এবিএস রনি, যশোর জেলা প্রতিনিধি:>>>
রাত পোহালেই বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। আর বাংলা ১৪২৬ সনকে বরণ করে নিতে পুরোপুরি প্রস্তুত যশোর। এবারের পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করছে জেলার সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো।
সকল প্রস্তুততি সম্পন্ন করেছে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন। বরাবরের মতো এবারো যশোরের সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলো তাদের নিমন্ত্রন পত্রে এনছে ভিন্নতা, নিমন্ত্রন পত্রেরর মধ্যে তুলে ধরা হয়েছে হাজার বছরের বাঙ্গারীর ঐতিহ্য। বরাবরের ন্যায় এবারর জেলা প্রশাসন চত্ত্বর থেকে সকল সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠা মিলে এক সাথে বের করবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। চলবে পান্তা উৎসবসহ সপ্তাহ ব্যাপি বৈশাখী অনুষ্ঠান।
যশোরের শীর্ষ সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচী এবারও শহরের পৌর উদ্যানের সবুজ চত্বরে ভোর ৬টা ৩১ মিনিটে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সুচনা করবে। কয়েক ঘন্টাব্যাপী ধরে চলবে উদীচীর এই বর্ষবরণ উৎসব। এতে ছড়া, কবিতা, নাচ, গান ও গীতিনৃত্যনাট্য পরিবেশন করবে উদীচীর শিল্পীরা।
এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের গানে পঞ্চ কবির গান অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, অতুল প্রসাদ সেন, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ও রজনীকান্ত সেনের বিভিন্ন ধরনের গান প্রাধান্য পাচ্ছে। উৎসব মঞ্চে লোকজ নৃত্যের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ধ্রুপদী ও আধুনিক নাচ পরিবেশিত হবে। এছাড়া বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে মঞ্চায়িত হবে পয়তাল্লিশ মিনিটের গীতিনৃত্য নাট্য ‘বাঙলার কথা বাঙালির কথা’। উদীচী যশোরের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খান বিপ্লব জানান, বৃটিশ আমল থেকে একাত্তর সাল পর্যন্ত রাজনীতির নানান পটপরিবর্তন উপজীব্য করে সাজানো হয়েছে নৃত্যনাট্যটি।
জানা গেছে, এবার বৈশাখবরণ অনুষ্ঠানে তিন জনকে সন্মাননা জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে উদীচী যশোর। সংগঠনটির যশোর জেলা শাখার উপদেষ্টা এবং স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যকে সন্মাননা জানানো হবে। এছাড়া রবীন্দ্র সংগীত প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জনকারী শিল্পী ওয়াজিয় তাসমিন ও পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পাওয়া যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারিন তাসমিন সাইমাকে সন্মাননা জানানো হচ্ছে।
এবার সাংস্কৃতিক সংগঠন চাঁদের হাট ও পুনশ্চ বর্ষবরণের পাশাপাশি ৩০ চৈত্র বর্ষবিদায়ের অনুষ্ঠান করবে। এবার চাঁদের হাট তাদের নিমন্ত্রন পত্রের সাথে উপহার হিসেবে দিচ্ছেন খঞ্জন। চাঁদের হাটের কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম উজ্জ্বল বলেন আমরা যশোর কালেক্টরেট পার্কে ৩০ শে চৈত্র বর্ষ বিদায় এবং পহেলা বৈশাখ বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি।
পুনশ্চর সুকুমার দাস বলেন, পহেলা বৈশাখের সকালে সংগঠনের কার্যালয়ে বন্ধুবন্ধনের পাশাপাশি চলবে মিষ্টিমুখ। বিকালে জেলা স্কুল মাঠে হবে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান।
এদিকে নন্দন যশোরের দাওয়াতপত্রে এসছে নান্দনিব ছনের ঘর। এছাড়া সংগঠনঠি পহেলা বৈশাখ সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষে রেডক্রিসেন্ট চত্ত্বরে পান্তা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এ দিকে ভৈরব যশোর তাদের ও দাওয়াত পত্র সাজিয়েছে পুতুল নাচ দিয়ে। তারা পৌরপার্কে বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বিবর্তন যশোর ও সুরধুনী সংগীত নিকেতন সকালে নিজ নিজ কার্যালয়ে মিষ্টিমুখের আয়োজনসহ নবকিশলয় বিদ্যালয় মাঠে যৌথভাবে দুদিন অনুষ্ঠান করবে। বিবর্তনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এইচ আর তুহিন বলেন, প্রথমদিন সকালে শিশুশিল্পীদের ও বিকালে বড়দের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকছে। দ্বিতীয় দিন বিকালে থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এদিকে শেকড় তাদে দাওয়াতপত্র সাজিয়েছে বিয়ে বাড়ি দিয়ে। একইভাবে সুরবিতান সংগীত একাডেমিও নিজেদের মতো করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। এছাড়া যশোর সাহিত্য পরিষদ, স্পন্দন, কিংশুক, মাইকেল সংগীত একাডেমিসহ ছোট-বড় বিভিন্ন সংগঠন বর্ষবরণের আয়োজন করছে।
যশোর জেলা সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ডিএম শাহিদুজ্জামান বলেন, নববর্ষ উৎসবের আমেজ পুরোপুরি যাতে সাংস্কৃতিক কর্মীরা পায় সেজন্য সরকারের দায়িত্ব পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেয়া।
এদিকে বর্ষবরণের সমগ্র আয়োজনে নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত বলে জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনছার উদ্দিন বলেন, নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
No comments:
Post a Comment