ডানে নিহত জাফর আমহদ ও বামে নিহতের পর এলাকায় মিষ্টি বিতরণের দৃশ্য। |
শাহ মুহাম্মদ শফি উল্লাহ:>>>
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নের দক্ষিণ সরল গ্রামের গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে র্যাবের সদস্যরা মেম্বার জাফর আহমদের বাড়ী ঘেরাও করলে র্যাবের উপস্থিতে টের পেয়ে ডাকাত জাফর আহমদ র্যাব সদস্যদের উদ্দেশ্যে গুলি বর্ষণ করে।
র্যাব সদস্যরা পাল্টা গুলি ছুঁড়লে জাফর আহমদ (৪৮) ও তার ভাই খলিল আহমদ (৪৫) বন্দুক যুদ্ধে ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছে। তারা দক্ষিণ সরল চৌধুরী বাড়ীর মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে। বন্দুক যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ৩০/৩৫ রাউন্ড গুলি বর্ষণে ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থল থেকে র্যাব একটি বিদেশী পিস্তলসহ ৮টি আগ্নেয়াস্ত্র ও রাম দা, কিরিচ উদ্ধার করে। র্যাব সদস্যরা থানা পুলিশের কাছে লাশ হস্তান্তরের পর এস.আই হাবিবুর রহমান লাশের সুরতহাল তৈরী করে ২জনের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন।
দক্ষিণ সরল গ্রামে ডাকাত জাফর ও তার ভাই খলিলের নিহতের সংবাদ পেয়ে শত শত মানুষ মিষ্টি বিতরণ করে আনন্দ উল্লাস করে। পুলিশ জানায়, র্যাব ডি.এ.ডি পর্যায়ের অফিসার বাদি হয়ে খুন, অস্ত্র ও র্যাব সদস্যদের উপর হামলা গুলি বর্ষণের দায়ের ৩টি মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সরল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ সরল মিয়াজী বাড়ীর মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য জাফর আহমদ খুন, ডাকাতিসহ ৩৩ মামলার আসামি হয়ে সরল এলাকা নিয়ন্ত্রন করত। তার নিয়ন্ত্রনে সরল ইউনিয়নের সরকারি ঝাউ বাগান উজাড় করে শত শত একর লবণ ও চিংড়ি চাষ জমি দখল করা। এই সমস্ত জমি নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ দিন থেকে বিরোধ চলে আসছিল।
এই সরকারি জায়গা দখল নিয়ে সন্ত্রাসী ও ডাকাত দলের সংর্ঘষে ৫বছরে ৪জন খুন হয়। আহত হয় অন্তত ৩০ জন। সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের ঝনঝনিতে সরল ইউনিয়নটিতে সাধারণ মানুষ জাফর ডাকাতের আতংকে দিন কাটাত।
অপর নিহত খলিল আহমদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা-হাঙ্গামার ৮টি মামলা রয়েছে। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম র্যাব-৭ এর সদস্যরা জাফর ডাকাতকে গ্রেপ্তারের জন্য সোর্স নিয়োগ করে দক্ষিণ সরল গ্রাম ঘেরাও করে রাখে।
র্যাবের এ.এস.পি তারেক জানান, সরল ইউনিয়নের দুধর্ষ ডাকাত সন্ত্রাসী জাফর ডাকাতকে গ্রেপ্তারের জন্য উপস্থিতি টের পেয়ে র্যাব সদস্যদেরকে লক্ষ্য করে জাফর আহমদ এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করে। র্যাব সদস্যরা পাল্টা গুলি করলে গুলিবিদ্ধ হয়ে সে মারা যায়।
একই ভাবে অভিযানে খলিল আহমদও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশী পিস্তলসহ, ৮টি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমান গুলি, রাম দা, কিরিচ, উদ্ধার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য সরল ইউনিয়নের দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষ অস্ত্রে মহড়া দিয়ে আসছিল। নেতৃত্ব দিচ্ছিল নুর মোহাম্মদ গ্রুপ ও জাফর মেম্বার গ্রুপ। একটি সপ্তাহে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহীনি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেণ এবং উপজেলা পরিষদের আইন শৃঙ্খলা সভায় এটা নিয়া খুব সমালোচনা হয়।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) কামাল উদ্দিন জানান, দুর্ধষ ডাকাত সন্ত্রাসী জাফর মেম্বারের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা রয়েছে তৎমধ্যে ১১টি ওয়ারেন্ট। পুরো এলাকাটি সে জিম্মি করে রেখেছিল। ডাকাত ২ভাইয়ের লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment