হারিয়ে যাচ্ছে নড়াইলের ঐতিহ্যবাহী চাটাই, কুলা, ঝুড়ি ও ডোল!। একুশে মিডিয়া - Ekushey Media bangla newspaper

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Saturday 23 February 2019

হারিয়ে যাচ্ছে নড়াইলের ঐতিহ্যবাহী চাটাই, কুলা, ঝুড়ি ও ডোল!। একুশে মিডিয়া


উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি■:>>>
গ্রামীণ জনপদে একসময় বাঁশঝাড় ছিল না এমনটা কল্পনাও করা যেতো না। যেখানে গ্রাম সেখানে বাঁশঝাড় এমনটিই ছিল স্বাভাবিক। বাড়ির পাশে বাঁশঝাড় বেত বনের ঐতিহ্য গ্রাম বাংলার চিরায়ত রূপ। জনজীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেত শিল্প।
এক সময় গ্রামীণ জনপদে বাংলার ঘরে ঘরে তৈরি হতো হাজারো পণ্য সামগ্রী। ঘরের কাছের ঝাড় থেকে তরতাজা বাঁশ কেটে গৃহিণীরা তৈরী করতেন হরেক রকম জিনিস। আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান, অনেকে এ দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। দরিদ্র পরিবারের অনেকের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ছিলো এগুলো। কিন্তু আজ ক’টি গ্রামে এ হস্তশিল্পটি উপার্জনের পেশা হিসেবে বেঁচে আছে তা ভাবনার বিষয়।
এ শিল্পের সাথে জড়িত অনেকেই বাপ-দাদার আমলের পেশা ত্যাগ করে অন্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছেন। আগে বাঁশ ও বেতের তৈরি জিনিসের কদর ছিল। চেয়ার, টেবিল, বইয়ের সেলফ, মোড়া, কুলা, ঝুড়ি, ডোল, চাটাই থেকে শুরু করে এমনকি ড্রইং রুমের আসবাবপত্র তৈরিতেও বাঁশ ও বেত প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করা হতো। এ ছাড়া মাছ ধরার পলো, হাঁস, মুরগীর খাঁচা, শিশুদের ঘুম পাড়ানোর দোলনা এখনো বিভিন্ন স্থানে ব্যাপকভাবে সমাদৃত।
একসময় বিভিন্ন ইউনিয়নের অঞ্চলে বিপুল পরিমাণে এসব বাঁশ ও বেতের সামগ্রী তৈরী হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান হয়ে যেতো। এখন সচরাচর গ্রামীণ উৎসব বা মেলাতেও বাঁশ ও বেতজাত শিল্পীদের তৈরি উন্নতমানের খোল, চাটাই, খালুই, ধামা, দোয়াড়, আড়ি, টোনা, আড়, হাপটা, মোড়া, বুকসেলফ চোখে পড়ে খুব কম। যেখানে তালপাতার হাত পাখারই কদর নেই, সেখানে অন্যগুলো তো পরের কথা।
প্রান্তিক পর্যায়ে বিদ্যুৎ সুবিধা যেমন হাত পাখার চাহিদা কমিয়েছে তেমনি মৎস্য শিকার, চাষাবাদ, ঘরের যাবতীয় আসবাবপত্র সকল ক্ষেত্রেই কমেছে বাঁশ আর বেত জাতীয় হস্তশিল্পের কদর। প্রকৃতপক্ষে বাঁশ বেতের স্থান অনেকটাই প্লাস্টিক সামগ্রী দখল করে নিয়েছে। তাছাড়া এখন বাঁশ ও বেতের উৎপাদন কমে যাওয়ায় এর দামও বেড়ে গেছে। ফলে বাঁশ ও বেতের সামগ্রীর ব্যয়ও বেশি হচ্ছে।
সৌখিন মানুষ ঘরে বাঙালির ঐতিহ্য প্রদর্শনের জন্য বাঁশ বেতের সামগ্রী বেশি দাম দিয়ে কিনলেও মূলত ব্যবহারকারীরা বেশি দাম দিতে চান না। স্বল্প আয়ের মানুষেরা সমিতি থেকে সুদের বিনিময়ে টাকা নিয়ে বাঁশ ও বেতজাত দ্রব্যসামগ্রী তৈরি করে বিক্রি করলেও এতে তাদের খরচ পোষায় না। এর ফলে তারা অন্য পেশায় আকৃষ্ট হচ্ছে।
প্রকৃতপক্ষে বাঁশ ও বেতের সামগ্রী যারা তৈরি করছে তাদেরকে সরকার এবং বিভিন্ন এনজিও’র সহায়তা করা অত্যন্ত জরুরী। বাংলার ঐতিহ্য বাঁশ ও বেতের সামগ্রীকে টিকিয়ে রাখতে হলে এর পেছনের মানুষগুলোকে আর্থিক সাহায্যের মাধ্যমে তাদের পেশাকে বাঁচাতে হবে। অন্যথায় এসব সুন্দর বাঁশ ও বেতের হস্তশিল্প একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বাঁশ ও বেত শিল্পকে বাঁচাতে আমাদের সবার এগিয়ে আসা উচিত।




একুশে মিডিয়া/এমএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages