মো: জহরুল ইসলাম (জীবন) হরিপুর, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:>>>
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ইট ভাটাগুলোতে কয়লার পরিবর্তে জালানি হিসেবে অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। এতে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। প্রকাশ্যে এত কাঠ পোড়ানো হলেও প্রশাসন ভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
অজ্ঞাত কারণে স্থানীয় প্রশাসন রয়েছে নীরব। ইট ভাটাগুলোতে কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানোর ফলে বৃক্ষশুন্য হয়ে পড়ছে হরিপুর উপজেলার গ্রামাঞ্চল।পরিবেশের দিক বিবেচনা না করে যততত্র গড়ে উঠেছে ইট ভাটা। এসব ইটভাটার কালো ধোয়ায় এলাকার মানুষের মাঝে নানা ধরণের রোগব্যাধিও ছড়িয়ে পড়ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হরিপুর উপজেলার জামুন, ধীরগঞ্জ, ভেটনা ও ভবানন্দপুর এলাকায় কৃষি জমির উপর গড়ে তোলা হয়েছে ৬টি ইটভাটা । অবাধে কৃষি জমি থেকে মাটি তুলে বিশালকার স্তুুপ করা হয়েছে এসব ইট ভাটায়। পাশেই কাঁচা ইট তৈরি করছেন কারিগরেরা। ভাটাগুলোতে গত ডিসেম্বর মাস থেকে ইট পোড়ানো শুরু হয়েছে। আর কয়লার পরিবর্তে জ্বালানি হিসেবে প্রকাশ্যে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে উপজেলার ৬টি ইট ভাটায়। এতে দেখার কেউ নেই।
সুত্রমতে ইট ভাটায় একবার ইট পোড়াতে ৪ হাজার মণ কাঠ পোড়াতে হয়। আর এসব কাঠ আগে থেকেই ভাটার মালিকগণ তাদের বিভিন্ন স্থানে মজুত করে রেখেছে। বর্তমানে উপজেলার ৬টি ইট ভাটায় যে পরিমাণে কাঠ মজুত রয়েছে আনুমানিক তা ৩ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি হবে।
২০১৩ সালের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইনের ৮ ধারায় বলা হয়েছে, আবাসিক এলাকা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর অথবা কৃষিজমি এলাকায় ইটভাটা নির্মাণ করতে পারবে না।
কেউ যদি আইন লঙ্ঘন করে নিষিদ্ধ এলাকায় ইটভাট স্থাপন করেন, তাহলে তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বছরের কারাদন্ড অথবা অনধিক ৫ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। কিন্তু কোন ইটভাটার মালিক সরকারি আইনকে তোয়াক্কা না করে বে- আইনীভাবে তারা ভাটার কাজকর্ম করে চালিয়ে যাচ্ছে।
ভাটাগুলোতে অবাধে কাঠ পোড়ানোর বিষয়ে এম এইচ আর বি ভাটার মালিক হবিবুর রহমানকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কাঠ পোড়ার কথা স্বীকার করে বলেন, সবাই কাঠ পোড়াচ্ছে তাই আমিও কাঠ পোড়াচ্ছি। কাঠ পোড়ানোর বিষয়ে আর বি ভাটার মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে কয়লা সংকটের কারণে কাঠ পোড়াচ্ছি।
কয়লা পাওয়া গেলে কাঠ পোড়া বন্ধ করে দিবো।কাঠ পোড়ানোর বিষয়ে এস বি ভাটার সত্ত্বাধিকার বশির বলেন, কয়লা না পাওয়ার কারণে কাট পোড়াইতাম। বর্তমানে কয়লা পোড়াচ্ছি। তবে সরেজমিনে দেখা যায় উপজেলার প্রতিটি ইটভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ইট ভাটাগুলোতে অবাধে কাঠ পোড়ানো বিষয়ে হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এমজে আরিফ বেগ কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমি ইট ভাটা মালিকদের মৌখিকভাবে কাঠ না পেড়ানোর জন্য শতর্ক করেছি।তারা কাঠ পোড়াতে অব্যাহত থাকলে জেলা প্রশাসক স্যারের সাথে কথা বলবো।
একুশে মিডিয়া/এমএ
No comments:
Post a Comment