নরসিংদীর পলাশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু এক হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি জবরদখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করার পরও নানান হয়রানির শিকার হচ্ছে ওই হিন্দু পরিবারটি। অভিযোগ রয়েছে থানা পুলিশও অজানা কারণে কার্য্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের পাঁচভাগ গ্রামের চিত্ররঞ্জন দাসের কাছ থেকে দুটি পুকুরের ৪১ শতাংশ সম্পত্তি পাঁচ বছরের জন্য লিজ হিসেবে নেয় পাশ্ববর্তী উত্তরচন্দন গ্রামের আক্তারুজ্জামান। কিন্তু লিজ নেওয়ার মেয়াদ শেষ হলেও ওই হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। নিজের লিজ দেওয়া সম্পত্তি ফিরে পেতে গিয়ে ভয়-ভীতি ও হামলার শিকার হচ্ছে ওই পরিবার।
সম্প্রতি এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করার পর ওই পরিবারের ওপর আরও নির্যাতন বেড়ে যায়। ভুক্তভোগী চিত্ররঞ্জন দাস জানান, পারিবারিক সমস্যার কারণে বছরে ২০ হাজার টাকা করে ৩০ শতাংশের একটি পুকুর ও বছরে আট মণ ধান দিবে এমন আশ্বাসে ১১ শতাংশের একটি পুকুর মোট ৪১ শতাংশের দু’টি পুকুর পাঁচ বছরের জন্য লিজ দেই পাশ্ববর্তী উত্তরচন্দন গ্রামের মৃত জব্বার মিয়ার ছেলে আক্তারুজ্জামানের কাছে।
পুকুর দুটি দেওয়ার সময় আক্তারুজ্জামান ১ লাখ টাকা নগদ লিজ বাবদ দেয়। কিন্তু বছরে আট মণ ধান যে দেওয়ার কথা ছিল তা দেওয়া নিয়ে তাল বাহানা শুরু করে। পরে পুকুর দু’টির পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাস আগে থেকেই আক্তারুজ্জামানকে একাধিক বার জানানো হয়েছে লিজ নেওয়ার মেয়াদ শেষ হওয়া মাত্র পুকুর ছেড়ে দেওয়ার জন্য।
কিন্তু লিজ নেওয়ার মেয়াদ শেষ হয়ে আরও পাঁচ মাস বেশি হয়ে গেছে তিনি পুকুর ছাড়ছেন না। তারা এখন জোর করে আমাদের সম্পত্তি জবরদখলে নেওয়ার চেষ্টা করে বিভিন্ন হুমকি-দামকি দিচ্ছে। তিনি আরও জানান, সম্প্রতি আক্তারুজ্জামান ও তার ছেলে দুলাল মিয়াকে পুকুর ছাড়তে বলা হলে তারা আমাদের ওপর চড়াও হয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা চালায়। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাণ-নাশের হুমকি-দামকিসহ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে।
থানা পুলিশও অজানা কারণে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। জিনারদী ইউনিয়ন পরিষদের ৭/৮/ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য নার্গিস আক্তার বলেন, বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার সামাজিক শালিস বৈঠকে আক্তারুজ্জামান ও দুলাল মিয়াকে বসার জন্য বলা হলেও তারা স্থানীয় প্রভাব দেখিয়ে বসে নি।
এ বিষয়ে আক্তারুজ্জামানের ছেলে দুলাল মিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে পুকুর দু’টি পাঁচ বছরের জন্য লিজ নেওয়ার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা স্বীকার করলেও তিনি নতুন করে আবারও পাঁচ বছরের জন্য ওই ৪১ শতাংশ সম্পত্তি লিজ নিয়েছে বলে দাবী করেন।
এ ব্যাপারে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেন মোল্লা জানান, সম্পত্তি জবরদখলের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার জন্য থানার এসআইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একুশে মিডিয়া/এমএসএ
No comments:
Post a Comment