সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি: আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দী। একুশে মিডিয়া - একুশে মিডিয়া একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ গণমাধ্যম হিসেবে সংবাদ পরিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

Breaking News

Home Top Ad

এইখানেই আপনার বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ: 01915-392400

নিউজের উপরে বিজ্ঞাপন

Friday, 19 July 2019

সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি: আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দী। একুশে মিডিয়া


সবুজ সরকার, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:>>>
যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ও কাজিপুর পয়েন্টে ১৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। মাত্র ছয় থেকে সাতদিনে সিরাজগঞ্জ জেলার ৩৬টি ইউনিয়নের ২৭৭ গ্রামসহ দুটি পৌরসভা প্লাবিত হয়ে আড়াই লাখ পানিবন্দী মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। প্রতিদিন যমুনার পানি বাড়ছে-সাথে বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগও। 

রান্নাঘরসহ চুলা তলিয়ে যাওয়ায় কোনো রকমে একবেলা খেয়ে দিনপার করছে। বিশেষ করে শিশুদের ভুগতে হচ্ছে খাদ্যকষ্টে। টিউবওয়েল তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। টয়লেট তলিয়ে যাওয়ায় নারীদের দুর্ভোগ সীমাহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে। সারাক্ষণ পানির মধ্যে থাকায় হাত-পায়ে ঘা দেখা দিয়েছে বন্যা দুর্গতদের।
চরাঞ্চলের কাওয়াকোলা ও মেছড়া, খাসরাজবাড়ী ও মুনসুরনগরসহ কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। আশ্রয় নেয়ার মতো উচু জায়গা না থাকায় চরাঞ্চলের বন্যা কবলিতরা শিশু সন্তানসহ গরু-ছাগল-হাঁস মুরগী নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
খোকশাবাড়ী, পুঠিয়া বাড়ী, কাটেঙ্গা ও মেছড়া ও ভাটপিয়ারীসহ কয়েকটি গ্রামের বন্যাকবলিতদের অভিযোগ, দুর্ভোগে থাকলেও সরকারের পক্ষে প্রশাসন বা ইউপি মেম্বর-চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধি-প্রশাসন কেউ আমাদের খোঁজ নেয়নি। কিছু কিছু স্থানে দশ কেজি করে চাল দেয়া হলেও অধিকাংশ বন্যা কবলিতরা বঞ্চিত রয়েছে।
এ দিকে সরকারি তথ্যে, মাত্র সাতদিনের বন্যায় ইতোমধ্যে দেড়-দুই হাজার পরিবার সম্পূর্ণ ঘরবাড়ি-বসতভিটা হারিয়েছে। আর প্রবলস্রোতের কারণে প্রায় ৩০ হাজার ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৬৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনো পানির নীচে রয়েছে। প্রায় ৩০০ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আট হাজার হেক্টর জমির ধান-পাট ও সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে।
অন্যদিকে, পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার কাজিপুরে খাসরাজবাড়ী বাজারে বন্যার পানিতে  তলিয়ে থাকা প্রায় ২০টি বসতবাড়ী-দোকানপাট মালামালসহ যমুনায় ডুবে গেছে। সর্বস্ব খুইয়ে মানুষগুলো এখন দিশেহারা। এছাড়াও এনায়েতপুরের আড়কান্দি ও চৌহালীর খাসপুকুরিয়া এবং কাজিপুরের শুভগাছা, পাটাগ্রাম, সদর উপজেলার কাওয়াকোলাসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। পানির প্রবল চাপের কারণে শহরসহ উপজেলা রক্ষাবাঁধগুলোও হুমকিতে রয়েছে।
সোনাগাছা ইউনিয়েন পারপাচিল গ্রামের সানোয়ার হোসেন জানান, বাড়ি ঘরে পানি ওঠায় বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। ঘর তৈরি কারার মত টিনও নাই তাই রাতে মশারি টাঙ্গিয়ে ঘুমাই। বৃষ্টি হলে সারা রাত বৃষ্টিতে ভিজে নির্ঘুম রাত্রী যাপন করছি। রান্নাঘরসহ চুলা তলিয়ে যাওয়ায় রান্না করতে পারছি না।
খাসরাজবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম জানান, তিনদিন আগে খাসরাজবাড়ী বাজারে পানি ওঠে। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ করে ভাঙন শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে ভাঙনে দোকান-পাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মালামালসহ ডুবে যায়।
জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন জানান, সরকার বন্যা কবলিতদের পাশে সবসময় রয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত সব উপজেলায় ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দ ও বিতরণ শুরু হয়েছে। হয়তো কোন কোন এলাকায় বিতরণ করতে একটু সময় লাগছে। আশা করছি পর্যায়ক্রমে সব বন্যা কবলিত মানুষ ত্রাণ সামগ্রী পাবে।



একুশে মিডিয়া/এমএসএ

No comments:

Post a Comment

নিউজের নীচে। বিজ্ঞাপনের জন্য খালী আছে

Pages