মো: মনিরুল ইসলাম, কুতুবদিয়া:>>>
কক্সবাজার জেলাধীন সাগর কন্যা দ্বীপ কুতুবদিয়ার ধূরুং ছমদিয়া আলিম মাদরাসায় মাদরাসার অধ্যক্ষ আবু মুছা এর সভাপতিত্বে হল রুমে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা মুজিব নগর দিবসের বর্ণনায় বলেন-
১৯৭১ সালের ১৭ ই এপ্রিল বর্তমান মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলার এক আম্রবাগানে (পরবর্তী নাম মুজিবনগর) স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহন করে। শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান শুরু হয় বেলা ১১টায়। ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন ।
সৈয়দ নজরুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার গঠনের কথা ঘোষনা করেন অতঃপর তিনি বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষনা করেন এবং পরিচয় করিয়ে দেন।
ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভাষণ দেন এবং পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
মুজিবনগর সরকার:
রাষ্ট্রপতি: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি)
উপরাষ্ট্রপতি: সৈয়দ নজরূল ইসলাম (রাষ্ট্রপতির অনুপুস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন)
প্রধানমন্ত্রী: তাজউদ্দিন আহমদ
আইন ও পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী: খোন্দকার মোশতাক আহমদ (পরবর্তীতে জাতির সাথে বেইমানী করেছে)
অর্থমন্ত্রী: এম. মনসুর আলী
স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী: এ. এইচ. এম কামারুজ্জামান
সশস্ত্রবাহিনী প্রধান: জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী ।
আজ ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে আজ এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল কুষ্টিয়া জেলার তদানীন্তন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে -সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রথম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। এর আগে ১০ এপ্রিল গঠন করা হয় অস্থায়ী সরকার। ১৭ এপ্রিল আম্রকাননে পাঠ করা হয় ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গঠিত বাংলাদেশ সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র। তখন থেকে এই স্থানটি মুজিবনগর নামে পরিচিতি পায়।
প্রসঙ্গত, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকচক্র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং বেআইনিভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বন্ধ ঘোষণা করে। পরবর্তীতে ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ন্যায়-নীতিবর্হিভূত আক্রমণ শুরু করলে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে শেখ মুজিবুর রহমান ওয়ারলেসের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ১০ এপ্রিল মেহেরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকার মুক্তাঞ্চলে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এক বিশেষ অধিবেশনে মিলিত হন এবং স্বাধীন-সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করেন। এই অধিবেশনে দেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুমোদন ও বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দিন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে গঠিত হয় বাংলাদেশ সরকার। রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকায় তার অনুপস্থিতিতে উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে করা হয় অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি।
অত্র মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও রচনা প্রতিযোগিতা পরবর্তী ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবসের তাত্পর্য তুলে ধরে আরো বক্তব্য রাখেন অত্র মাদ্রাসার শিক্ষক জনাব মাষ্টার জাকের হোসেন, জনাব মাষ্টার আবদুল হক ও জনাব মাষ্টার আবদুল হামিদ ।
আরো উপস্থিত ছিলেন- অত্র মাদরাসার শিক্ষক মাও: নজরুল ইসলাম, মাও: আমির হোছাইন, মাষ্টার নজরুল ইসলাম, অভিভাবক, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ শিক্ষার্থীবৃন্দ।
No comments:
Post a Comment