করেন। তিনি চাকরি জীবনে ঢাকা ডিএমপি, কুষ্টিয়া, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম, ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুর, খুলনা ও সর্বশেষ যশোর জেলার শার্শা থানায় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসাবে কর্মরত আছেন।
কর্মজীবনে এম মসিউর রহমান ১৯৯১ সালে পুলিশের এসআই এবং সর্বশেষ ২০০৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী পুলিশ পরিদর্শক হিসাবে ঢাকায় পদোন্নতি পান। তিনি ২০১৭ সালের ১০ আগষ্ট শার্শা থানায় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসাবে যোগদান করেন। শার্শা থানায় যোগদান করার পর থেকেই সন্ত্রাসী ও কুখ্যাত মাদক সম্রাটদের কাছে এক মূর্তিমান আতংক হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে। প্রমাণ স্বরুপ বিশিষ্ট শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী দুখেকে আটক করতে সক্ষম হন। তাছাড়া এ অঞ্চলের কুখ্যাত মাদক সম্রাটদের বেশ কয়েকজনকে নির্মূল করতে সক্ষম হয়। শার্শা সদর ইউনিয়নের ইসলামপুরের চাঞ্চল্যকর সিএ্যান্ডএফ কর্মচারী খুনের ঘটনায় ১২ ঘন্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করে আসামীদের গ্রেফতার করেন। আর এই সব বিষয় বিবেচনা করেই তাকে আইজি পদকে ভূষিত করেছেন।
তিনি ব্যক্তিগতভাবে শার্শা থানায় কর্মরত অবস্থায় আইন-শৃংখলা, মাদকদ্রব্য নির্মূল, জঙ্গিবাদ দমন ইত্যাদির উপর যশোর জেলার মধ্যে ৬ বার শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ নির্বাচিত হয়েছেন। গোপালগঞ্জ জেলার মকছেদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের এম মসিউর রহমান পারিবারিক জীবনে ১ ছেলে ও ১ কন্যা সন্তানের সফল গর্বিত পিতা।
শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম মসিউর রহমানের নিকট প্রতিবেদক জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এলাকার মানুষকে সেবা দিতে চাই। ভাল-মন্দ, সুখে-দুখে থেকে তাদের ভালবাসায় বিশ্বাসী হওয়ার জন্য আজ আমার এ অর্জন। আমার পুলিশের আইজি পদক অর্জন করা সম্ভব হয়েছে শুধু আমার সহকর্মীদের কার্যক্রম, জনগণ, সাংবাদিক ও সবার সহযোগীতায়।
একুশে মিডিয়া/এমএ
No comments:
Post a Comment