একুশে মিডিয়া, রাবি প্রতিনিধি:>>>
রাজশাহী ইসলামীয়া কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী সুমাইয়া আক্তারকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর খোলা চিঠি লিখেছেন তার মামা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান সিনহা। মঙ্গলবার সিনহার ভেরিফাইড ফেসবুক টাইমলাইনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অসুস্থ ভাগ্নির চিকিৎসা ব্যয় বহনের আহ্বান জানিয়ে স্ট্যাটাস দেন।
সুমাইয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ধরা পড়ে দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে সুমাইয়ার। সুমাইয়ার বাড়ি নগরীর মতিহার থানার বুধপাড়া এলাকায়। সুমাইয়ার বাবা সেলিম রেজার সম্বল বলতে বাড়ির ভিটে আর সিংগাড়া পুরির দোকান। অল্প আয়ে কোনোরকমে চলে তাদের সংসার। তবে হঠাৎ সুমাইয়ার কিডনির সমস্যা ধরা পরায় এখন কুলকিনারা পাচ্ছেন না তারা।
বর্তমানে পিজি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছে সুমাইয়াসহ তাঁর পরিবার। এর আগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে।
সুমাইয়ার মামা সিনহা বলেন, দুইটা উপায় আছে। তার মধ্যে একটি হলো প্রতিমাসে ডায়ালাইসিস করা। অন্যটি কিডনি প্রতিস্থাপন। কিডনি প্রতিস্থাপন করতে ৬/৭ লাখ টাকা প্রয়োজন। প্রতিমাসে ডায়ালাইসিস করতে ২০-২৫ হাজার টাকার প্রয়োজন হবে। দরিদ্র বাবাকে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। তার পক্ষে এতবড় ব্যয় বহন করা সম্ভব হবে না।
মিজানুর রহমান সিনহার লেখা খোলা চিঠির কিছু অংশ তুলে ধরা হল ‘প্রিয় নেত্রী আজ খুব দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনার উদেশ্যে আমার এই খোলা চিঠি। চিঠিটা লেখার সময় আমার দু’চোখ বেয়ে অঝোরে জ্বল ঝড়ছে। কারণ আমার বড় বোনের মেয়ে মোসা. সুমাইয়া আক্তার রুম্পা (১৮), পিতা সেলিম রেজা, গ্রাম নতুন বুধপাড়া, পোষ্ট বুধপাড়া, থানা মতিহার, জেলা রাজশাহী। সে রাবি সংলগ্ন বিনোদপুর ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজের ২য় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী। তার দুইটা কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। তাকে সুস্থ করে তুলতে হলে প্রচুর টাকার প্রয়োজন। এমতাবস্থায় তার পরিবারের পক্ষে তার চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না। কারন তার পিতা একজন চা বিক্রেতা। যার ফলে আমার ভাগ্নীর চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ভাবে টাকা তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
হে বঙ্গকন্যা, আজ অনেক কষ্ট নিয়ে কথাগুলো বলছি, ভাগ্নীর চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়ে ফেসবুক এ স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম, ছাত্রলীগের ছোট ভাইগুলোকে টাকা তুলতে বলেছিলাম, তারা তুলেছে এখনও তুলছে...
প্রিয় নেত্রী, বড় কষ্ট লাগে যখন দেখি আমাদের ক্যাম্পাসের ১৭ টা হল ৫৭ টা বিভাগ ৩৬ হাজার শিক্ষার্থী ১২০০ বেশি শিক্ষক থাকার পরেও টাকা উঠে ২৫/৩০ হাজার টাকা। যেখানে আমি নিজে ও অনেক মানুষের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে দিয়েছি এই ক্যাম্পাস থেকেই। সেখানে আমার ভাগ্নীর বেলায় টাকা উঠে না কেনো আমি ছাত্রলীগ বলে অসুস্থ মেয়েটা ছাত্রলীগ নেতার ভাগ্নী বলে???
প্রিয় আপা, আমি জানিনা আমার মত এই ক্ষুদ্র কর্মীর এই লিখা আপনার নিকট পৌছাবে কিনা? বা আপনি আমার এই চিঠিটি দেখবেন কিনা। তবে আমার বিশ্বাস আমার এই লেখা আপনি পরবেন কোন না কোন মাধ্যমে। আর আমি এটাও বিশ্বাস করি আপনি নিশ্চয় আমার ভাগ্নির জন্য আপনার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিবেন। আর যদি আপনার নিকট আমার এই লেখা না যায়, আর এই লেখা পড়েও যদি কোন হৃদয়বান ব্যক্তির দয়া না হয় মেয়েটির উপর তাহলে মনে হয়ে মেয়েটিকে বাঁচাতে পারবো না। তাই দয়া করে মেয়েটিকে বাঁচান, দয়া করুন।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment